উদ্ধার: দড়ি বেঁধে জলাশয় থেকে একটি উটকে উদ্ধার করছেন স্থানীয়েরা। শুক্রবার সকালে, বারুইপুরে। নিজস্ব চিত্র
অযত্নে-অবহেলায় মারা গেল স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হেফাজতে থাকা তিনটি উট। অভিযোগ এমনই।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৫ জুলাই রাতে তল্লাশি অভিযানের সময়ে উট বোঝাই একটি লরি বারুইপুর পুরাতন বাজার এলাকা থেকে আটক করা হয়। একটি লরিতে গাদাগাদি করে মোট ১১টি উটকে রাজস্থান থেকে নিয়ে আসা হয়েছিল। গাড়ি আটকের পরে দেখা যায়, লরির মধ্যেই চারটি উটের মৃত্যু হয়েছে। এর পরে আদালত থেকে জিম্মানামা নিয়ে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ওই উটগুলিকে রাখার ব্যবস্থা করে। এবং রাজস্থানে ফিরিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব নেয়। পুলিশ বারুইপুরের উত্তরভাগ এলাকায় একটি আশ্রমে ওই উটগুলি রাখার ব্যবস্থা করে। তবে ওই উটগুলির রক্ষণাবেক্ষণের সমস্ত দায়িত্ব ছিল স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটির।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েক মাসে অপুষ্টি ও অযত্নজনিত কারণে তিনটি উটের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দড়ি ছিঁড়ে একটি উট আশ্রমের পাশের একটি পুকুরে পড়ে যায়। রাতভর পুকুরে পড়ে থাকে ওই উটটি। সারা রাত চিৎকার করতে থাকে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। শুক্রবার সকালে এলাকার বাসিন্দারা দড়ি বেঁধে উটটিকে তোলেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এখন ওই আশ্রমে চারটি উট রয়েছে। এ দিন গিয়ে দেখা গেল, উটগুলির মুখে ও শরীরে ঘা হয়ে গিয়েছে। আশ্রমের এক আবাসিক বলেন, “অধিকাংশ সময়েই খোলা আকাশের নীচে রাখা হয় উটগুলিকে। তেমন যত্ন নেওয়া হয় না।’’
স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তরফে গুড্ডু মণ্ডল বলেন, ‘‘এক জন যুবককে ওই উটগুলির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’’
তবে ওই সংস্থার তরফে সুব্রত দাস নামে আর এর জন বলেন, “আইনি জটিলতার কারণে উটগুলিকে রাজস্থান নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। আদালতের কাছে আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু আদালতের অনুমতি পেতে দেরি হওয়ায় রাজস্থান নিয়ে যাওয়া যায়নি।”
বারুইপুর পুলিশ জেলার এক কর্তা বলেন, “উট সাধারণত শুষ্ক আবহাওয়ায় থাকতে অভ্যস্ত। আবহাওয়া বদল হলেই ওদের শরীরে নানা সংক্রমণ দেখা দেয় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। সেই কারণে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রাজস্থানে উটগুলি পৌঁছনোর ব্যবস্থা করার জন্য স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটিকে বলা হয়েছে।”
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, খোলা আকাশের নীচে জল-কাদার মধ্যে ওই উটগুলিকে বেঁধে রাখা হয়েছে। ঠিক মতো খাবার ও ওষুধ দেওয়া হয় না। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ ঠিক নয় বলে দাবি করেছেন গুড্ডু মণ্ডল। তিনি বলেন, “চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ ও খাবার নিয়মিত দেওয়া হয়।”