শ্রদ্ধার্ঘ্য: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিফলকের উল্টো দিকে নিমতলা শ্মশানে বসেছে এই স্মৃতিফলক। উদ্বোধনের অপেক্ষা। নিজস্ব চিত্র
তাঁর মরদেহের সৎকার হয়েছিল নিমতলা ঘাটে। কিন্তু মৃত্যুর এত বছর পরেও সেই সমাধিস্থলে বসানো হয়নি তাঁর কোনও স্মৃতিফলক। অবশেষে মৃত্যুর ১২৯ বছর পরে বসল তা। তাঁর মৃত্যুবার্ষিকীর ঠিক পরের দিন, ৩০ জুলাই নিমতলা শ্মশানঘাটে উদ্বোধন হবে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের স্মৃতিফলক। ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন বা ভারতসভার উদ্যোগে কলকাতা পুরসভার সহযোগিতায় বিদ্যাসাগরের ওই স্মৃতিফলক বসেছে নিমতলায়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিফলকের ঠিক উল্টো দিকে।
যাঁর জীবন ও কাজকর্মের অধিকাংশটাই কলকাতাকে কেন্দ্র করে, সেই বিদ্যাসাগরের সমাধিস্থলে কেন এত দিন কোনও স্মৃতিফলক ছিল না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। বিদ্যাসাগরের ভক্ত তথা চিকিৎসক শঙ্কর নাথের কথায়, ‘‘ঢাকঢোল পিটিয়ে বিদ্যাসাগরের ২০০তম জন্মবার্ষিকী পালন হল শহরে। কিন্তু নিমতলায় তাঁর একটা স্মৃতিফলক বসানোর কথা কারও মনে হয়নি। অবশেষে সেখানে রবীন্দ্রনাথের স্মৃতিফলকের উল্টো দিকে বিদ্যাসাগরের স্মৃতিফলক বসায় আমরা খুশি। নিমতলা ঘাটে রবীন্দ্রনাথের স্মৃতিফলক একটি দর্শনীয় বস্তু। এ বার তার সঙ্গে বিদ্যাসাগরের স্মৃতিফলকও যুক্ত হয়ে গেল।’’
ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি সুস্বাগত বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, ‘‘১৮৭৬ সালে সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে তৈরি হয় এই অ্যাসোসিয়েশন। এর সদস্য ছিলেন স্বয়ং বিদ্যাসাগর মশাইও। আমরা অনেক দিন আগেই নিমতলা ঘাটে বিদ্যাসাগরের স্মৃতিফলক বসাতে উদ্যোগী হয়েছিলাম। শেষ পর্যন্ত কলকাতা পুরসভা সেখানে জায়গা করে দেওয়ায় আমরা পুর কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’’
সুস্বাগতবাবু জানান, বিদ্যাসাগরের মৃত্যু হয় ১৮৯১ সালের ২৯ জুলাই, রাত ২টো ১৮ মিনিটে। রাত ১২টা পেরিয়ে যাওয়ায় তারিখটা ৩০ জুলাই হওয়া উচিত। কিন্তু তাঁর মৃত্যুদিন ২৯ জুলাই হিসেবেই ধরা হয়। সুস্বাগতবাবু বলেন, ‘‘আমরা ২৯ জুলাই স্মৃতিফলকটি উদ্বোধন করতাম। কিন্তু ওই দিন সার্বিক লকডাউন ঘোষণা হওয়ায় ৩০ জুলাই উদ্বোধনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’
কাল, ৩০ জুলাই ওই স্মৃতিফলকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পুরসভার কর্মকর্তাদের সঙ্গে উপস্থিত থাকার কথা এলাকার বিধায়ক তথা মন্ত্রী শশী পাঁজারও। তিনি বলেন, ‘‘উদ্যোগটা মূলত ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশনের। তবে পুরসভাও সব দিক দিয়ে সহযোগিতা করেছে।’’
আরও পড়ুন: একাকী বৃদ্ধার দেহ উদ্ধার টালিগঞ্জে