লালবাজার। —ফাইল চিত্র।
গত তিন মাসে অন্তত তিন বার বোমার শব্দে কেঁপে উঠেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়-কাশীপুর এলাকা। সেই সমস্ত বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছে একাধিক জনের। জখমও হয়েছেন বহু। অভিযোগ, ওই এলাকার বহু বাড়িতেই রয়েছে বোমা তৈরির অবৈধ কারখানা। বিশেষ করে, কাশীপুরের চালতাবেড়িয়া ও চকমরিয়ার মতো একাধিক গ্রামে এমন বেশ কিছু বোমা কারখানা রয়েছে। এ বার সেই সমস্ত কারখানা বন্ধ করাই চ্যালেঞ্জ কলকাতা পুলিশের কাছে।
লালবাজারের কর্তাদের একাংশের দাবি, বর্তমানে কলকাতা পুলিশ এলাকার কোথাও বাজি তৈরি হয় না। কিন্তু ভাঙড়-কাশীপুরের মতো এলাকায় বাজি নয়, বোমা তৈরির কারখানা রয়েছে। যার পরিণাম দেখা গিয়েছিল ক’দিন আগের পঞ্চায়েত নির্বাচনে। সে সময়ে সেখানে বোমার সঙ্গে বন্দুকের দাপটও দেখা গিয়েছিল। এ বার ওই এলাকা কলকাতা পুলিশের অধীনে আসতে চলছে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে। আর তাই দায়িত্ব নেওয়ার আগেই বোমা-বন্দুকের রমরমায় রাশ টানতে চাইছে লালবাজার। তার জন্য কোথায় কোথায় বোমা তৈরি হয়, তার তালিকা তৈরি করেছেন গোয়েন্দারা। এমনকি, গোয়েন্দারা প্রতিদিন নিয়ম করে ওই সব এলাকায় গিয়ে তথ্য সংগ্রহও করছেন। সূত্রের দাবি, আপাতত কোনও ব্যবস্থা নেওয়া না হলেও ওই এলাকা আনুষ্ঠানিক ভাবে কলকাতা পুলিশের অধীনে এলেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে। এমনটাই মনে করছে পুলিশের একাংশ। ওই এলাকার অপরাধের ধরন বুঝে সেই মতো ব্যবস্থা নেওয়ার তোড়জোড় চলছে বলেও খবর।
চলতি মাসেই ভাঙড় ও কাশীপুর থানা কলকাতা পুলিশের অধীনে চলে আসবে বলে সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে। সেই সঙ্গে ওই এলাকায় আটটি নতুন থানা তৈরি করা হচ্ছে। ওই আটটি থানা কলকাতা পুলিশের ভাঙড় ডিভিশন নামে পরিচিত হবে। কবে থেকে সেখানে কলকাতা পুলিশের কর্মীরা থানার দায়িত্ব নেবেন, তা ঠিক না হলেও ইতিমধ্যে বিভিন্ন থানায় কলকাতা পুলিশের বোর্ড লাগানোর কাজ শুরু হয়েছে।
লালবাজারের একাধিক অফিসার জানিয়েছেন, প্রায় ২১০ বর্গকিলোমিটার জুড়ে রয়েছে ওই ভিডিশনের আটটি থানা। ওই এলাকা একেবারেই নতুন কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা থেকে শুরু করে সাধারণ পুলিশকর্মীদের কাছে। এলাকা চিনে নিয়ে সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা যেমন তাঁদের কাছে নতুন চ্যালেঞ্জ, তার থেকেও বড় চ্যালেঞ্জ, বোমা-বারুদের স্তূপে বসে থাকা ভাঙড়-কাশীপুরে অস্ত্র ও বিস্ফোরকের রমরমা বন্ধ করা।