বেথুন কলেজিয়েট স্কুল। ফাইল চিত্র
১৭৫ বছর আগে ২১ জন ছাত্রীকে নিয়ে শুরু হয়েছিল বেথুন স্কুলের পথচলা। সেই ছাত্রীদের মতোই ডুরে শাড়ি পরে রাজপথে হাঁটল আজকের বেথুন কলেজিয়েট স্কুলের খুদেরা। হাতে ধরা আ, আ ক, খ লেখা স্লেট এবং পেন্সিল। মুখে ছড়া, ‘পাখি সব করে রব’।
বেথুন কলেজিয়েট স্কুলের ১৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে মঙ্গলবার সকালের পদযাত্রার অন্যতম আকর্ষণ ছিল খুদেরাই। সকাল আটটায় পদযাত্রা শুরু হয় ওই স্কুলের সামনে থেকে। বিবেকানন্দর পৈতৃক ভিটে, সেখান থেকে রাজা রামমোহন এবং বিদ্যাসাগরের বাড়ি হয়ে স্কুলে ফেরে পদযাত্রা। অংশ নেন স্কুলের বর্তমান ও প্রাক্তনছাত্রী-শিক্ষিকা-প্রধান শিক্ষিকারা। তাঁদের সঙ্গেই হাঁটেন অভিভাবক ও সমাজের বিশিষ্টেরা। বিবেকানন্দ, রামমোহন এবংবিদ্যাসাগরের বাড়িতে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করে ছাত্রীরা।
বেথুন কলেজিয়েট স্কুলের প্রথমে নাম ছিল ‘হিন্দু ফিমেল স্কুল’। দক্ষিণারঞ্জন মুখোপাধ্যায়ের বাড়ির বৈঠকখানায় শুরু স্কুলের পথচলা। বর্তমান ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক শবরী ভট্টাচার্য জানান, এ দিনের পদযাত্রায় হেঁটেছেন দক্ষিণারঞ্জন মুখোপাধ্যায়ের প্রপৌত্র নরেন্দ্ররঞ্জন মুখোপাধ্যায়। রাজ্য সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগের যুগ্ম অধিকর্তা পদ থেকে সম্প্রতি অবসর নিয়েছেন তিনি। নরেন্দ্ররঞ্জন বলেন, ‘‘আমাদের বাড়ি, ৫৬ নম্বর সুকিয়া স্ট্রিটের বৈঠকখানায় শুরু হয়েছিল বেথুন স্কুল। ১৭৫ বছর আগের সমাজে মেয়েদের কোনও অধিকার ছিল না। তাই পূর্বপুরুষেরা মনে করছিলেন, মেয়েদের সামাজিক অবস্থার উন্নতির জন্য দরকার শিক্ষা। সেই স্কুলের ১৭৫ বছর পূর্তিতে হাঁটতে অন্য অনুভূতি তো হবেই।’’
পদযাত্রার পুরো পথ হাঁটলেন বাগুইআটির বাসিন্দা বছর, একাশির কৃষ্ণা চক্রবর্তীও। জানালেন, বেথুনের ১০০ বছর, ১৫০ বছর পূর্তির পদযাত্রাতেও হেঁটেছিলেন। কৃষ্ণা বলেন, ‘‘বাবার হাত ধরে যখন স্কুলে ভর্তি হয়েছিলাম, তখন ১০০ বছর পূর্তির অনুষ্ঠান হচ্ছিল। খুব আবছা মনে পড়ে, ১০০ বছরের পদযাত্রায় হেঁটেছিলাম। ১৫০ বছরেও হেঁটেছি। আর ১৭৫ বছরেও হাঁটলাম।’’
শবরী ভট্টাচার্য জানান, ১০ মে নেতাজি ইন্ডোরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ১৭৫ বছর পূর্তির সূচনা হবে। ওই অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও থাকার কথা। এ ছাড়া, সারা বছর ধরে ১৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে চলবে নানা অনুষ্ঠান।