ফাইল চিত্র।
১৯৮৭ সাল থেকে ধাপায় যত বর্জ্য ফেলা হয়েছে, তার পরিমাণ প্রায় ৪০ লক্ষ মেট্রিক টন! কলকাতা পুরসভা সূত্রে এমনটাই জানানো হচ্ছে। এ বার সেই স্তূপীকৃত বর্জ্যের (লেগ্যাসি ওয়েস্ট) প্রক্রিয়াকরণ স্থায়ী রূপ পেতে চলেছে। অর্থাৎ, গত ৩৪ বছরের স্তূপীকৃত বর্জ্যের প্রক্রিয়াকরণ শুরু হতে চলেছে আজ, শুক্রবার ধাপায় দু’টি প্লান্ট উদ্বোধনের মাধ্যমে।
পুরসভা সূত্রের খবর, দু’টির মধ্যে একটি হল বায়ো মাইনিং এবং স্তূপীকৃত বর্জ্যের প্রক্রিয়াকরণ প্লান্ট। অন্যটি হল প্লাস্টিক বর্জ্যের প্রক্রিয়াকরণ প্লান্ট। অবশ্য এই দু’টিই নয়, নিউ টাউনের পাথরঘাটাতেও এ দিন দৈনিক ৫০০ টন ক্ষমতাসম্পন্ন নির্মাণ বর্জ্যের প্রক্রিয়াকরণ প্লান্টের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হওয়ার কথা। যার পরিপ্রেক্ষিতে কলকাতা পুর প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারপার্সন ফিরহাদ হাকিম বলছেন, ‘‘এক দিকে যেমন স্তূপীকৃত বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে তার পুনর্ব্যবহার করা যাবে, অন্য দিকে প্লাস্টিক বর্জ্যের প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে কী ভাবে শহরকে প্লাস্টিকমুক্ত করা সম্ভব, সে ব্যাপারেও কলকাতা পুরসভা পথ দেখাবে।’’ একই ভাবে নির্মাণ বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ প্লান্টের মাধ্যমে পুনর্ব্যবহারযোগ্য নির্মাণ সামগ্রী পাওয়া যাবে বলেও ফিরহাদ জানাচ্ছেন।
এমনিতে ধাপায় বায়ো মাইনিং পদ্ধতি স্বল্পকালীন পরিকল্পনার ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই চালু করা হয়েছে। ওই পদ্ধতিতে তিন মাসে প্রায় ২৫ হাজার মেট্রিক টন বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ করা হয়েছে। একটি মামলার প্রেক্ষিতে গত অগস্টে জাতীয় পরিবেশ আদালতে এমনটাই জানিয়েছিল রাজ্য সরকার। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত তথা কলকাতা পুর প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য দেবব্রত মজুমদার বলছেন, ‘‘স্বল্পকালীন ভিত্তিতে এত দিন কাজ হচ্ছিল। ওই প্লান্টের মাধ্যমে এ বার দীর্ঘকালীন ভিত্তিতে সেই কাজ হবে।’’
ধাপা এলাকায় বর্জ্য ফেলা হয় বহু বছর ধরে। তবে যে সাত একর জায়গায় বর্তমানে জঞ্জাল ফেলা হয়, তা হচ্ছে ১৯৮৭ সাল থেকে। পুর নথি ঘেঁটে এমনই তথ্য পাওয়া গিয়েছে বলে জানাচ্ছেন পুরকর্তারা। সেই স্তূপীকৃত বর্জ্যের ক্ষেত্রে আগামী তিন বছরে ৪০ লক্ষ টন বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে। যার মধ্যে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বছরে বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণের লক্ষ্য ধরা হয়েছে যথাক্রমে ৯, ১৩ এবং ১৮ লক্ষ টন। এক পুরকর্তার কথায়, ‘‘ধাপায় যে স্তূপীকৃত বর্জ্য পাহাড়ের মতো হয়ে রয়েছে, তা পুরোপুরি সমতল হয়ে যাবে প্রক্রিয়াকরণ সম্পূর্ণ হলে।’’ প্রসঙ্গত, স্তূপীকৃত বর্জ্য ও নির্মাণ বর্জ্যের প্রক্রিয়াকরণ যথাযথ করতে একাধিক বার নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় পরিবেশ আদালত। সেই নির্দেশকে মান্যতা দিতেই এই প্লান্ট। প্রক্রিয়াকরণ সংক্রান্ত রিপোর্ট পরিবেশ আদালতে জমা দেওয়া হবে বলে জানাচ্ছেন পুরকর্তারা।