বিশেষজ্ঞ সংস্থাকে দিয়ে কলকাতার সেতুগুলির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানোর কাজ শেষ হয়েছে। ওই সংস্থার দাওয়াই মেনে বেশ কয়েকটি উড়ালপুল ও সেতুর স্বাস্থ্যরক্ষায় ‘ওষুধ, অস্ত্রোপচারের’ ব্যবস্থাও করেছে কেএমডিএ। সেই পথেই এ বার পূর্ত ও পূর্ত (সড়ক) বিভাগের অধীন প্রায় ৫০০টি সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার জন্য তিনটি উপদেষ্টা সংস্থাকে নিয়োগ করেছে নবান্ন। ওই তিন সংস্থা আগামী তিন মাসের মধ্যে সেতুগুলির রোগ নির্ণয় করে প্রতিষেধক’ বাতলে দিলে পূর্ত দফতর যুদ্ধকালীন তৎপরতায় সেগুলোর মেরামত শুরু করে দেবে।
‘‘মাঝেরহাটে সেতু ভেঙে পড়ার পরে রাজ্যের বিভিন্ন সেতু সারানোর বিষয়টি আমাদের অগ্রাধিকারের তালিকায় আছে। সেই কাজ দ্রুত শেষ করা হবে। উপদেষ্টা সংস্থার নির্দেশ অনুযায়ী সেতুর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব এখন ইঞ্জিনিয়ারদের। আশা করি, তাঁরা সেই কাজ করছেন,’’ বলেন পূর্তমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস।
মাঝেরহাট কাণ্ডের পরে পূর্তসচিব অর্ণব রায় তিন মাস অন্তর সেতুর রক্ষণাবেক্ষণ যাচাই করার জন্য নির্দিষ্ট পোর্টাল তৈরি করে দিয়েছিলেন। পূর্ত ইঞ্জিনিয়ারদের সেই পোর্টালে নিয়মিত সেতু ধরে ধরে রিপোর্ট পেশ করতে হয়। ফেব্রুয়ারি-মার্চের সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, পূর্ত দফতরের অধীনে থাকা ১৭৪৯টি সেতুর মধ্যে ৯৫টির অবস্থা অত্যন্ত বিপজ্জনক। ২৯৮টি সেতু যে-কোনও সময়েই ভেঙে পড়তে পারে। আর ৪৭১ সেতুর হাল খারাপ। পূর্ত ইঞ্জিনিয়ারদের বক্তব্য, প্রতিটি সেতু অবিলম্বে সারানো দরকার। নইলে মাঝেরহাটের মতো ঘটনা রাজ্যের অন্য কোথাও ঘটে যেতে পারে।
তার পরেই রাজ্যের উত্তর, দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলের জন্য তিনটি উপদেষ্টা সংস্থা নিয়োগ করেছে পূর্ত দফতর। দক্ষিণের জেলাগুলিতে ৩২টি এবং উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলে অন্তত ৪৫০টি সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছে ওই সব সংস্থা। কলকাতা ও আশপাশের জেলাগুলিতে ইতিমধ্যেই ছ’টি সেতুর স্বাস্থ্যপরীক্ষা হয়েছে। মাস তিনেকের মধ্যে সেই রিপোর্ট এলে দ্রুত সারাই শুরু হবে বলে দফতর সূত্রের খবর।
পূর্তকর্তারা জানাচ্ছেন, পূর্ত ও পূর্ত সড়ক বিভাগের অধীনেই রয়েছে ১৭৪৯টি সেতু। তা ছাড়াও সেচ দফতরের কয়েকশো সেতুর ভার চেপেছে পূর্ত দফতরের ঘাড়ে। সেচ দফতরের সেতুগুলির হাল আরও খারাপ বলে জানাচ্ছেন ইঞ্জিনিয়ারেরা। সেগুলির স্বাস্থ্যপরীক্ষা কবে হবে, সারানোর কাজই বা শুরু হবে কবে, তা এখনও ঠিক হয়নি। আপাতত নিজেদের প্রায় ৫০০ সেতুর হাল ফেরানোই চ্যালেঞ্জ পূর্ত দফতরের।