উৎসবের আমেজে সেজে উঠেছে কলকাতা। ছবি: টুইটার
বড়দিনের আগে শহর জুড়ে উৎসবের আমেজ। সেজে উঠেছে পার্ক স্ট্রিট চত্বর। দার্জিলিঙের ম্যাল থেকে কলকাতার ভিক্টোরিয়া— বেড়ানোর মজা আরও সতেজ হয়ে উঠছে কনকনে ঠান্ডায়। গত কয়েক দিনের তুলনায় কলকাতায় কিছুটা পারদ চড়লেও, আনন্দ মাটি হওয়ার কোনও কারণ নেই বলে জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। বুধবার শহরে হাড়কাঁপানো ঠান্ডা না পড়লেও, শীতের দাপট থাকবে।
পৌষের শুরুতে এক ধাক্কায় পারদ পতনের জেরে কনকনে ঠান্ডায় কাঁপছিল পাহাড় থেকে সমতল। কলকাতায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা পৌঁছে গিয়েছিল ১১ ডিগ্রির ঘরে। তার পর গত কয়েক দিনে অল্প অল্প করে ফের কিছুটা পারদ চড়তে শুরু করেছে। মঙ্গলবার কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৩.৫ (-৩) ডিগ্রি সেলসিয়াস, সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৪.২ ডিগ্রি। দার্জিলিঙের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কমে দাঁড়িয়েছে ৩.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজ্যের অন্য জেলাগুলিতেও তাপমাত্রা নিম্নগামী।
কুয়াশা এবং মেঘের কারণে উত্তুরে হাওয়া বাধা পাচ্ছে। তার জেরে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলোয় তাপমাত্রা ফের কিছুটা বেড়েছে। উত্তরবঙ্গের জেলাগুলো অবশ্য কনকনে ঠান্ডায় কাঁপছে। কুয়াশার কারণে বিমান ওঠানামায় অসুবিধা হচ্ছে। ট্রেনও চলছে কিছুটা ধীর গতিতে। এ দিন দমদম বিমানবন্দর থেকে বেশ কয়েকটি বিমান দেরিতে ছেড়েছে। তার জেরে বিমানের সময়সূচী পরিবর্তন করতে হয়। বাতিলও হয়েছে কয়েকটি।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে রাজ্য উত্তাল হয়ে ওঠায় পর্যটকেরা কিছুটা দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন। দিঘাতে চেনা ভিড়ের ছবি ধরা পড়েনি ডিসেম্বর মাসেও। তবে আস্তে আস্তে ভয় কাটছে। দার্জিলিং, কালিম্পং, সান্দাকফু থেকে শুরু করে মন্দারমণি, দিঘা, সুন্দরবনে ভিড় বাড়ছে। কলকাতার পার্ক স্টিট, ইকো পার্ক, ভিক্টোরিয়াতেও দেশি-বিদেশি পর্যটকেরা ভিড় করছেন। প্রতি বছরই পার্ক স্ট্রিটে রাজ্য সরকারের উদ্যোগে নানা ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। গোটা কলকাতা যেন নতুন করে সেজে ওঠে। উৎসবের মরসুমে যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সে দিকে কড়া নজর রয়েছে কলকাতা পুলিশের।
লালবাজার সূত্রে খবর, সেন্ট পলস ক্যাথিড্রাল-সহ ৫০টি চার্চে বিশেষ নজরদারির বন্দোবস্ত করা হয়েছে। ২৪ তারখি মধ্য রাত থেকে ২৫ ডিসেম্বর— পার্ক স্ট্রিটে বেশি ভিড় উপচে পড়ে। ওই সময় পরিস্থিতি অনুযায়ী যান চলাচলও বন্ধ করতে হয় পুলিশকে। এ বারও একই নিয়ম থাকছে।
পার্ক স্ট্রিট এলাকাকে চারটি সেক্টরে ভাগ করা হয়েছে। প্রতি সেক্টরে ২ জন ডিসি, ২ জন এসি পদমর্যাদার পুলিশ অফিসারের নেতৃত্বে আলাদা দল। দু’টি কুইক রেসপন্স টিম-সহ জলকামানেরও ব্যবস্থা থাকছে। অতিরিক্ত ২০টি সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। মোটরসাইকেল পেট্রোলিংয়ের পাশাপাশি সাদা পোশাকে পুলিশের নজরদারি চলবে।
পুলিশ অ্যাসিস্ট্যান্টস বুথ করা হয়েছে ১৫টি। ৮টি অ্যাম্বুল্যান্স থাকছে ওই এলাকায়। কারও কোনও অসুবিধা হলে পুলিশ বুথে অভিযোগ জানানো যাবে। শহর জুড়ে অতিরিক্ত পাঁচ হাজার পুলিশকর্মী মোতায়েন থাকবে।