নিজস্ব চিত্র।
ধূমধাম করে চার হাত এক হল বসু বাড়িতে। আমন্ত্রিত ৯০০ জন। চার দিকে আলোর রোশনাই, নিমন্ত্রিতদের কলরবে মুখরিত গোটা এলাকা। বাড়ির বড় মেয়ের বিয়ে বলে কথা! বিয়ে দেখতে ভিড় জমিয়েছিলেন এলাকার মানুষও। এ পর্যন্ত আর দশটা বিয়ের মতো সাধারণ হলেও, সম্প্রীতির এক অনন্য ছবি ধরা পড়ল বিয়ের মণ্ডপে। উত্তর ২৪ পরগনার মছলন্দপুরের হিন্দু ধর্মাবলম্বী বসু বাড়িতে মুসলিম রীতি মেনে বিয়ে হল খালেদা ও সুজনের।
মুসলিম নিয়ম মেনে বিয়ের পর হিন্দু মতে মালাবদল হল উলুধ্বনির মাধ্যমে। আর এই দৃশ্যের সাক্ষী থেকে নবদম্পতিকে আশীর্বাদ করলেন কয়েক শো অতিথি।
পাত্রী খালেদা খাতুনের বয়স যখন সাত বছর, দুই ভাই, ছ’বোনের অভাবের সংসার। সবার ছোট খালেদা। স্বামীকে হারিয়ে সংসারের হাল ধরতে খালেদার মা মছলন্দপুরের রাজবল্লভপুর গ্রামের বসু বাড়িতে পরিচারিকার কাজ নেন। অভাবের কারণে খালেদাও পড়া ছেড়ে মায়ের সঙ্গেই কাজ শুরু করতে করেন। সেই থেকে এখনও বসু বাড়িতেই পরিচারিকার কাজ করেন মা, মেয়ে। তবে বসু পরিবার খালেদাকে পরিচারিকা বলতে নারাজ। খালেদাকে তাঁরা বসু পরিবারের বড় মেয়ে হিসাবেই দেখেন। প্রায় ১০ বছর ধরে এই বসু বাড়িতেই কাজ করছেন তিনি। এখন পরিবারের একজন অন্যতম সদস্য হয়ে উঠেছেন খালেদা। পাত্র বাদুড়িয়ার ঘোষপুরের সুজন মণ্ডল গাড়ি চালানোর কাজ করেন বসু বাড়িতেই।
মাঠের এক দিকে বসেছে বিয়ের আসর। অন্যদিকে খাওয়াদাওয়ার এলাহি আয়োজন। স্ন্যাক্স থেকে শুরু করে আইসক্রিম, ডাল ভাত থেকে শুরু করে দুই রকম মাছ, মাংস-সহ দুই রকম মিষ্টি পেটভরে খাওয়ানো হয় নিমন্ত্রিতদের।