প্রতীকী ছবি
রাতে মোটরবাইক নিয়ে এলাকায় টহল দিচ্ছিলেন দুই পুলিশকর্মী। রাত্রিকালীন লকডাউনের জন্য রাস্তায় কোনও গাড়ি থাকার কথা নয়। তবুও দ্রুত গতির একটি এসইউভি গাড়িকে আসতে দেখে তাঁরা সতর্ক হলেন। গাড়িটি কাছে আসতেই তাঁরা সেটি থামিয়ে চালকের কাছে গাড়ির নথি দেখতে চাইলেন। একই সঙ্গে কেন গাড়ি নিয়ে বেরিয়েছেন, সে কথা চালক ও আরোহীদের কাছে জানতে চাওয়া হয়। কিন্তু অভিযোগ, নথি দেখানো তো দূরের কথা, উল্টে গাড়ি থেকে নেমে চার যুবক কর্তব্যরত কনস্টেবলকে ধাক্কা মেরে রাস্তায় ফেলে দেয়। এর পরে তাঁকে মারধরও করা হয় বলে অভিযোগ। অন্য পুলিশকর্মীর কাছ থেকে খবর পেয়ে বিরাট বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে তিন অভিযুক্তকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। আর এক যুবক পলাতক।
পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে বড়তলা থানা এলাকার এ কে স্ট্রিটে। পুলিশকর্মীদের কাজে বাধা দান ও নিগ্রহের অভিযোগে ওই তিন যুবককে গ্রেফতার করা হয়। ধৃত অমিত যাদব, সুভাষ মিশ্র এবং আশিস ঠাকুরকে মঙ্গলবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হয়। তিন জনের বাড়িই কসবায়। আদালতে সরকারি কৌঁসুলি দীপনারায়ণ পাকড়াশি জানান, গ্রেফতারের পরে ধৃতদের মেডিক্যাল পরীক্ষা করানো হয়। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, তারা ঘটনার সময়ে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ছিল। বিচারক মনোদীপ দাশগুপ্ত ধৃতদের ৩ অগস্ট পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
পুলিশ সূত্রের খবর, প্রতিদিনের মতো সোমবার রাত দশটা থেকে বড়তলা থানার যতীন্দ্রমোহন অ্যাভিনিউ এবং সোনাগাছি এলাকায় মোটরবাইক নিয়ে টহল দিচ্ছিলেন ওই থানার দুই কনস্টেবল দেবাশিস মণ্ডল এবং সুবীর দাস। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ তাঁরা এ কে স্ট্রিটে একটি লাল রঙের গাড়িকে দ্রুত গতিতে যতীন্দ্রমোহন অ্যাভিনিউয়ের দিক থেকে আসতে দেখেন। থানায় দায়ের হওয়া অভিযোগে দেবাশিসবাবু জানিয়েছেন, তিনি ওই গাড়িটি আটকে নথি দেখতে চান। লকডাউনের মধ্যে রাস্তায় বেরোনোর কারণও জানতে চান।
আরও পড়ুন: প্রস্তাব জমা দিতে হবে নির্দিষ্ট ‘ফরম্যাট’-এ
এক পুলিশকর্তা জানান, গাড়িতে চালক-সহ চার জন ছিল। গাড়ি আটকে নথি দেখতে চাওয়ার পরেই তারা গাড়ি থেকে নেমে বচসা শুরু করে। এর মধ্যে এক জন দেবাশিসবাবুকে ধাক্কা মারে। বাধা দিতে গেলে তাঁকে মারধর করে বাকিরা। সঙ্গে থাকা অন্য পুলিশকর্মী ফোনে খবর দেন থানায়। ডিউটি অফিসার বাহিনী নিয়ে এসে তিন জনকে আটক করেন। পরে দেবাশিসবাবুর অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয় তাদের। তবে এক যুবককে ধরা যায়নি। দেবাশিসবাবুকে রাতেই আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। মঙ্গলবার ভোরে সেখান থেকে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
পুলিশের একটি অংশ জানিয়েছে, অভিযুক্তেরা কসবার এক প্রভাবশালীর ঘনিষ্ঠ। সেই কথা উল্লেখ করে তারা দুই পুলিশকর্মীকে হুমকিও দিয়েছিল।
শনিবার লকডাউনে গাড়ি নিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছিল বালিগঞ্জের এক যুবক। ই এম বাইপাসে আটকাতে গেলে গাড়ি নিয়ে সে ধাক্কা মারে দুই পুলিশকর্মীকে। তার তিন দিনের মাথায় ফের নিগৃহীত হলেন এক পুলিশকর্মী।