প্রতীকী ছবি—শাটারস্টক।
বড়দিনের আগে মল্লিকবাজার থেকে পাঁচ শিশুশ্রমিককে উদ্ধার করল পার্ক স্ট্রিট থানা। গাড়ির যন্ত্রাংশের দোকানে কিশোরদের কাজ করতে দেখে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘বচপান বাচাও আন্দোলন’ পার্ক স্ট্রিট থানায় অভিযোগ জানায়। সঙ্গে সঙ্গে অভিযান চালিয়ে পাঁচ শিশুকে উদ্ধার করে তাদের হোমের পাঠানোর ব্যবস্থা করে পুলিশ।
পার্ক স্টিট থানা সূত্রে খবর, খুব সামান্য টাকার বিনিময়ে মল্লিকবাজারের বিভিন্ন দোকানে কাজ করত ওই পাঁচ শিশু। দালাল মারফত তাদের বিহার, ঝাড়খণ্ড থেকে কলকাতায় আনা হয়েছিল বলে জানতে পেরেছে পুলিশ।
এর আগেও লকডাউনের পরে ময়দান থানা এলাকা থেকে ২১ জন শিশুশ্রমিককে উদ্ধার করে পুলিশ। প্রধানত বিহার, ঝাড়খণ্ড থেকে দালাল চক্রের মাধ্যমে তাদেরকে কলকাতা আনা হয় বলে জানা যাচ্ছে। কলকাতা, হাওড়া, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় তাদের কাজে লাগানো হয় ‘কমিশন’-এর ভিত্তিতে। শিশুশ্রমিকদের কাজে লাগানোর নেপথ্যে একটি দালালচক্র সক্রিয় বলে খবর। ওই চক্রের মাথাদের খোঁজে নেমেছে কলকাতা পুলিশ।
লকডাউনের পরে কলকাতায় শিশুশ্রমিকদের আনাগোনা যে বেড়েছে তা মানছেন পশ্চিমবঙ্গ শিশুসুরক্ষা অধিকার আয়োগ-এর চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘‘করোনার কারণে বহু স্কুল বন্ধ। লকডাউন ঘোষণা হওয়ার পর মানুষের পেটে ভাত নেই। যে সব শিশু স্কুলে যাচ্ছে না, তাদের মধ্যে অনেকেই সংসারের প্রয়োজনে কাজে যাচ্ছে। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এবং পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় রেখে আমরাও নজরদারি চালাচ্ছি। একই সঙ্গে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’
আরও পড়ুন: ফেসবুকে রহস্য জাগানোর পর টুইটারে ‘দিদির সঙ্গেই’ জিতেন্দ্র
উদ্ধার হওয়া শিশুদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, হাড়ভাঙা খাটুনির বদলে মালিক তাদের মাসে দু’ থেকে তিন হাজার টাকা দিত। যে সব দোকানে তারা কাজ করত, সেখানকার মালিকদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। বুধবার দুপুরে পাঁচ শিশু ও কিশোরকে উদ্ধারের পর শিশু অধিকার সুরক্ষা আইনে মামলা করে তদন্তে নেমেছে পার্ক স্ট্রিট থানার পুলিশ।
ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা জানাচ্ছে, শহরের বিভিন্ন প্রান্তে এ ভাবেই ভিন রাজ্য থেকে আসা শিশুদের দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে। গত এক বছরে এমন অনেক ঘটনা তাদের নজরে পড়েছে। পুলিশকে বিষয়টি জানানোর পরে ওই সব ঘটনায় ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে বলে সংস্থাটি জানিয়েছে।