ফাইল চিত্র।
দিনে ৫০০ উড়ানের মাইলফলক ছুঁল কলকাতা। গত ১২ অক্টোবর সারা দিনে কলকাতা থেকে ৫১০টি উড়ান ওঠানামা করেছে।
যদিও সংখ্যার নিরিখে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে দিল্লি ও মুম্বই। দিল্লিতে এখন দিনে গড়ে ৯৫০টি উড়ান ওঠানামা করে। মুম্বইয়ে প্রায় ৮৪০টি। সম্প্রতি এক দিন দিল্লিতে উড়ান সংখ্যা এক হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছিল। বেঙ্গালুরুর দৈনিক উড়ান সংখ্যাও কলকাতার থেকে বেশি, গড়ে দিনে ৬১৪।
কলকাতার বদনাম অনেক দিনের। অভিযোগ, এখানে পর্যাপ্ত শিল্প গড়ে না ওঠার কারণে তুলনায় উড়ান সংখ্যাও কম। বিশেষ করে দূরপাল্লার আন্তর্জাতিক উড়ান প্রায় নেই বললেই চলে। এক সময়ে কলকাতা থেকে সরাসরি লন্ডনের উড়ান চালিয়েছে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ, এয়ার ইন্ডিয়া। কলকাতা থেকে সরাসরি জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্টের উড়ান ছিল জার্মানির সংস্থা লুফৎহানসার। কেএলএম-এর উড়ান ছিল আমস্টারডাম-এর। সবাই উড়ান গুটিয়ে নিয়ে চলে গিয়েছে।
এই সব উড়ানের সাধারণ শ্রেণিতে নিয়মিত যাত্রী হতো। উড়ান সংস্থাগুলির অভিযোগ ছিল, বড় শিল্পের অভাবে কলকাতা থেকে বিজনেস-সহ অন্য উচ্চ
শ্রেণির যাত্রী নেই। আর এই বিজনেস বা প্রথম শ্রেণির যাত্রীদের থেকেই মূলত লক্ষ্মীলাভ হয় উড়ান সংস্থার।
সেই কলকাতা থেকে আবার বাড়তে শুরু করেছে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক উড়ান। কলকাতা বিমানবন্দরের অধিকর্তা কৌশিক ভট্টাচার্যের কথায়, ‘‘সুখের খবর, কলকাতা এখন দক্ষিণ পশ্চিম এশিয়ার বিভিন্ন দেশে যাওয়ার একটি কেন্দ্রস্থল হিসেবে গুরুত্ব পেতে শুরু করেছে। সেই কারণেই উড়ান সংখ্যা বাড়ছে। কলকাতা থেকে নতুন নতুন আন্তর্জাতিক শহরে উড়ান চালু হচ্ছে।’’
উদাহরণ দিয়ে কৌশিকবাবু জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই ইন্ডিগো কলকাতা থেকে হ্যানয়, ইয়াঙ্গন, হংকং-এর উড়ান চালু করেছে। ১৭ অক্টোবর থেকে হো-চি-মিন সিটির উড়ান চালু হবে। গো এয়ার সিঙ্গাপুরের উড়ান শুরু করছে। উড়ান বাড়াচ্ছে স্পাইসজেট, এয়ার ইন্ডিয়া, বিস্তারা, এয়ার এশিয়া ইন্ডিয়াও।
কলকাতা বিমানবন্দর সূত্রের খবর, পুজো শুরুর আগেই সেপ্টেম্বর ২০ থেকে ৩০-এর মধ্যে কলকাতা থেকে দিনে গড়ে ৪৫০টি উড়ান যাতায়াত করছিল। অক্টোবরের গোড়ায় সেটি বেড়ে ৪৯০-এ পৌঁছে যায়। ৫০০-র মাইল ফলক প্রথম ছোঁয় ৪ এবং ৫ অক্টোবর। তার পরের তিন দিন আবার নেমে আসে উড়ান সংখ্যা। ১০ অক্টোবরের পরে আবার ৫০০ ছুঁয়ে যায় উড়ান সংখ্যা। ১২ অক্টোবরে কলকাতার ইতিহাসে সর্বাধিক উড়ান যাতায়াত করে।
কৌশিকবাবু জানিয়েছেন, যে সংস্থাগুলি উড়ান বাড়াচ্ছে, তারা সবাই বড়জোর চার ঘণ্টার দূরের শহরে উড়ান চালাচ্ছে। কলকাতা থেকে সরাসরি ইউরোপ যাওয়ার মতো বিমান তাদের কাছে নেই। ফলে, ইউরোপের সরাসরি উড়ানের জন্য আরও অপেক্ষা করতে হবে বলে মনে করছেন বিমানবন্দরের কর্তারা।