—প্রতীকী চিত্র।
আগ্নেয়াস্ত্র, কার্তুজ এবং অস্ত্র তৈরির নানা সরঞ্জাম-সহ দুই যুবককে রবিবার রাতে গ্রেফতার করেছে নরেন্দ্রপুর থানার পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে এক জন কলেজপড়ুয়া। পুলিশ জানিয়েছে, তাদের নাম বিজয় হালদার ওরফে ভূতম এবং হিরণ্ময় নস্কর ওরফে রানা। এদের মধ্যে হিরণ্ময় আশুতোষ কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। বিজয়ের বাড়ি রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার চার নম্বর ওয়ার্ডে। হিরণ্ময়ের বাড়ি ওই পুরসভারই পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডে। তাদের কাছ থেকে একটি ওয়ান শটার, দু’টি সেভেন এমএম পিস্তল, ৩০ রাউন্ড কার্তুজ, পাঁচ কেজি বারুদ, ২৫টি সুতলির বান্ডিল উদ্ধার হয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, বিজয়ের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক কাজের অভিযোগ ছিল। খুনের মামলায় আগে গ্রেফতারও হয়েছিল সে। ইদানীং বিজয়ের সঙ্গে অস্ত্র-যোগের খবর পায় পুলিশ। সেই মতো রবিবার অভিযান চালিয়ে গড়িয়ার বাহান্নপল্লি এলাকা থেকে তাকে ধরা হয়। জেরায় বিজয় জানায়, অস্ত্র আছে হিরণ্ময়ের বাড়িতে। এর পরেই সেখানে অভিযান চলে।
পুলিশের অনুমান, ধৃত দুই যুবক অস্ত্র চোরাচালানে যুক্ত। কোথা থেকে তারা অস্ত্র পেত, কোথায় সেগুলি চালান করত— সে সব খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ধৃতদের সঙ্গে আরও কেউ যুক্ত রয়েছে কি না, তা-ও দেখছে পুলিশ। বারুদ, বোমার সুতলির মতো জিনিস উদ্ধার
হওয়ায় অনেকের অনুমান, ধৃতেরা বোমা তৈরি করত। তবে পুলিশ জানিয়েছে, আদৌ তারা বোমা তৈরি করত, না কি কাঁচামালই সরবরাহ করত, তা-ও দেখা হচ্ছে। পুলিশের দাবি, প্রাথমিক ভাবে ধৃত দু’জনের সঙ্গে সে ভাবে রাজনৈতিক যোগ মেলেনি। তবে তাদের হেফাজতে নিয়ে এ ব্যাপারে আরও তথ্য জানার চেষ্টা করা হবে।
এই ঘটনায় তৃণমূল-যোগের অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীরা। স্থানীয় বিজেপি নেতা রঞ্জন বৈদ্য বলেন, “ধৃত যুবকদের এক জন দীর্ঘদিন তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত। তৃণমূলের এক গোষ্ঠী ছেড়ে সম্প্রতি আর এক গোষ্ঠীতে গিয়েছিল। ভোটের মুখে তৃণমূলই তাকে দিয়ে অস্ত্র মজুত করাচ্ছিল।” অভিযোগ অস্বীকার করে সোনারপুর উত্তরের তৃণমূল বিধায়ক ফিরদৌসি বেগম বলেন, “প্রশাসন অভিযুক্তদের গ্রেফতার করেছে। তারাই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যোগ থাকলেও, অপরাধ করলে শাস্তি পেতে হবে। তৃণমূল বোমা-বন্দুকের সংস্কৃতি সমর্থন করে না। বিরোধীদের অভিযোগ ভিত্তিহীন।’’
বারুইপুর পুলিশ জেলার ডেপুটি সুপার (অপরাধ দমন) ফয়জ়ল বিন আহমেদ বলেন, “ভোটের আগে অস্ত্র, বিস্ফোরক উদ্ধারে বিশেষ জোর দিচ্ছে বারুইপুর পুলিশ জেলা। সেই মতো বিভিন্ন এলাকায় তদন্ত চালাচ্ছেন আমাদের আধিকারিকেরা। কোথা থেকে ওই আগ্নেয়াস্ত্র এল, কী কাজে সেগুলি ব্যবহার করার পরিকল্পনা ছিল, সবই দেখা হচ্ছে।’’