—প্রতীকী ছবি।
ধৃত মাওবাদী নেতা সব্যসাচী গোস্বামী ওরফে কিশোরদাকে জেরা করে তাঁর ডেরা থেকে উদ্ধার হওয়া নাইনএমএম কার্বাইনটির মালিক কে, তা নিয়ে ধন্দে কলকাতা পুলিশের এসটিএফ।
সূত্রের খবর, উদ্ধার হওয়ার কার্বাইনটির গায়ে লেখা নম্বর দেখে প্রাথমিক ভাবে গোয়েন্দারা মনে করছেন সেটি এই রাজ্যের পুলিশের নয়। তাই ওই কার্বাইনের মালিক খুঁজতে মাওবাদী অধ্যুষিত ঝাড়খণ্ড, ছত্তীসগঢ়ের মতো রাজ্যকে চিঠি দিচ্ছে এসটিএফ। একই সঙ্গে মাওবাদী দমনে নিয়োজিত কেন্দ্রীয় বাহিনীকেও ওই নম্বর দিয়ে চিঠি দিচ্ছে কলকাতা পুলিশ।
এক পুলিশকর্তা জানান, তাঁরা নিশ্চিত ২০১০ সালের আগে মাওবাদীরা নিরাপত্তারক্ষীদের কাছ থেকে ওই অস্ত্রটি লুঠ করেছিল। তবে ধৃত মাওবাদী নেতা কিশোরদার কাছে সেটা কী ভাবে এল তা জানার চেষ্টা চলছে। প্রশ্ন উঠেছে, এর আগেও কিশোরদা একাধিক বার রাজ্য পুলিশের হাতে গ্রেফতার হলেও কেন ওই অস্ত্র উদ্ধার হয়নি।
ধৃত সব্যসাচীকে জেরা করে দক্ষিণ ২৪ পরগণার মৈপীঠ কোস্টাল থানা এলাকার একটি জায়গা থেকে সম্প্রতি ওই কার্বাইনটি উদ্ধার করে এসটিএফ। একই সঙ্গে উদ্ধার করা হয় কার্বাইনের দু’টি ম্যাগাজিন, ২০ রাউন্ড বুলেট, একটি ল্যাপটপ, এসডি কার্ড, কার্ড রিডার, নগদ ২১ হাজার টাকা। গত মাসে পুরুলিয়া থেকে জেলা পুলিশ গ্রেফতার করেছিল কিশোরদাকে। পরে কলকাতা পুলিশের এসটিএফ তাঁকে নিজেদের হেফাজতে নেয়। তাঁকে জেরা করে নরেন্দ্রপুর থেকে সঞ্জয় মণ্ডল নামে আরেক মাওবাদীকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।
গোয়েন্দাদের দাবি, ওই অস্ত্রটি কিশোরদার কাছে এসেছিল ২০১০ সালের আগে। তার পরেই নিরাপদ জায়গা হিসেবে মৈপীঠ কোস্টাল থানার ওই বাড়িতে তা লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। বাড়িটি ভাড়া নিয়েছিলেন কিশোরদা। সেখানে মাঝেমধ্যে তিনি যেতেন বলে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন। উল্লেখ্যে, ২০০৮ থেকে ২০১১ পর্যন্ত এই রাজ্যে জঙ্গলমহলের একাধিক জায়গাতে মাওবাদীদের হাতে আক্রান্ত হয়েছে এ রাজ্যের পুলিশ। আবার ঝাড়খণ্ড-ছত্তীসগঢ়ের মতো রাজ্যে মাঝেমধ্যেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর ওপর আক্রমণ চালিয়ে অস্ত্র লুঠ করে পালিয়েছেন মাওবাদীরা।
রাজ্যে নতুন করে মাওবাদীদের সংঘটন তৈরির কাজ শুরু করছিল কিশোরদা। সেজন্য সংগঠনে নতুন যুবক যুবতীদের নিয়োগ করার কাজ করছিল কিশোরদা। আর তারজন্যে পুরুলিয়া বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রামের বিভিন্ন এলাকায় ছিল তার গতিবিধি। এক পুলিশ কর্তা জানান, জঙ্গলমহলে নতুন করে মাওবাদীদের স্কোয়াড গড়ে তোলার কাজ করছিল ধৃত ওই নেতা।