আপাতত তিন-চার সপ্তাহ তিনি ইডি-র দফতরে হাজিরা দিতে পারবেন না। সোমবার চিঠি দিয়ে ইডি-কে এ কথা জানিয়ে দিলেন কলকাতার মেয়র তথা তৃণমূল বিধায়ক শোভন চট্টোপাধ্যায়। নারদ কাণ্ডে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগের তদন্তে এ দিন প্রথম কলকাতার মহানাগরিককে ডেকে পাঠিয়েছিল ই়ডি। তিনি না আসায় ২৫ জুলাই তাঁকে আবার হাজির হতে বলা হয়েছে।
সোমবার সকালে শোভনবাবুর প্রতিনিধি আইনজীবী মানসী নায়ার সল্টলেকে ইডি অফিসারদের কাছে শোভনবাবুর বার্তা পৌঁছে দেন। সূত্রের খবর, ইডি অফিসারদের সামনে না-আসার কারণ হিসেবে শোভনবাবু উত্তর ২৪ পরগনায় সাম্প্রতিক অশান্তির কথা উল্লেখ করেছেন। চিঠিতে তিনি জানিয়েছেন, রাজ্যের আইন শৃঙ্খলার পরিস্থিতি ভালো নয়। তাই এখন তিনি আসতে পারছেন না।
কলকাতার মেয়র কেন উত্তর ২৪ পরগনার অশান্তির জন্য ঘণ্টা কয়েকের জন্য ইডি দফতরে আসতে পারবেন না, সে প্রশ্ন উঠেছে।
শোভনবাবু বলেন, ‘‘ওই জায়গা গুলো দক্ষিণ ২৪ পরগনা লাগোয়া। দলের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার সভাপতি হিসেবে সব সময় সতর্ক থাকতে হচ্ছে। তার জন্যই আপাতত কয়েক দিন সময় চাওয়া হয়েছে।’’ আরও ‘একাধিক বিষয়’ নিয়ে তিনি ব্যস্ত বলেও ইডিকে জানানো হয়েছে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘একটা তদন্ত প্রক্রিয়া চলছে। আমাকে হাজিরাও দিতে হবে।’’ এ দিন পুরভবনে অনেক ফাইলপত্রে সই করেন তিনি।
এ দিনই সাংসদ সুলতান আহমেদকে চার ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করেন সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা। সপ্তাহ খানেক আগে সুলতানকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। ওই সময় সুলতানকে কিছু নথি জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তদন্তকারীদের কথায়, নারদ স্টিং অপারেশনে ছদ্মবেশী সাংবাদিক ম্যাথু স্যামুয়েলের কাছ থেকে তিন দফায় সুলতান ১৫ লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন। ওই টাকা তিনি কোন খাতে খরচ করেছিলেন, তা সুলতানের কাছে জানতে চাওয়া হয়। গত লোকসভা নির্বাচনে তাঁর সমস্ত খরচের হিসেব দাখিল করার জন্যও নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সিবিআই সূত্রে খবর— নির্বাচনের হিসেব-নিকেশের বেশ কিছু নথি জমা দিয়েছেন সাংসদ। সেগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের সময়ই নারদ স্টিং অপারেশনটি করা হয়েছিল। ওই সময়েই উলুবেড়িয়া কেন্দ্রের প্রার্থী সুলতান কলকাতায় নিজের অফিসে বসে ম্যাথুর কাছ থেকে টাকা নিয়েছিলেন বলে নারদের ফুটেজে দেখা গিয়েছে। তদন্তকারীদের অভিযোগ, নির্বাচনের পর নানা সরকারি সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েই ওই টাকা নিয়েছিলেন সুলতান।