কলকাতার রাস্তায় সুলভ শৌচালয় নির্মাণ গতি পেয়েছিল প্রয়াত সুব্রত মুখোপাধ্যায় মেয়র থাকাকালীন। ফাইল চিত্র
কলকাতার রাস্তাঘাটে শৌচালয়ের প্রয়োজনীয়তা, বিশেষত মহিলাদের এ সংক্রান্ত অসুবিধার কথা প্রথম উপলব্ধি করেছিলেন মহানাগরিক সুব্রত মুখোপাধ্যায়। ২০০০ সালের এক রাতে গাড়ি চালিয়ে সস্ত্রীক বাড়ি ফেরার পথে আলিপুরের রাস্তায় এক পথচারীকে জলবিয়োগ করতে দেখে গাড়ি থামিয়ে চালকের আসন ছেড়ে নেমে গিয়ে রাস্তায় পড়ে থাকা নিমডাল দিয়ে কয়েক ঘা দিয়েছিলেন। পথচারী চম্পট দিলে সম্বিত ফিরেছিল মহানাগরিকের। উপলব্ধি করেছিলেন, শহরকে পরিচ্ছন্ন রাখতে রাস্তাঘাটে শৌচালয় তৈরির প্রয়োজন রয়েছে। তাঁর আমলে ২,১০০-২,২০০টি সুলভ শৌচালয় নির্মিত হয়েছিল কলকাতায়। যেখানে নামমাত্র দক্ষিণা দিয়ে প্রাকৃতিক প্রয়োজন মেটাতে পারেন পথচলতি মানুষ। সদ্যই প্রয়াত হয়েছেন সুব্রত। কিন্তু এ বার তাঁর সেই ভাবনা নতুন পর্যায়ে নিয়ে গেল তৃণমূল।
২০২১ সালের পুরভোটের প্রাক্কালে প্রকাশিত ‘কলকাতার ১০ দিগন্ত’ নামক ইস্তেহারে এ বার প্রত্যেক ওয়ার্ডে মহিলাদের জন্য শৌচালয় তৈরির কথা বলা হয়েছে। নতুন এই ইস্তেহারে ‘নাগরিক বান্ধব কলকাতা’ গড়ার অঙ্গীকার করেছে তৃণমূল। সেই অঙ্গীকারে রয়েছে নারীদের জন্য বিশেষ শৌচালয়ের কথা। সেই শৌচালয়গুলিতে থাকবে একাধিক নতুন বিষয়। মহিলাদের সুবিধার্থে যেমন থাকবে পৃথক স্নানের জায়গা, তেমনই নারীদের বিশেষ সময়ের জন্য থাকবে স্যানিটারি ন্যাপকিনের সুবিধাও। সঙ্গে ওই শৌচালয়েই মহিলারা যাতে নিজের শিশুদের নিরাপদে রেখে প্রয়োজনীয় কাজ সারতে পারেন, সেই জন্য থাকবে ভিন্ন কক্ষ। এই ধরনের মহিলা শৌচালয় প্রত্যেক ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের যে বিশেষ ভুমিকা থাকবে, দক্ষিণ কলকাতার মহারাষ্ট্র নিবাস হলে আয়োজিত সভায় তাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতারা।
ইস্তেহার প্রকাশের পর তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী বলেন, ‘‘মহিলা ক্ষমতায়নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার সব সময় কাজ করে এসেছেন। কিন্তু এ বারের পুরভোটে কলকাতাকে নতুন করে সাজিয়ে এমন কিছু করতে হবে যাতে মহিলাদের সুযোগ সুবিধা আরও বেশি করে দেওয়া যায়। তাই আমরা আরও বেশি করে মহিলা শৌচালয় গড়ার পক্ষে। যাতে রাস্তাঘাটে বেরিয়ে মহিলাদের কোনও রকম বিরূপ পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে না হয়।’’ ২০০০ সালে যখন প্রথম 'ছোট লালবাড়ি' দখল করে তৃণমূল, সে বার মেয়রের কুর্সিতে বসে শহর কলকাতা পরিচ্ছন্ন করতে সুলভ শৌচালয় গড়ার কাজ শুরু করেছিলেন প্রয়াত মেয়র সুব্রত। তৃণমূল যেন এ বারের পুরভোটে তাঁর স্বপ্নকেই সফল করে তোলার প্রতিশ্রুতিই দিল মহানগরীকে।