ফাইল চিত্র।
কলকাতার তিনটি জায়গাকে ফের কন্টেনমেন্ট জ়োন হিসেবে ঘোষণা করা হল। সরকারি সূত্র অনুযায়ী, ওই তিনটি জায়গা দক্ষিণ কলকাতা এবং দক্ষিণ শহরতলির অন্তর্গত। সেগুলি হল টালিগঞ্জের ১৮ রাজা বসন্ত রায় রোডের একটি আবাসন, ২০ বালিগঞ্জ সার্কুলার রোডের একটি বহুতলের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তল এবং পাটুলি থানা এলাকার ৯, ভ্যালি পার্ক।
পুলিশ সূত্রের খবর, রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ওই কন্টেনমেন্ট জ়োনগুলি সম্পর্কে তাদের সরকারি ভাবে কিছু জানানো না হলেও গার্ড রেল দিয়ে ওই জায়গাগুলি পৃথক করে দেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে কন্টেনমেন্ট জ়োনের ভিতরে যাতায়াতের বিষয়টিও নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।
এক পুলিশকর্তা জানান, বসন্ত রায় রোডের ওই আবাসনে ছ’জনের করোনা পজ়িটিভ ধরা পড়েছে। আবার বালিগঞ্জ সার্কুলার রোডের ওই বহুতলটির প্রথম দু’টি তলে প্রচুর অফিস রয়েছে। বহুতলটিতে কত জন করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন, রাত পর্যন্ত তার নির্দিষ্ট সংখ্যা জানা যায়নি। তবে আজ, সোমবার থেকে অফিসগুলি বন্ধ রাখা হবে। একই ভাবে পাটুলিতে বহুতলের একটি ফ্ল্যাটেই সাত জন বাসিন্দা করোনায় আক্রান্ত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: করোনার উৎস ভারতীয় উপমহাদেশ! এ বার দাবি চিনের
তবে কন্টেনমেন্ট জ়োনের পাহারায় কোনও পুলিশকর্মী থাকবেন কি না, রাত পর্যন্ত তা চূড়ান্ত হয়নি। সরকারি নির্দেশ এলে সেই মতো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে লালবাজার জানিয়েছে।
শহরে নতুন করে তিনটি কন্টেনমেন্ট জ়োন তৈরি করা হল কেন?
কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত, প্রশাসকমণ্ডলীর অন্যতম সদস্য তথা প্রাক্তন ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ বলেন, “নতুন করে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা শহরে বাড়ছে বা কমছে, সেই কথাটা ঠিক নয়। আক্রান্ত অনেকেই হচ্ছেন। কিন্তু কন্টেনমেন্ট জ়োন ঘোষণা করতে গেলে একটি নির্দিষ্ট রাস্তা বরাবর একটি বহুতল বা তার পাশের বাড়িগুলিতে যদি করোনা রোগী থাকেন, তা হলে ওই রাস্তায় বাড়িগুলির নিকটস্থ অংশকেই কন্টেনমেন্ট জ়োন ঘোষণা করা হয়।’’ তিনি জানান, বর্তমানে পাশাপাশি বাড়িতে না হয়ে চার দিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: কোভিডে মৃত কলকাতা পুলিশের গাড়িচালক
অতীনবাবুর মতে, নিয়মানুযায়ী বিক্ষিপ্ত ভাবে কোনও কোনও বাড়িতে কেউ করোনায় আক্রান্ত হলে গোটা রাস্তাকে কন্টেনমেন্ট জ়োনের আওতায় আনা সম্ভব নয়। সে ক্ষেত্রে ওই বাড়ি বা নির্দিষ্ট ফ্ল্যাটটিকে “হোম আইসোলেশন” করা হয়। তবে রবিবার যে তিনটি জায়গায় করোনা ধরা পড়েছে, সেখানে একই আবাসনে একই জায়গায় অনেকেই সংক্রমিত হয়েছেন বলে পুর কর্তৃপক্ষ জানান।
পুর কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছেন, সম্প্রতি পুরসভার একটি সমীক্ষা থেকে জানা গিয়েছে, উত্তর কলকাতার তুলনায় দক্ষিণ কলকাতা এবং সংযোজিত এলাকায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। এই প্রসঙ্গে অতীনবাবু জানান, নাগরিকদের মধ্যে সচেতনতার অভাব রয়েছে। তবে করোনা পরীক্ষাও বাড়ানো প্রয়োজন। শুধু তা-ই নয়, এখন প্রায় ১০০টি ওয়ার্ডে করোনা পরীক্ষা হচ্ছে। আগামী কিছু দিনের মধ্যে শহরের ১৪৪টি ওয়ার্ডেই ওই পরীক্ষাকেন্দ্র গড়ে তোলা হবে।