বিধাননগরের গোয়েন্দা প্রধান বিশ্বজিৎ ঘোষ জানিয়েছেন, অপহরণের পর পরিবারকে এক বার ফোন এবং তিনবার হোয়াটসঅ্যাপ করা হয়েছিল।
বাগুইআটির নিখোঁজ দুই ছাত্রকে যে খুন করা হয়েছে, মঙ্গলবার দুপুরেই তা স্পষ্ট করে পুলিশ। এমনকি, বসিরহাটের মর্গে তাদের দেহ ১৩ দিন ধরে পড়েছিল, সে কথাও জানানো হয়। যদিও তার কয়েকঘণ্টার আগেই এক ছাত্রের পরিবারের কাছে হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা এসেছিল, দেহ পাওয়া যাবে বৃহস্পতিবার।
বিধাননগরের গোয়েন্দা প্রধান বিশ্বজিৎ ঘোষ জানিয়েছেন, অপহরণের পর পরিবারকে এক বার ফোন এবং তিনবার হোয়াটসঅ্যাপ করা হয়েছিল। হোয়াটসঅ্যাপ বার্তাতেই মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছিল। কখনও এক লক্ষ টাকা, কখনও এক কোটি টাকা দাবি করা হয়। মঙ্গলবার দুই ছাত্রের দেহ শনাক্ত করা হয় বসিরহাটের মর্গে। পরিবারের অভিযোগ, সেই খবর প্রকাশ্যে আসার আগে মঙ্গলবার পর্যন্ত দুপুর ৩টে ১২ মিনিটে একটি নম্বর থেকে হুমকি দিয়ে তাদের হোয়াটসঅ্যাপ করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে—
‘শোন তোদের টাকা দিতে হবে না
তোরা পারবিও না টাকা দিতে
তোর ছেলের ডেড বডি বৃহস্পতিবার পেয়ে যাবি
আমাকে আর কল করতে হবে
এসএমএস করতে হবে
তোরা ইয়ার্কি মারছিস তো
আর কথা বলার লাগবে না আর মেসেজ করা লাগবে না
বুধবার শেষ দিন অতনুর জীবনের
বৃহস্পতিবার আমি যে থানায় বলব, সেই থানায় চলে যাবি, দেহের সন্ধান দিয়ে দেবে’
২২ অগস্ট থেকে নিখোঁজ অতনু দে এবং অভিষেক নস্কর নামের দুই ছাত্র। দু’জনেই বাগুইআটির হিন্দু বিদ্যাপীঠের দশম শ্রেণির ছাত্র। সম্পর্কে তারা তুতো ভাই। ২৪ অগস্ট বাগুইআটি থানায় অভিযোগ করে পরিবার। তার পরেই তদন্ত শুরু করে পুলিশ।
পুলিশের দাবি, সোমবার গ্রেফতার করা হয় অভিজিৎ বসু নামে এক যুবককে। তাঁকে জেরা করেই পুলিশ জানতে পারে, ২২ অগস্টই চলন্ত গাড়িতে গলায় ফাঁস লাগিয়ে খুন করা হয় অপহৃত দুই ছাত্রকে। বাসন্তী হাইওয়ের উপরে দু’টি আলাদা জায়গায় দেহ দু’টি ফেলে দেওয়া হয়। সোমবার অভিজিৎকে জেরা করেই উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার সব থানা এলাকায় খোঁজ শুরু করে পুলিশ। বসিরহাট মর্গে তিনটি অশনাক্ত দেহ আছে বলে জানা যায়। পরে জানা যায় ওই দেহ বাগুইআটির নিখোঁজ ছাত্রের। ঘটনায় চার জন গ্রেফতার হলেও এখনও অধরা মূল অভিযুক্ত সত্যেন্দ্র চৌধুরী-সহ দু’জন। কেন খুন করা হয় দুই ছাত্রকে, এখনও স্পষ্ট নয়।