— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
দায়িত্ব হাতে পাওয়ার পরেই ভাঙড়ে কড়া হাতে যান নিয়ন্ত্রণ শুরু করল কলকাতা পুলিশের ভাঙড় ডিভিশনের ট্র্যাফিক গার্ড। মঙ্গলবার সকাল থেকেই যা দেখা গেল ভাঙড়ের ঘটকপুকুরে, বাসন্তী হাইওয়েতে। আগে ঘটকপুকুর চৌমাথায় তীব্র যানজটের জেরে বাসন্তী হাইওয়ে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ত। প্রায়ই অভিযোগ উঠত যত্রতত্র গাড়ির পার্কিং এবং ফুটপাত দখল করে হকারদের দাপাদাপির। এ দিন সকাল থেকেই ভাঙড় ডিভিশনের ট্র্যাফিক গার্ডের ওসি, সার্জেন্ট-সহ পুলিশকর্মীরা ঘটকপুকুরে যান নিয়ন্ত্রণের কাজে নামেন। যার ফলে বিভিন্ন রাস্তায় ট্র্যাফিক সিগন্যাল মেনে চলার প্রবণতা দেখা যায় চালকদের মধ্যে। ঘটকপুকুর মোড়-সহ কিছু এলাকায় যত্রতত্র বেআইনি পার্কিং রুখতে পুলিশ গার্ডরেল লাগিয়ে দেয়।
পুলিশকে কড়া হাতে যানশাসন করতে দেখে খুশি এলাকার সাধারণ মানুষও। কেউ কেউ আবার ভয়ও পেয়েছেন। কারণ, তাঁদের অনেকেই হেলমেট না পরে মোটরবাইক চালান। ভাঙড়ের বাসিন্দাদের বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া গ্রুপে এ নিয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করা শুরু হয়েছে। যাতে সকলে ট্র্যাফিক সিগন্যাল ও ট্র্যাফিক আইন মেনে চলেন। তা সত্ত্বেও অবশ্য এ দিন বিনা হেলমেটে অনেককেই বাইক চালাতে দেখা গিয়েছে। গাড়িতে সিট বেল্ট না পরেও ঘুরে বেড়িয়েছেন অনেকে। পুলিশকর্তারা অবশ্য আশ্বাস দিচ্ছেন, এখনই তাঁরা ট্র্যাফিক-বিধি ভাঙার জন্য খড়্গহস্ত হবেন না, জরিমানাও করবেন না।
ভাঙড় ট্র্যাফিক গার্ডের এক কর্তার কথায়, ‘‘আমরা এলাকার মানুষকে নানা ভাবে সচেতন করতে চাই। তার পরেও যদি তাঁরা বিধি না মানেন, তখন হয়তো আইন অনুযায়ী জরিমানার পথে যেতে হবে।’’ আজ, বুধবার ভাঙড়ের বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ সচেতনতার পাঠ দেবে পথচারীদের। ঘটকপুকুর বাজার, পাগলাহাট বাজার এবং বামুনিয়া বাজার— বাসন্তী রাজ্য সড়কের এই তিনটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে পথনাটিকা, মাইকিং ও লিফলেট বিলির মাধ্যমে সচেতনতার প্রচার করবে ট্র্যাফিক গার্ড। ট্র্যাফিক বিভাগের এক কর্তার কথায়, ‘‘সকলে যদি হেলমেট পরে মোটরবাইক চালান, তা হলে দুর্ঘটনা অনেকটা কমতে পারে। পুলিশকে দেখে হেলমেট পরতে হবে না। নিজেদের প্রাণ বাঁচানোর জন্যই হেলমেট পরুন।’’
সোমবার কলকাতা পুলিশের ভাঙড় ডিভিশনের ভার্চুয়াল উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই ডিভিশনের জন্য আলাদা ট্র্যাফিক বিভাগও চালু করা হয়েছে। এক জন ওসি, ১০ জন অফিসার, কনস্টেবল এবং সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়ে মোট ৮০ জন পুলিশকর্মী ভাঙড় ডিভিশনের ট্র্যাফিক বিভাগের দায়িত্ব সামলাবেন। ওই ডিভিশনের সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা বাসন্তী হাইওয়ে। ওই রাস্তার সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ তিনটি এলাকা হল, পাগলাহাট, ঘটকপুকুর ও বামুনিয়া মোড়। এ ছাড়াও সেখানে চন্দনেশ্বর, বোদরা, শোনপুর, বিজয়গঞ্জ বাজার, পোলেরহাট বাজার-সহ আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় রয়েছে। প্রতিটি মোড়েই যানজট লেগে থাকে। এ দিন অবশ্য ঘটকপুকুর মোড়ে ট্র্যাফিক বিভাগকে যানশাসন করতে দেখা গেলেও বাকি মোড়গুলিতে তাদের কোনও নজরদারি চোখে পড়েনি।