Murder

সংশয় নিয়েই ‘খুনের’ মামলায় গ্রেফতার দুই

ময়না-তদন্তের চূড়ান্ত রিপোর্ট আসার পরেই পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০২০ ০৩:২৪
Share:

—প্রতীকী ছবি।

ভাইফোঁটা নিতে বেরোনো এক যুবকের মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনার ১৮ দিনের মাথায় দু’জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। শুক্রবার রাতে বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী ও সুরজিৎ চক্রবর্তী নামে ওই দু’জনকে গ্রেফতার করেছে রবীন্দ্র সরোবর থানা। তাঁরা মৃতের দূর সম্পর্কের শ্যালক বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। মৃতের মা পিটিয়ে মারার অভিযোগ করলেও এই মৃত্যু আদৌ খুন কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে পুলিশের। তাদের দাবি, ওই যুবক নানা রোগে ভুগছিলেন।

Advertisement

ময়না-তদন্তের চূড়ান্ত রিপোর্ট আসার পরেই পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।

পরদিন ভোরে এক বন্ধুর দিদির কাছে ভাইফোঁটা নিতে যাবেন বলে গত ১৫ নভেম্বর রাতে রহিম ওস্তাগর রোডের বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন প্রবীর দাস (৩৮)। পঞ্চাননতলায় জগন্নাথ পোড়েল নামে যে বন্ধুর বাড়িতে তিনি উঠেছিলেন, তিনি পরের দিন ভোরে প্রবীরের বাড়িতে গিয়ে খবর দেন যে, তাঁকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। বিশ্বজিৎ ও সুরজিৎ দলবল নিয়ে এসে আগের রাতে মারধর করে তাঁকে তুলে নিয়ে গিয়েছেন বলেও জানান জগন্নাথ। এর পরে ছেলেকে খুঁজতে বেরিয়ে রবীন্দ্র সরোবর থানার কাছেই ফুটপাতে তাঁকে পড়ে থাকতে দেখেন প্রবীরের মা কাজল দাস। থানায় জানানো হলে পুলিশ গিয়ে প্রবীরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে মৃত ঘোষণা করা হয় তাঁকে।

Advertisement

থানার এত কাছে আহত অবস্থায় কেউ পড়ে থাকা সত্ত্বেও পুলিশ কেন খবর পেল না, তা নিয়ে সমালোচনা হয়। পরদিন বিশ্বজিৎ, সুরজিৎ, বাপি হালদার ও আশিস গায়েন নামে চার জনের বিরুদ্ধে ছেলেকে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন প্রবীরের মা। একটি খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করে পুলিশ।

জগন্নাথ পুলিশকে জানান, বিশ্বজিৎ প্রবীরের দূর সম্পর্কের শ্যালক। গত কয়েক মাস ধরেই তাঁদের মধ্যে বিবাদ চলছে। প্রবীরের স্ত্রী-ও গত কয়েক মাস ধরে স্বামীর সঙ্গে থাকছিলেন না।

ঘটনার রাতে খাওয়ার পরে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন তাঁরা। রাতে শৌচকর্ম সারতে বস্তির ঘর থেকে প্রবীর রাস্তায় বেরোলে ওই পাড়ারই বাসিন্দা বিশ্বজিৎ তাঁকে ধরে টানতে টানতে নিয়ে যান। এর পরে মারধর করে তাঁকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় বলে জগন্নাথের দাবি। বাধা দিতে গেলে তাঁকে এবং তাঁর স্ত্রীকেও মারধর করা হয় বলে জগন্নাথের অভিযোগ।

রবীন্দ্র সরোবর থানার পুলিশ আধিকারিকদের যদিও দাবি, সরোবর চত্বরে হকার হিসেবে জীবিকা নির্বাহ করা প্রবীর নেশায় ডুবে থাকতেন। তাঁর নানা রকম রোগ ছিল। ফলে মারধরের জেরেই এই মৃত্যু কি না, তা দেখা হবে। প্রবীরের মা কাজল অবশ্য এ দিনও দাবি করেন, “যদি মারধরের কারণে আমার ছেলে মারা না গিয়ে থাকে, তা হলে ওর গায়ে এত আঘাতের চিহ্ন এল কী করে? কেনই বা জামাকাপড় ছেঁড়া অবস্থায় ও অত ক্ষণ রাস্তায় পড়ে রইল?”

রবীন্দ্র সরোবর থানা কলকাতা পুলিশের দক্ষিণ-পূর্ব ডিভিশনের অন্তর্গত। সেখানকার ডিসি সুদীপ সরকার বললেন, “ময়না-তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টের ভিত্তিতে কিছুই বলা সম্ভব নয়। চূড়ান্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে পদক্ষেপ করা হবে। তবে এই ঘটনা খুন কি না, তা নিয়ে একটা সংশয় আমাদের রয়েছে।” মৃতের স্ত্রীর অবশ্য এ দিনও এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement