৭০ বছরের পুরনো প্যাডেল স্টিমার নামছে গঙ্গাবক্ষে

কলকাতা বন্দরের বর্তমান মেরিন অধিকর্তা জে জে বিশ্বাসের কথায়, ‘‘ঢাকায় যদি ৭০-৮০ বছরের পুরনো প্যাডেল স্টিমারগুলি এখনও দিনে ২০০ কিমি চলতে পারে, তা হলে কেন এখানে চলবে না?’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০১৯ ০১:৪১
Share:

খিদিরপুর বন্দরে রাখা ‘পিএস ভোপাল’।—ছবি সংগৃহীত।

গোয়ালন্দের ঘাটে কয়লার আঁচে চলা প্যাডেল স্টিমারের ভোঁ ভোঁ আওয়াজের কথা কে না জানে!

Advertisement

পদ্মা পার হতে ঢাকায় এখনও সেই স্টিমার রয়েছে। তবে আর কয়লার আগুনে তা চলে না, ডিজেল এসে গিয়েছে সেখানে। আর স্টিমারের পিছনে থাকা প্রপেলার নয়, ঠিক সাইকেলের মতো দু’পাশে চার থেকে আট জোড়া প্যাডেল ওঠা-নামা করে এগিয়ে চলে সেই জাহাজ। তেমনই একটি স্টিমার আজও অক্ষত রয়েছে কলকাতা বন্দরের কাছে। ৭০ বছরের পুরনো, ‘পিএস ভোপাল’ নামে সেই প্যাডেল স্টিমারটি এ বার গঙ্গার বুকে হেরিটেজ ক্রুজ ভ্রমণে নামছে। তবে সাজগোজের জন্য সময় লাগবে কয়েক মাস।

কলকাতা বন্দরের চেয়ারম্যান বিনীত কুমার বলেন, ‘‘বেসরকারি সংস্থার হাতে হেরিটেজ স্টিমারটি তুলে দেওয়া হবে। তারা বন্দরকে প্রতি মাসে ভাড়া দেবে। গঙ্গার বুকে সেই স্টিমার চালানো হলে নতুন করে দেশ-বিদেশের পর্যটক টানা যাবে। প্যাডেল স্টিমারই কলকাতার অন্যতম আকর্ষণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।’’

Advertisement

বন্দরের প্রাক্তন মেরিন অধিকর্তা অরুণকুমার বাগচী বলেন, ‘‘২০০৮ সালেও এমন চেষ্টা হয়েছিল। সে সময়ে অস্ট্রেলিয়ার একটি সংস্থা হেরিটেজ ভ্রমণের জন্য আগ্রহ দেখিয়েছিল। তার পরে প্রকল্পটি আর এগোয়নি। যদি সত্যিই কোনও সংস্থা ব্রিটিশ আমলের পিএস ভোপালকে ফের গঙ্গায় নামাতে পারে, তা অবশ্যই আনন্দের।’’ কলকাতা বন্দরের বর্তমান মেরিন অধিকর্তা জে জে বিশ্বাসের কথায়, ‘‘ঢাকায় যদি ৭০-৮০ বছরের পুরনো প্যাডেল স্টিমারগুলি এখনও দিনে ২০০ কিমি চলতে পারে, তা হলে কেন এখানে চলবে না?’’

সেই লক্ষ্যেই কলকাতা বন্দরের ড্রাই ডকে সাজতে শুরু করেছে স্টিমার। বন্দরের খবর, ব্রিটিশ আমলে মূলত হাওড়া থেকে কলকাতার মধ্যে যাত্রী পরিবহণের কাজে কয়লায় চলা স্টিমারগুলি ব্যবহৃত হত। সেগুলির গতিবেগ ঘণ্টায় মাত্র ৫-৬ নটিক্যাল মাইল। ডিজেল ইঞ্জিন আসার পরে সেই কয়লার স্টিমার উঠে যায়। ডিজেল ইঞ্জিনের আরও বড় সুবিধা হল, স্টিমারের পিছনে লাগানো প্রপেলারের সাহায্যে সেগুলি ঘণ্টায় ৮-১০ নটিক্যাল মাইল বেগে চলতে পারে। আর পুরনো স্টিমারে প্যাডেলগুলি লাগানো থাকে দু’পাশে। ঠিক যে ভাবে সাইকেলে প্যাডেল করলে তা এগোতে থাকে, কয়লার স্টিমারের ক্ষেত্রেও প্যাডেলগুলি দু’পাশে ওঠা-নামা করত, এগিয়ে যেত স্টিমার। বন্দরের কর্তারা জানাচ্ছেন, গত ২০-২৫ ধরে প্যাডেল স্টিমারটি বন্দরে পড়ে রয়েছে। এখন ডিজেলের সাহায্যে যদি প্যাডেল-প্রযুক্তি ফিরিয়ে আনা যায়, তা হলে কলকাতার অন্যতম দ্রষ্টব্য হতে পারে সেটি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement