প্রাক্তন মন্ত্রী ও সিপিএম নেতা কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়।—ফাইল চিত্র।
মাসখানেক নেপালে জেলবন্দি থাকার পর অবশেষে বাড়ি ফিরছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার রায়দিঘির বাসিন্দা ১৪ জন শ্রমিক।
প্রায় এক মাস আগে রায়দিঘির নালুয়া পঞ্চায়েতের হোগলডাঙার বাসিন্দা এক মহিলা-সহ ১৭ জন শ্রমিককে চুরির অভিযোগে আটক করেছিল নেপাল পুলিশ। গত ১২ বছর ধরে নেপালের গোর্খা জেলার পঞ্চতন্ত্র এলাকার একটি হ্যাচারিতে কাজ করতেন ওই শ্রমিকরা। সম্প্রতি মোবাইল চুরির অভিযোগে পঞ্চতন্ত্র থানার পুলিশ ওই ১৭ জনকে গ্রেফতার করে। পরে আদালতের নির্দেশে জেল হেফাজতে পাঠানো হয় তাঁদের।
শ্রমিকদের অভিযোগ, ইদের আগে ছুটি চেয়েছিলেন তাঁরা। তার পরেই তাঁদের নামে চুরির অভিযোগ দায়ের করা হয়। বিষয়টি জানিয়ে তাঁরা রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। কিন্তু কোনও পক্ষ থেকেই তাঁদের সাহায্য করা হয়নি বলে ওই শ্রমিকদের অভিযোগ। আদালতে তাঁরা কোনও আইনজীবীও দিতে পারেননি বলে শ্রমিকরা জানিয়েছেন।
এর মধ্যে বিষয়টি রায়দিঘির মানুষদের কাছ থেকে জানতে পারেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী ও সিপিএম নেতা কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়। নেপালের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মাধবকুমার নেপালের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তিনি। মাধবকুমারের তরফে কিছুটা আশ্বাস পাওয়ার পরই শনিবার নেপালে পৌঁছন কান্তিবাবু। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর সহায়তায় গোর্খা জেলার জেলাশাসক-সহ প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। আইনজীবীদের সঙ্গেও আলোচনা হয়। সোমবার গোর্খা জেলা বিচারকের কাছে ওই শ্রমিকদের জামিনের আবেদন করা হয়। বিচারক ১৪ জনের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেন। বাকি তিনজনের বিরুদ্ধে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
সোমবার কান্তিবাবুর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘আপাতত ১৪ জনের জরিমানার টাকার জন্য আমার পরিচিত ব্যক্তিদের অনুরোধ করেছি। ৭০ হাজার টাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। নেপালের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীও বিষয়টিতে সাহায্য করেছেন। বাকি তিনজনের জামিনের বিষয়েও তিনি উদ্যোগী হবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।’’
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘কান্তিবাবু আমার অনেক দিনের বন্ধু। গরিব মানুষের পাশে থাকার তাগিদে এত দূরে ছুটে এসেছেন। ওনাকে দেখে মনে হচ্ছে, উনিই ওই শ্রমিকদের পরিবারের অভিভাবক।’’ গোর্খা জেলা প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, ‘‘ওই হ্যাচারি মালিকের অভিযোগটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। শ্রমিকদের অভিযোগ, ইদের ছুটি চাওয়ার পরই মোবাইল চুরির অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ওই অভিযোগের সত্যতা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।’’