Kolkata Metro

হাওড়া ও শিয়ালদহ লাইনে দেড় মাস বন্ধ থাকবে মেট্রো চলাচল? প্রস্তাব কর্তৃপক্ষের কাছে, চলছে ভাবনাচিন্তাও

শিয়ালদহ থেকে সল্টলেক সেক্টর ফাইভ (গ্রিন লাইন ১) এবং হাওড়া ময়দান থেকে এসপ্ল্যানেডে (গ্রিন লাইন ২) দুই পৃথক সিগন্যালিং ব্যবস্থার মাধ্যমে মেট্রো চলাচল করছে। কিন্তু কেএমআরসিএল চায়, গোটা গ্রিন লাইনে একটিই সিগন্যাল ব্যবস্থা তৈরি করতে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০২৫ ১৭:৪০
Share:

এসপ্ল্যানেড থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত চলছে মেট্রোর কাজ। —ফাইল চিত্র।

হাওড়া ময়দান থেকে এসপ্ল্যানেড এবং শিয়ালদহ থেকে সল্টলেক সেক্টর ফাইভ পর্যন্ত মেট্রো চলছে। এসপ্ল্যানেড থেকে শিয়ালদহ সুড়ঙ্গপথে জুড়লেই হাওড়া ময়দান থেকে সোজা পৌঁছে যাওয়া যাবে সেক্টর ফাইভে। মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, এসপ্ল্যানেড থেকে শিয়ালদহ সুড়ঙ্গপথে জোড়ার কাজ শেষ। লাইন পাতার কাজও শেষ পর্যায়ে। এ বার গ্রিন লাইনে (হাওড়া ময়দান থেকে সেক্টর ফাইভ) শুরু হবে সিগন্যালিংয়ের কাজ। সেই কাজের জন্য দেড় মাস হাওড়া ময়দান থেকে এসপ্ল্যানেড এবং শিয়ালদহ থেকে সল্টলেক সেক্টর ফাইভ পর্যন্ত মেট্রো চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ রাখার প্রস্তাব দিল কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশন (কেএমআরসিএল)। তবে এ ব্যাপারে এখনই মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত নেননি।

Advertisement

নতুন মেট্রোপথ তৈরি দায়িত্বে রয়েছে কেএমআরসিএল। বর্তমানে শিয়ালদহ থেকে সল্টলেক সেক্টর ফাইভ (গ্রিন লাইন ১) এবং হাওড়া ময়দান থেকে এসপ্ল্যানেডে (গ্রিন লাইন ২) দুই পৃথক সিগন্যালিং ব্যবস্থার মাধ্যমে মেট্রো চলাচল করছে। কিন্তু কেএমআরসিএল চায়, গোটা গ্রিন লাইনে একটিই সিগন্যাল ব্যবস্থা তৈরি করতে। সেই কাজ করতে গেলে গ্রিন লাইন ১ এবং গ্রিন লাইন ২-এ মেট্রো চলাচল বন্ধ রাখতে হবে। কেএমআরসিএল প্রস্তাব দিয়েছে, আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৪ মার্চ পর্যন্ত এই দুই শাখায় সম্পূর্ণ বন্ধ করা হোক মেট্রো চলাচল।

ইতিমধ্যেই কেএমআরসিএল-এর প্রস্তাব মেনে ১২ ফেব্রুয়ারি এবং ১৮ ফেব্রুয়ারি— দুই রবিবার হাওড়া ময়দান থেকে এসপ্ল্যানেডের মধ্যে মেট্রো চলাচল বন্ধ রাখছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। ১২ ফেব্রুয়ারি থেকেই শুরু হচ্ছে গ্রিন লাইনের সিগন্যালিংয়ের কাজ। তবে দেড় মাস এই পথে মেট্রো চলাচল বন্ধ রাখার প্রস্তাব নিয়ে এখনই কোনও সিদ্ধান্ত নেননি মেট্রো কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

হাওড়া ময়দান থেকে এসপ্ল্যানেড হোক বা শিয়ালদহ থেকে সেক্টর ফাইভ— প্রতি দিন এই দুই শাখায় প্রচুর মানুষ যাতায়াত করেন। অনেকেই সড়কপথ ছেড়ে মেট্রোপথে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছেন। এক লক্ষের বেশি মানুষ প্রতি দিন এই দুই লাইনে যাতায়াত করেন। তাই হুট করে টানা দেড় মাস মেট্রো চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারছেন না মেট্রো কর্তৃপক্ষ। এক মেট্রো আধিকারিকের কথায়, ‘‘আমাদের কাছে প্রস্তাব এসেছে। আমরা বিষয়টা নিয়ে ভাবনাচিন্তা করে দেখছি।’’ পাশাপাশি তিনি আরও জানান, দেড় মাস না হলেও কাজের গুরুত্ব বিচার করে কিছু দিন হয়তো এই প্রস্তাবে সায় দেওয়া হতে পারে।

হাওড়া ময়দান থেকে সেক্টর ফাইভ পর্যন্ত মেট্রো পরিষেবায় যে অংশ মাটির নীচ দিয়ে যাবে, সেখানে দু’টি সুড়ঙ্গ রয়েছে। তার মধ্যে পূর্বমুখী অর্থাৎ শিয়ালদহমুখী সুড়ঙ্গের কাজ অনেক দিন আগেই শেষ হয়েছে। লাইন পাতাও শেষ। ওই সুড়ঙ্গ দিয়ে মেট্রোর খালি রেক প্রায়ই যাতায়াত করে। কিন্তু বিপত্তি ঘটেছে পশ্চিমমুখী সুড়ঙ্গ খোঁড়ার সময়। শিয়ালদহ থেকে এসপ্ল্যানেড পর্যন্ত ওই সুড়ঙ্গ কাটার সময় সমস্যা হয় বৌবাজারের কাছে। ২০১৯ সালে অগস্ট মাসে সুড়ঙ্গ কাটার যন্ত্রের মাধ্যমে মাটি কাটার সময় ধস নামে বৌবাজার এলাকায়। তড়িঘড়ি বন্ধ করতে হয় কাজ। নির্মীয়মাণ ওই সুড়ঙ্গের দৈর্ঘ্য ৪০ মিটার। ২০২২ সালের মে এবং অক্টোবরে ওই অংশ কাজ করার সময় দফায় দফায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। জল ঢুকে পড়ে সুড়ঙ্গের মধ্যে। বার বার বিপত্তির কারণে কাজ বন্ধ হওয়ায় এত দিনেও শিয়ালদহ এবং এসপ্ল্যানেডের মধ্যে পরিষেবা চালু সম্ভব হয়নি। তবে খুব শীঘ্রই শিয়ালদহ এবং এসপ্ল্যানেডের মধ্যে পরিষেবা শুরু হয়ে যাবে, আশাবাদী মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement