অর্ণব রাও
সেই গত ১৬ সেপ্টেম্বর আদালতে হাজির হতে হয়েছিল তাঁকে। তার পরে গত ছ’মাসে এক বারও মামলার তারিখ পড়েনি। অনিশ্চয়তার মধ্যেই দিন কাটছে অর্ণব রাওয়ের।
অর্ণব প্রয়াত লোকসঙ্গীত শিল্পী কালিকাপ্রসাদ ভট্টাচার্যের দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িটির চালক। গত বছরের ৭ মার্চ হুগলির গুড়াপের কাছে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় কালিকাপ্রসাদের। স্টিয়ারিংয়ে ছিলেন অর্ণব। প্রয়াত শিল্পীর স্ত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে অর্ণব রাওকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আজ, বুধবার ওই দুর্ঘটনার এক বছর পূর্ণ হচ্ছে। অর্ণব অবশ্য এখন জামিনে মুক্ত। কিন্তু মামলার নিষ্পত্তি না হওয়ায় অনিশ্চয়তা কাটছে না রাও পরিবারের।
অর্ণবের বিরুদ্ধে ৩০৪ (অনিচ্ছাকৃত ভাবে মৃত্যু ঘটানো), ৩৩৮ (অনিচ্ছাকৃত আঘাত) এবং ২৭৯ (বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালানো) ধারায় চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ। ৩০৪ ধারায় অর্ণব অভিযুক্ত হওয়ায় মুখ্য বিচারবিভাগীয় বিচারকের আদালত থেকে মামলা গিয়েছে চুঁচুড়া দায়রা আদালতে। পুলিশ সূত্রের খবর, আজ, বুধবারই মামলাটি স্থানান্তরের জন্য মুখ্য বিচারবিভাগীয় বিচারকের আদালতে উঠবে। সেখানে হাজির হতে হবে অর্ণবকে।
গ্রেফতার হওয়ার পরে ৬৪ দিন জেলে থাকতে হয়েছিল অর্ণবকে। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে এখন জামিনে মুক্ত রয়েছেন ওই গাড়িচালক।
জামিনের শর্ত হিসেবে তাঁকে গুড়াপ থানায় হাজিরা দিতে হয়। অভিযুক্ত গাড়িচালকের আইনজীবী দিব্যেন্দু ভট্টাচার্য মঙ্গলবার বলেন, ‘‘এখনও কেউ দোষী সাব্যস্ত হননি। অথচ, সবাই ওই পরিবারটির দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে রয়েছেন। ওঁদের আর্থিক সমস্যার দিকটা কেউ দেখছেন না।’’
গত এক বছরে কসবার বোসপুকুর রোডের বাসিন্দা অর্ণবের পেশা বদলেছে। স্টিয়ারিং ছেড়ে এখন তাঁর ভরসা কেটারিং। দুর্ঘটনা নিয়ে অবশ্য পুরনো অবস্থানেই অনড় কালিকাপ্রসাদের দুর্ঘটনাগ্রস্ত ওই গাড়ির চালক। ছেলেকে পাশে বসিয়ে মা বললেন, ‘‘বিচার ব্যবস্থার প্রতি ভরসা আছে। সত্যের জয় হবে। হাতে ড্রাইভিং লাইসেন্স পেলে ফের স্টিয়ারিং ধরবে ও।’’
এ সব নিয়ে অবশ্য মুখ খুলতে নারাজ কালিকাপ্রসাদের স্ত্রী ঋতচেতা গোস্বামী। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এ বিষয়ে সেই সময়েও কিছু বলিনি, এখনও বলব না। কিছু বক্তব্য নেই, আর থাকলেও তা সংবাদমাধ্যমে বলব না।’’