গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
হাসপাতালে কণ্ঠস্বরের নমুনা জমা দিয়েই কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হলেন ‘কালীঘাটের কাকু’ ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। তবে ডিভিশন বেঞ্চ তাঁর মামলাটি আদৌ গ্রহণ করবে কি না, তা নিয়েই ধন্দ রয়েছে।
বুধবার জোকা ইএসআই হাসপাতালে গলার স্বরের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে কালীঘাটের ‘কাকু’র। বৃহস্পতিবার ভোর ৩টে বেজে ২০ মিনিটে সেখান থেকে তাঁকে এসএসকেএম হাসপাতালে ফিরিয়ে আনা হয়। ‘কাকু’র আইনজীবী হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই। ‘কাকু’র কণ্ঠস্বরের নমুনা পরীক্ষার ‘নির্দেশ’কে চ্যালেঞ্জ করে তিনি ডিভিশন বেঞ্চকে বলেন, ‘‘সুজয়কৃষ্ণকে মামলায় যুক্ত না করেই কণ্ঠস্বর পরীক্ষার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যা দেওয়া যায় না।’’
পাশাপাশি, কেন ওই নির্দেশ ‘দেওয়া যায় না’, তার কারণও ব্যাখ্যা করেন সুজয়ের আইনজীবী। তাঁর দাবি, বিচারপতি অমৃতা সিংহের নির্দেশে সুজয়ের কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। কিন্তু যেহেতু সুজয়ের মামলাটি কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে চলছে, তাই ওই নির্দেশ বিচারপতি সিংহ দিতে পারেন না। কিন্তু আইনজীবীর এই যুক্তির গোড়াতেই দেখা গিয়েছে গলদ। হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ সেই গলদকে চিহ্নিতও করেছেন।
এ ব্যাপারে বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন সুজয়ের আইনজীবী। তাঁর আইনজীবীর ব্যাখ্যা শোনার পর জানতে চান, যে নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করতে চাইছেন তিনি, সেই নির্দেশ কোথায়? নির্দেশনামা কি আছে তাঁর কাছে? জবাবে আইনজীবী আদালতকে জানান, নির্দেশনামা তাঁর কাছে নেই। কারণ, বিচারপতি সিংহের এজলাসে রুদ্ধদ্বার শুনানি হয়েছিল। এর পরেই ডিভিশন বেঞ্চ সুজয়ের আইনজীবীকে জানিয়ে দেয়, ‘‘আগে সিঙ্গল বেঞ্চের ওই নির্দেশনামা নিয়ে আসুন।’’
প্রসঙ্গত, বুধবার নিয়োগ সংক্রান্ত একটি মামলার রুদ্ধদ্বার শুনানি হয় কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি সিংহের বেঞ্চে। সেই শুনানির কিছু পরে নিয়োগ মামলায় গ্রেফতার এবং বর্তমানে এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সুজয়ের কেবিনের সামনে পৌঁছে যান ইডির আধিকারিকেরা। বেশ কিছু দিন ধরেই ‘কাকু’র কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করতে চাইছিল ইডি। নিয়োগ মামলার তদন্তে বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ বলেও দাবি করেছিল তারা। বুধবার রাতে দেখা যায় ‘কাকু’কে নিয়ে জোকার ইএসআই হাসপাতালে পৌঁছেছে তারা। পরে জানা যায় সেখানেই সুজয়ের কণ্ঠস্বরের নমুনাও সংগ্রহ করা হয়েছে।
সুজয়ের আইনজীবীর দাবি, বিচারপতি সিংহের নির্দেশেই এমনটা হয়েছে। যদিও তার প্রমাণ ডিভিশন বেঞ্চে দেখাতে পারেননি তিনি।