ফাইল চিত্র।
কসবায় জাল আইএএস অফিসার দেবাঞ্জন দেবের ভুয়ো ভ্যাকসিন শিবিরের মামলায় বৃহস্পতিবার আলিপুর আদালতের অতিরিক্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় বিচারকের এজলাসে চার্জশিট পেশ করেছে কলকাতা পুলিশ। অভিযুক্ত হিসেবে দেবাঞ্জন-সহ আট জনের নাম আছে চার্জশিটে।
দেবাঞ্জন ছাড়াও চার্জশিটে আর যে-সাত জনের নাম আছে, তারা হল সুশান্ত দাস, শান্তনু মান্না, শরৎ পাত্র, অরবিন্দ বৈদ্য, অশোক কুমার রায়, খোকন দেব ও রবীন সিকদার। ভুয়ো টিকা শিবিরের বিষয়টি ধরা পড়ার ৬৪ দিনের মধ্যে এ দিন প্রায় এক হাজার পাতার চার্জশিট জমা দেওয়া হল। দেবাঞ্জন এবং তার সঙ্গীরা এখনও পুলিশি হেফাজতে রয়েছে। ভুয়ো ভ্যাকসিন শিবির নিয়ে তদন্তে নেমেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি-ও।
খুনের চেষ্টা ও প্রাকৃতিক বিপর্যয় আইনের ধারা-সহ ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৩টি ধারায় দেবাঞ্জনদের অভিযুক্ত করা হয়েছে। অভিযোগ, ভুয়ো আইএএস অফিসার সেজে দেবাঞ্জন আর্থিক প্রতারণা ও শিবির করে জাল ভ্যাকসিন দিয়েছিল। চিকিৎসকদের বক্তব্য, করোনার টিকার নােম ভুয়ো শিবিরে যে-ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে, তা থেকে প্রাণহানিরও আশঙ্কা আছে। এ কথা চার্জশিটেও উল্লেখ করা হয়েছে, জানান তদন্তকারীরা।
দেবাঞ্জনের বিরুদ্ধে একাধিক আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে। পুলিশের দাবি, জাল ভ্যাকসিন শিবির সংগঠিত করা এবং আর্থিক প্রতারণায় বাকি সাত জন কোনও না-কোনও ভাবে দেবাঞ্জনকে সাহায্য করেছিল বলে তদন্তে উঠে এসেছে। এই মামলায় ১৩১ জন সাক্ষী আছেন। ১০ জনের গোপন জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। দেবাঞ্জনের অফিস ও বাড়ি থেকে জাল ভ্যাকসিনের নমুনা এবং ৪৫ ধরনের নথি বাজেয়াপ্ত করা হয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে চার্জশিটে। জাল টিকার বিষয়ে দু’টি রিপোর্ট জমা পড়েছে। একটি রিপোর্ট বাকি আছে বলে জানানো হয়েছে চার্জশিটে। পরে সেটি আদালতে পেশ করা হবে।
সরকারি আইনজীবী সৌরীন ঘোষাল আদালতে বলেন, ‘‘পুলিশের অভিযোগ তথ্যপ্রমাণ ও সাক্ষ্য-সহ চার্জশিটে প্রতিফলিত হয়েছে।’’ দেবাঞ্জনের আইনজীবী দিব্যেন্দু ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘অভিযুক্তদের আইনজীবীদের ওই চার্জশিট দেখানো হচ্ছে না। তাই আদালত যেন তা গ্রহণ না-করে। কারণ, চার্জশিট না-দেখে মামলার শুনানি সম্ভব নয়।’’ দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পরে বিচারক আগামী ১ সেপ্টেম্বর অভিযুক্তদের কৌঁসুলিদের চার্জশিটের প্রতিলিপি বিলির নির্দেশ দিয়েছেন।