—প্রতীকী চিত্র।
ভ্রমণ, চিকিৎসা বা অন্য নানা প্রয়োজনে দূর-দূরান্ত থেকে কলকাতায় প্রায়ই যাতায়াত করেন বহু মানুষ। আসেন বিদেশিরাও। পর্যটকদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করে দিতে রাজ্য পর্যটন দফতর প্রতিটি জেলায় হোম স্টে গড়ার পরিকল্পনা করেছিল প্রায় বছর দুয়েক আগে। রাজ্যের রাজধানী কলকাতার ক্ষেত্রে এই হোম স্টে তৈরি করতে পর্যটন দফতরের সঙ্গে কলকাতা পুরসভা যৌথ ভাবে উদ্যোগী হয়েছিল। নিয়মমতো রাজ্যের ২৩টি জেলার হোম স্টে-র ঠিকানা-সহ বিস্তারিত তালিকা রাজ্য পর্যটন দফতরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হওয়ার কথা। কিন্তু পর্যটন দফতরের ওয়েবসাইট খুললে দেখা যাচ্ছে, এখনও পর্যন্ত রাজ্যের ২৩টি জেলার মধ্যে কলকাতা ও উত্তর দিনাজপুরের কোনও হোম স্টে-র তালিকাই দেওয়া হয়নি। প্রশ্ন উঠেছে, শহরের বুকে হোম স্টে গড়ে তুলতে নাগরিকদের মধ্যে আগ্রহ তৈরি করার জন্য কলকাতা পুরসভার তরফে তেমন প্রচার কি চালানো হয়নি?
শহরে প্রচুর হোটেল, অতিথিশালা থাকলেও অনেকে বাড়ির পরিবেশ পেতে চান। সেই রকম পরিবেশে অতিথিরা যাতে থাকা-খাওয়ার সুবিধা পান, তার জন্যই সরকার হোম স্টে গড়তে উদ্যোগী হয়েছিল। রাজ্য সরকার আগেই ‘হোম স্টে টুরিজ়ম পলিসি ২০২১’ তৈরি করেছে। রাজ্যের পর্যটনের প্রসারে মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী বছর দুয়েক আগে সব জেলার জেলাশাসকদের সঙ্গে বৈঠকে হোম স্টে-র সুবিধা এবং নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা করেছিলেন। শহরে কর্মসংস্থান বাড়ানোর লক্ষ্যে নাগরিকদের মধ্য়ে হোম স্টে গড়ার আগ্রহ বাড়াতে বছর দেড়েক আগে পুরসভার অধিবেশন কক্ষে ১৪৪ জন পুরপ্রতিনিধির প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা করা হয়েছিল। হোম স্টে তৈরি করতে পুরসভা ও পর্যটন দফতরের আধিকারিকেরা দফায় দফায় বৈঠকও করেছিলেন। পুরসভা সূত্রের খবর, মেয়র ফিরহাদ হাকিম শহরে হোম স্টে তৈরি নিয়ে অতীতে একাধিক বার বৈঠক করেছেন। এমনকি, হোম স্টে তৈরিতে পর্যটন দফতরের সঙ্গে সমন্বয় রক্ষার জন্য পুরসভায় নতুন পদও তৈরি করা হয়েছে। পুরসভার এক পদস্থ অফিসারকে সেই নোডাল অফিসারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
তা সত্ত্বেও দু’বছর পরে এখনও পর্যটন দফতরের ওয়েবসাইটে হোম স্টে-র তালিকা প্রকাশিত না হওয়ায় বিতর্ক দেখা দিয়েছে। বিরোধী পুরপ্রতিনিধিদের অভিযোগ, কোনও প্রকল্প চালু হওয়ার আগে পুরসভা প্রচুর ঢাকঢোল পেটালেও তা যে বাস্তবায়িত হয় না, এই তালিকা না থাকা তারই একটা বড় উদাহরণ।
যদিও পুরসভার এক শীর্ষ কর্তা সোমবার বলেন, ‘‘শহরে হোম স্টে তৈরি করার জন্য ১৩টি আবেদন জমা পড়েছিল। কিন্তু পর্যটন দফতরের তরফে দেওয়া নিয়ম-নীতির সঙ্গে না মেলায় ছ’টি আবেদনপত্র বাতিল করা হয়েছে। এ পর্যন্ত শহরে সাতটি হোম স্টে গড়ার ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। ওই সাতটি হোম স্টে-র তালিকা শীঘ্রই পর্যটন দফতরের ওয়েবসাইটে দেওয়া হবে।’’ ওই কর্তার দাবি, ‘‘যে কেউ হোম স্টে-র ছাড়পত্র পাবেন না। পর্যটন দফতরের হোম স্টে নীতির সঙ্গে মিললে তবেই অনুমোদন মিলবে।’’