কংগ্রেসের হাত ছাড়তে চায় সিপিএমের একাংশ। প্রতীকী ছবি
কলকাতা ‘পুরভোটের সাফল্যে’ উজ্জ্বীবিত আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। তাই আর কংগ্রেসের সঙ্গে জোটে না গিয়ে একক ভাবেই আগামী সব ভোটে লড়তে চায় সিপিএম। মঙ্গলবার কলকাতা পুরভোটের ফল প্রকাশের পর দেখা যায়, ৬৬টি আসনে দ্বিতীয় হয়েছেন বামফ্রন্টের প্রার্থীরা। ৫২টি আসনে দ্বিতীয় হয়েছে বিজেপি। এবং ১৬টি আসনে দ্বিতীয় হয়েছে কংগ্রেস। যদিও ফলের নিরিখে বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস উভয়ের থেকেই একটি আসন বেশি পেয়েছে বিজেপি। তা সত্ত্বেও, মাত্র সাত মাস আগে বিধানসভা নির্বাচনে বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস জোট করে শুধুমাত্র প্রথম হয়েছিল একটি ওয়ার্ডে। বিধানসভা নির্বাচনে চৌরঙ্গি কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী সন্তোষ পাঠক নিজের ৪৫ নম্বর ওয়ার্ড থেকে শুধুমাত্র এক হাজারের কিছু বেশি ভোটে এগিয়েছিলেন। এ বার বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই জোট হয়নি বামফ্রন্ট ও কংগ্রেসের।
মাত্র সাত মাসেই কলকাতার ভোটারদের এমন মন বদল দেখে আর আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের একাংশ ‘একলা চলো’র পক্ষপাতী। কারণ, ২০১৬ সালে জোট নিয়ে আলোচনার সময় থেকেই কংগ্রেসের ‘নানা নেতার নানা মত’ বার বার বিড়ম্বনার কারণ হয়েছিল রাজ্য সিপিএম নেতৃত্বে। তাই মানুষ ফের বামপন্থীদের উপর ভোটারদের একাংশের আস্থা ফিরতেই সেই পরিস্থিতির বদল চায় মুজফ্ফর আহমেদ ভবনের একাংশ। কারণ, কলকাতার পুরসভার ১৪৪টি ওয়ার্ড নিয়ে তৈরি হয়েছে ১৭টি বিধানসভা। সেই বিধানসভার মধ্যেও ফলাফলের নিরিখে সাতটি আসনে দ্বিতীয় স্থান পেয়েছে বামফ্রন্টই। যাদবপুর, টালিগঞ্জ, বেহালা পূর্ব ও পশ্চিম, কাশীপুর-বেলগাছিয়া ও কসবায় বহু পিছিয়ে হলেও দ্বিতীয় তাঁরাই।
আর কংগ্রেস চারটি বিধানসভায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। বেলেঘাটা, চৌরঙ্গি, বালিগঞ্জ ও মেটিয়াবুরুজ বিধানসভায় দ্বিতীয় তাঁরা। বিজেপি দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে মানিকতলা, জোঁড়াসাঁকো, এন্টালি, ভবানীপুর, রাসবিহারী ও কলকাতা বন্দরে।
পরিসংখ্যান দেখে সিপিএমের এক নেতার বক্তব্য, ‘‘কংগ্রেস চারটি আসনে দ্বিতীয় হয়েছে ঠিকই, কিন্তু তাঁদের সাংগঠনিক জোর কিন্তু সেভাবে নেই। তা ছাড়া জোট নিয়ে কংগ্রেসের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। আর কলকাতার ভোটারদের মন যখন একবার একক ভাবে লড়াই করে পেতে শুরু করেছি, তখন একক ভাবে পথ চলাই ভাল।’’
প্রবীণ এক কংগ্রেস নেতার কথায়, ‘‘সিপিএম যদি আলাদা ভাবে ভোটে লড়তে চায়, তাহলে তাঁরা লড়তেই পারে। তবে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে দু’পক্ষই কিন্তু একযোগে আন্দোলন করতে হবে।’’