প্রতীকী ছবি।
দুষ্টু কৃত্রিম উপগ্রহ ধ্বংস করার আগে তাকে ধরতে হবে। জানতে হবে মহাকাশে তার উপস্থিতি। আর এই কাজটাই কলকাতায় বসে করছে একটি প্রযুক্তি সংস্থা। সাইবার নিরাপত্তার আন্তর্জাতিক বাজারে শীর্ষে থাকা ইজ়রায়েলি সংস্থাদের সঙ্গে টক্কর দিয়ে জায়গা করে নিচ্ছে রাজ্যের এই সংস্থা। তেমনই দাবি সংশ্লিষ্ট শিল্প মহলের।
২০০৬ সালে ‘ভিহিয়ার’ নামে এই প্রযুক্তি স্টার্টআপ তৈরি হয়। লাতিন ভাষায় ‘ভিহিয়ার’ শব্দের অর্থ তুলনামূলক অবস্থান। সংস্থার প্রাথমিক ব্যবসায়িক পরিকল্পনার সঙ্গে অনেকটাই মিলে গিয়েছিল নামের এই মানে। জিআইএস ও জিপিএস প্রযুক্তি সংক্রান্ত ব্যবসা করবে বলে ঠিক করেছিলেন সংস্থার দুই প্রতিষ্ঠাতা নবীন ও প্রবীণ জয়সওয়াল। পরে অবশ্য বদলে গিয়েছিল ব্যবসার অভিমুখ। দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থার সঙ্গে জড়িত একটি কেন্দ্রীয় সংস্থার কোনও সমস্যা সমাধানের জন্য ডাক পেয়েছিল সংস্থা। আর সেই থেকেই সাইবার যুদ্ধের শরিক তারা।
সংস্থার মূল কাজের জায়গা যোগাযোগ ব্যবস্থা, তথ্য বিশ্লেষণ ও সাইবার নিরাপত্তা সংক্রান্ত প্রযুক্তি। সেই সুবাদেই সংস্থার কাজের মানচিত্রে রয়েছে কৃত্রিম উপগ্রহ। সংস্থার দাবি, স্পেক্ট্রামে ভেসে বেড়ায় বিবিধ ডেটা বা তথ্য। সেই তথ্যের নির্দিষ্ট ‘প্যাটার্ন’ ও তার রকমফের (অ্যানোম্যালিজ) বিশ্লেষণ করে চিহ্নিত করা যায় দুষ্টু উপগ্রহ। তার পরে শুরু হয় সাইবার লড়াই। সংস্থার প্রধান ক্রেতা কেন্দ্র ও রাজ্য, দুই সরকারই। সংস্থার দাবি, সরকারি বরাত ছাড়া এই ব্যবসায় টিঁকে থাকা অসম্ভব। আর তাই সরকারের প্রয়োজনের দিকে নজর রেখেই সংস্থার যাবতীয় গবেষণা ও প্রযুক্তি তৈরি হয়। প্রবীণ জয়সওয়াল বলেন, ‘‘প্রতিটি দেশ যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। ইলেকট্রনিক যুদ্ধ। তথ্য নিরাপদ রাখার যুদ্ধ।’’
তবে সংস্থার তৈরি প্রযুক্তির প্রয়োগ নিয়ে বিশেষ মুখ খুলতে চায়নি ‘ভিহিয়ার’। কারণ এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে জাতীয় নিরাপত্তার মতো স্পর্শকাতর বিষয়। এ কাজে গোপনীয়তা রক্ষা করা এত গুরুত্বপূর্ণ যে সংস্থার তৈরি সফটওয়্যারের পেটেন্ট নেওয়াও সম্ভব হয় না। কারণ পেটেন্ট নিতেও কিছু তথ্য খোলা বাজারে পৌঁছে যায়। যা দেশের পক্ষে নিরাপদ নয়। তাই তিন মাস অন্তর ‘রিসার্চ পেপার’ প্রকাশ করে সংস্থা।