সোমবার তালিকা প্রকাশ করবে বিজেপি। ফাইল চিত্র
দেরিতে হলেও কলকাতা পুরভোটের প্রার্থিতালিকা চূড়ান্ত গেরুয়া শিবিরের। শনিবারই দলের দুই সাংগঠনিক জেলা উত্তর ও দক্ষিণ কলকাতা কমিটির পক্ষে ওয়ার্ড অনুযায়ী তালিকা জমা দেওয়া হয়। রবিবার সেই তালিকা নিয়ে বসেন রাজ্য নেতৃত্ব। দিনভর আলোচনার পরে ১৪৪ ওয়ার্ডের প্রার্থীর নাম বিজেপি চূড়ান্ত করে ফেলেছে বলে জানা গিয়েছে। গেরুয়া শিবির এখনও কোনও ঘোষণা না করলেও জানা গিয়েছে, সোমবার দুপুর নাগাদ প্রকাশিত হবে তালিকা।
রবিবার হেস্টিংস দফতরে কলকাতা পুরভোটের প্রার্থিতালিকা চূড়ান্ত করতে দুই প্রাক্তন রাহুল সিংহ এবং দিলীপ ঘোষকে নিয়ে বৈঠকে বসেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। ওই বৈঠকে ছিলেন দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী এবং কলকাতা পুরভোট পরিচালানর দায়িত্বপ্রাপ্ত রাজ্যের সহ-সভাপতি প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিটি ওয়ার্ড ধরে ধরে আলোচনা হয় রবিবারের বৈঠকে। এলাকায় ভাল পরিচিতি রয়েছে এবং দলের কাজে নিয়মিত এমন নেতাদেরই প্রার্থী করার ক্ষেত্রে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল-সহ অন্য রাজনৈতিক দল থেকে বিজেপি-তে এসেছেন এমন কয়েকজন প্রার্থিতালিকায় জায়গা পেলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দলের পুরনো কর্মীরা প্রাধান্য পেয়েছেন।
গত বিধানসভা নির্বাচনে অনেকে বিজেপি-তে যোগ দিয়েই ভোটে লড়ার সুযোগ পেয়ে গিয়েছিলেন। এ নিয়ে দলের মধ্যে অনেক ক্ষোভও তৈরি হয়েছিল। যাঁরা এসেই টিকিট পেয়ে যান তাঁদের ‘তৎকাল বিজেপি’ বলে দলের ভিতরে ও বাইরে সমালোচনা হয়। সেই সব কথা মাথায় রেখে পুরভোটের প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সতর্ক বিজেপি নেতৃত্ব। সূত্রের খবর, তৃণমূলের তালিকায় জায়গা না পাওয়া কয়েকজন প্রার্থী হওয়ার জন্য যোগাযোগ করলেও বিজেপি গুরুত্ব দেয়নি। দলের জেলা ও মণ্ডল স্তরের কর্মীদেরই অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।
বিজেপি কলকাতা পুরভোটের প্রচারে যে কমিটি ঘোষণা করেছিল তাতে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দীনেশ ত্রিবেদী, অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষ থেকে প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক বৈশালী ডালমিয়া রয়েছেন। দলের মধ্যে এমন জল্পনা ছিল যে, এঁদের মধ্যে থাকে কাউকে প্রার্থী হিসেবে দেখা যেতে পারে। কলকাতা পুরভোটে প্রার্থী হতে পারেন বলে শোনা গিয়েছিল ভবানীপুর উপনির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে পরাজিত প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়ালের নাম। উঠে এসেছিল বিধানসভা নির্বাচনে মানিকতলা কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী তথা প্রাক্তন ফুটবলার কল্যাণ চৌবের নামও। তবে শেষ পর্যন্ত এঁরা কেউই প্রার্থী হচ্ছেন না বলেই জানা গিয়েছে।
রাজ্যের সব পুরসভায় একসঙ্গে ভোটের দাবি নিয়ে আগেই আদালতে যায় বিজেপি। সোমবার কলকাতা হাই কোর্টে সেই মামলার শুনানি রয়েছে। সেখানে বড় কিছু ঘোষণার আশা না করলেও গেরুয়া শিবির চাইছে আদালতের বক্তব্য শোনার পরেই ঘোষণা করা হবে প্রার্থীদের নাম। আগেই ঘোষণা হয়ে গেলে সোমবারের শুনানিতে আদালতের সামনে দলের বক্তব্য তুলে ধরা কঠিন হবে বলেই মনে করছেন বিজেপি শিবিরের আইনজীবীরা। আর সেটা মাথায় রেখেই ‘কোর্টেও আছি, ভোটেও আছি’ নীতি নিয়ে বিজেপি প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত হয়ে গেলেও রবিবার ঘোষণা স্থগিত রাখছে।