প্রতীকী ছবি।
লকডাউনের বিকেলে কলেজ ছাত্রীটিকে তাঁর প্রেমিকের বন্ধু বলেছিল, স্কুটারে তাঁকে ঘুরতে নিয়ে যাবে। উদ্দেশ্য ছিল, তরুণীর প্রেমিককে চমকে দেওয়া। কথা ছিল, প্রেমিককেও নিয়ে যাওয়া হবে। কিন্তু শর্ত ছিল, তরুণী যেন তাঁর প্রেমিককে আগে থেকে কিছু না-জানান। সরল বিশ্বাসে বন্ধুর বাড়িতে গিয়েছিলেন কলেজপড়ুয়া তরুণীটি। অভিযোগ, সেখানে তাঁকে গণধর্ষণ করে দুই তরুণ। কোনও রকমে পালিয়ে এসে বাড়িতে তা জানান তরুণী।
শনিবার রাতেই অভিযুক্ত দুই তরুণকে গ্রেফতার করে ঘোলা থানার পুলিশ। ধৃতদের এক জন প্রণব (ডাম্পি) বসু পানিহাটি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। ধৃত অন্য তরুণের নাম রাহুল (সুবীর) সাহা। দু’জনেই ঘোলা থানার শক্তিপুর নবগ্রামের বাসিন্দা। রাহুল পেশায় বৈদ্যুতিক মিস্ত্রি। পুরো ঘটনায় হতবাক ওই তরুণী।
পুলিশ সূত্রের খবর, ঘোলা থানা এলাকার বাসিন্দা ওই তরুণী উত্তর ২৪ পরগনারই একটি কলেজের পড়ুয়া। স্থানীয় এক তরুণের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে তাঁর। ডাম্পি সেই তরুণের বন্ধু। সেই সুবাদে তার সঙ্গে তরুণীরও বন্ধুত্ব ছিল। শনিবার দুপুরে ডাম্পি ওই তরুণীকে ফোন করে বলে, সে ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছে। একই সঙ্গে ছাত্রীটির বন্ধুকেও চমকে দেওয়া হবে। রাজি হন তরুণী।
পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার বিকেলে তরুণীকে স্কুটারে করে নিজের বাড়িতে নিয়ে যায় ডাম্পি। সেখানে পৌঁছে তরুণী তাঁর প্রেমিকের খবর জানতে চাইলে ডাম্পি তাঁকে একটি ঘরে বসিয়ে বলে, বন্ধু আসছে। তরুণী ওই ঘরে অপেক্ষা করতে থাকেন। কিন্তু কিছু ক্ষণ পরেও প্রেমিক না আসায় তিনি বাইরে এসে পাশের ঘরে রাহুলকে দেখতে পান। ডাম্পি তরুণীকে জানায়, রাহুলও তাঁর প্রেমিকের বন্ধু। তখনই পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন তরুণীটি। অভিযোগ, ডাম্পি ও রাহুল তাঁকে ফের ওই ঘরে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। শেষে কোনও রকমে পালান তরুণী।
রাতে থানায় অভিযোগ হয়। বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়েও পুলিশ অভিযুক্তদের নাগাল পায়নি। পরে তারা জানতে পারে, ডাম্পি তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সমর্থক। পুলিশ বিষয়টি জানায় পূর্ব পানিহাটির তৃণমূল সভাপতি সম্রাট চক্রবর্তীকে। তাঁরই সহযোগিতায় খোঁজ মেলে দুই অভিযুক্তের। মাঝরাতে ধরা হয় ডাম্পি ও রাহুলকে। সম্রাট বলেন, “কে কোন দলের সমর্থক সেটা বড় কথা নয়। আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নয়। তাই পুলিশকে সহযোগিতা করেছি।”