আলোর উৎসবে বাজি-বারুদের গন্ধ ছাপিয়ে সতর্কতা-সচেতনতার এই আলোটুকুই এ বারের মহৎ প্রাপ্তি। —ফাইল চিত্র।
কালীপুজোর রাতে এবং পরের দিন রবিবার কলকাতা, হাওড়া, শিলিগুড়ি, আলিপুরদুয়ারের কিছু এলাকা, দুই ২৪ পরগনার গ্রামাঞ্চলে বাজি ফেটেছে। তবে রাজ্যের যে-সব অঞ্চল বাজি বর্জন করেছে, তার আয়তন অনেক বেশি। আলোর উৎসবে বাজি-বারুদের গন্ধ ছাপিয়ে সতর্কতা-সচেতনতার এই আলোটুকুই এ বারের মহৎ প্রাপ্তি।
লালবাজারের খবর, নিষিদ্ধ শব্দবাজি ফাটানোর মামলায় শনিবার, কালীপুজোর রাতে মোট ৬০৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়। বাজেয়াপ্ত হয়েছে প্রায় ১৬৩৭ কিলোগ্রাম বাজি। পথে বেরোনো পরিবেশকর্মী ও পুলিশের একাংশ জানান, রবিবার সব থেকে বেশি বাজি ফাটানোর অভিযোগ এসেছে কসবা, হরিদেবপুর, লেদার কমপ্লেক্সের মতো সংযোজিত এলাকা এবং বেহালা, গিরিশ পার্ক, বইবাজার, সিঁথি, উল্টোডাঙা, বেলেঘাটা থেকে। হাওড়ার রাস্তায় এ দিন পুলিশি সক্রিয়তা তেমন চোখে পড়েনি বলে অভিযোগ। পটকা, দোদমা, চকলেট বাজির তাণ্ডব অব্যাহত ছিল। বাজি ফেটেছে উলুবেড়িয়া, বাগনানেও।
স্বস্তি এটুকুই যে, এটা রাজ্যের অধিকাংশ জায়গার ছবি নয়। উত্তর থেকে দক্ষিণ— বাংলার বেশির ভাগ এলাকাই বাজি এড়িয়ে সচেতনতার স্বাক্ষর রেখেছে। উত্তরের মালদহ থেকে সীমান্ত-জেলা কোচবিহার— কোথাও বাজির দাপট ছিল না। শনিবার রাতে সামান্য শব্দবাজির আওয়াজ এসেছে। আলোর বাজিও পুড়েছে কিছু। তবে তা নগণ্য, বিক্ষিপ্ত।
জলপাইগুড়ি, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর প্রায় বাজি-মুক্ত ছিল। পুলিশ, চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীরা মনে করছেন, আদালতের নির্দেশ রূপায়ণে পুলিশ-প্রশাসনের সক্রিয়তার পাশাপাশি কোভিড নিয়ে আতঙ্কও এ ক্ষেত্রে সহায়ক হয়েছে। আসানসোল ও দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে কালীপুজোর রাত ছিল নিরুপদ্রব। দুই মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রামেও সক্রিয় ছিল পুলিশ। ‘‘এমন কালীপুজোর রাত আগে দেখিনি। বাজি দূরে রেখে সচেতনতার পরিচয় দিয়েছেন নাগরিকেরা,’’ বলেন পরিবেশবিদ বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায়।