আয়োজনে পুরসভা, সংশয় কাটিয়ে শুরু ‘কল্পতরু মেলা’ 

বুধবার থেকে গ্যামন ব্রিজ লাগোয়া মাঠেই প্রতি বছরের মতো শুরু হচ্ছে মেলা। চলবে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০২০ ০৫:০১
Share:

মেলার মাঠে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। মঙ্গলবার। ছবি: বিকাশ মশান

রাজ্য সরকারের অন্য তিনটি সংস্থার সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে সংস্থাকে। তার ফলে আলাদা ভাবে ‘দুর্গাপুর প্রজেক্টস লিমিটেড’-এর (ডিপিএল) অস্তিত্ব কার্যত হারাতে বসেছে। এই পরিস্থিতিতে ‘দুর্গাপুর সাংস্কৃতিক মেলা ও কল্পতরু উৎসব’ কী ভাবে আয়োজন হবে, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছিল। তবে শেষমেশ রাজ্য বিদ্যুৎ দফতরের পরামর্শে ডিপিএলের তরফে মেলা পরিচালনার দায়িত্ব দুর্গাপুর পুরসভাকে দেওয়ায় সেই মেঘ কেটে গিয়েছে। আজ, বুধবার থেকে গ্যামন ব্রিজ লাগোয়া মাঠেই প্রতি বছরের মতো শুরু হচ্ছে মেলা। চলবে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত।

Advertisement

শহরের প্রবীণ বাসিন্দারা জানান, কল্পতরু উৎসব উপলক্ষে সাধুডাঙার কালিকানন্দ আশ্রমে অতীতে ১ জানুয়ারি থেকে ১০ দিন ধরে শ্রীরামকৃষ্ণ ও সারদাদেবীর পুজো হত। মেলাও বসত। সেই মেলায় ক্রমে ভিড় বাড়তে থাকায় এক সময়ে তা সরানো হয় গ্যামন ব্রিজ লাগোয়া মাঠে। বামফ্রন্টের আমলে মেলার চরিত্রে বদলায়। কৃষিমেলা, শিল্পমেলা, বইমেলা থেকে শুরু করে গৃহস্থালীর সামগ্রী, খাবারের দোকান— সবই যোগ হয় সেখানে। প্রতি সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আসরও বসে। ডিপিএলের পৃষ্ঠপোষকতায় এবং সিপিএম নেতাদের তদারকিতে চলা এই মেলার নতুন নাম হয় ‘দুর্গাপুর সাংস্কৃতিক মেলা’। রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে ২০১২ সালে ফের মেলার নামে যোগ হয় ‘কল্পতরু’ শব্দটি।

তবে গত কয়েক বছরে মেলা পরিচালনা ঘিরে শাসক দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসেছে। তার উপরে ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ডিপিএলকে তিন সংস্থার সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়ার পরে এ বার মেলা কী ভাবে পরিচালিত হবে, সে নিয়ে সংশয় দেখা দেয়। অভিযোগ, অতীতে মেলা পরিচালনার দায়িত্বে থাকা এক তৃণমূল নেতা ডিপিএলকে না জানিয়েই ডিসেম্বরের গোড়ায় একটি কমিটি গড়ে ফেলেন। ডিসেম্বরের মাঝামাঝি ডিপিএল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি রাজ্য বিদ্যুৎ দফতরে জানান। দফতরের তরফে শহরের মেয়র দিলীপ অগস্তিকে সঙ্গে নিয়ে মেলা পরিচালনার পরামর্শ দেওয়া হয়। এর পরেই ডিপিএল কর্তৃপক্ষ মেয়রকে চিঠি দিয়ে মেলা পরিচালনার দায়িত্ব নেওয়ার আর্জি জানান।

Advertisement

সোমবার মেয়র মেলার মাঠে গিয়ে আয়োজন খতিয়ে দেখেন। তিনি বলেন, ‘‘সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ ভাবে মেলা পরিচালনা করাই উদ্দেশ্য।’’ পুরসভার ৪ নম্বর বরো চেয়ারম্যান চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, মেলার পরিচ্ছন্নতার দিকটি তিনি দেখছেন। মেলা প্লাস্টিক-মুক্ত রাখার জন্য ফ্লেক্স লাগানো হয়েছে। পরিবেশবান্ধব আলো লাগাতে বলা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘মেলার মাঠ যাতে পরিচ্ছন্ন থাকে সে দিকে নজর থাকবে।’’

মেলা কমিটি সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার চারশোর বেশি স্টল থাকছে। মোট ৩৬টি শৌচাগার থাকছে। দুর্গাপুর ছাড়াও আশপাশের নানা এলাকা থেকে মানুষজন আসেন। ভিড় সামলাতে মোট তিনশো জন স্বেচ্ছাসেবক থাকবেন। দুপুর ২টো থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ভিড় সবচেয়ে বেশি থাকে। তখন দু’শো জন স্বেচ্ছাসেবী দায়িত্বে থাকবেন। এ ছাড়া রাতে ৫০ জন ও সকাল ৬টা থেকে ৫০ জন করে দায়িত্বে থাকবেন। ৫ জানুয়ারি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্মদিন উপলক্ষে বসে আঁকো প্রতিযোগিতা, রক্তদান শিবিরের আয়োজন হবে। সে দিন স্কুলের পড়ুয়াদের জন্য দুপুর ২টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত বিনামূল্যে যে কোনও ‘রাইড’ চড়ার সুযোগ থাকবে। নিরাপত্তার জন্য মোট ৭২টি সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement