রবিবার ভোটের দিন মহারাণী ইন্দিরা দেবী রোডের অফিসে রত্না চট্টোপাধ্যায় তাঁর অনুগামীদের সঙ্গে। নিজস্ব চিত্র।
যে ওয়ার্ড থেকে জিতে মেয়র হয়েছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়, সেই ওয়ার্ডই তাঁকে ভুলে গিয়েছে। এমনটাই বললেন তাঁর স্ত্রী তথা ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী রত্না চট্টোপাধ্যায়।
গত বিধানসভা নির্বাচনে বেহালা পূর্ব থেকে জিতেছিলেন শোভনের স্ত্রী। কিন্তু পুরভোটে তিনি যে ওয়ার্ড থেকে দাঁড়িয়েছেন, সেই ১৩১ নম্বর ওয়ার্ড পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বেহালা পশ্চিম কেন্দ্রের মধ্যে পড়ে। রবিবার সকাল থেকেই বুথে বুথে ঘুরে বেড়িয়েছেন রত্না। দুপুরে মহারানি ইন্দিরা দেবী রোডের বাড়িতে এসে ভোটের হার ও কর্মীদের খাওয়াদাওয়া-সহ ভোট পরিচালনার ব্যবস্থা প্রসঙ্গে খোঁজখবর নেন বেহালা পূর্বের বিধায়ক। শোভনের ছেড়ে যাওয়া ওয়ার্ডে প্রার্থী হয়ে কি তাঁকে স্বামীর সঙ্গে ছায়াযুদ্ধ করতে হচ্ছে? রত্নার জবাব, ‘‘শোভনকে ভুলে গিয়েছে ১৩১ নম্বর ওয়ার্ড।’’
এই ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর শোভন। কিন্তু রত্নার অভিযোগ, ‘‘কাউন্সিলর হয়েও গত সাড়ে তিন বছর এলাকায় আসেননি শোভনবাবু। এলাকার যাবতীয় দায়িত্ব আমাকেই সামলাতে হয়েছে। দল এই ওয়ার্ডে আমাকে যোগ্য মনে করেছে বলেই আমাকে প্রার্থী করেছে। আমার উপর দলের আস্থারাখার মর্যাদা দেওয়ার চেষ্টা করব। আর মানুষ ভোট দিয়ে সমর্থন করলে তাঁদের পাশেই থাকব।’’ তাঁর আরও সংযোজন, ‘‘২০১০ সালে এই ওয়ার্ড থেকে জিতে মেয়র হয়েছিলেন শোভনবাবু। কিন্তু এই ওয়ার্ডের মানুষের আস্থার দাম দেননি তিনি। তাই ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডের মানুষ তাঁকে ভুলে গিয়েছে।’’
১৯৮৫ সালে শোভন তাঁর কাউন্সিলর জীবন শুরু করেন ১৩২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে। পরপর পাঁচবার ওই ওয়ার্ড থেকে জেতেন তিনি।কিন্তু ওই ওয়ার্ড সংরক্ষণের আওতায় পড়ে যাওয়ায় ২০১০ সালে তাঁকে প্রার্থী হতে হয় ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডে। ওই ওয়ার্ডেই শোভনের বাড়ি। যদিও সেই বাড়িতে বর্তমানে থাকেন না তিনি। ১৩১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে পরপর দু’বার জিতে কলকাতার মহানাগরিক হন তিনি। রত্নার দাবি, ‘‘এ বারের ভোটে সেই ওয়ার্ডের কোথাও নেই শোভনবাবুর নামগন্ধ।’’
২০১৮ সালের নভেম্বরে বেহালা পর্ণশ্রী এলাকার মহারানি ইন্দিরা দেবী রোডের বাড়ি ছেড়ে শোভন উঠেছেন গোলপার্কের বহুতলে। পর্ণশ্রীর এই বাড়ি বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিক্রিও করে দিয়েছেন তিনি। যা নিয়ে দড়ি টানাটানি রত্না-শোভনের মধ্যে। সেই বাড়ির কাছের অফিসে বসেই রত্না বললেন,‘‘১৩১ নম্বর ওয়ার্ডের মানুষের কাছে নিষ্প্রয়োজনীয় হয়ে গিয়েছেন শোভনবাবু।’’