রুপোলি-শস্য: উপকূলে এল। নিজস্ব চিত্র
দিন কয়েক আগেও প্রায় খালি ট্রলার ফিরেছিল সমুদ্র থেকে। কী করে ট্রলারের খরচ উঠবে, তা নিয়ে চিন্তায় মাথায় হাত পড়েছিল মৎস্যজীবীদের। কিন্তু বর্ষার জল পড়তেই ইলিশ উঠল মৎস্যজীবীদের জালে।
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে জালে ইলিশ ধরা পড়ায় খুশি অন্যরাও। এই মরসুমের সবচেয়ে বেশি ইলিশ জালে ধরা পড়ল অগস্ট মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে। জুন মাসের ১৫ তারিখ থেকে রাজ্যের সব ট্রলারগুলি ইলিশের সন্ধানে গভীর সমুদ্রে পাড়ি দিলেও, গত ২ মাস সমুদ্রে ইলিশের দেখা পায়নি কোনও ট্রলারই। আর সে কারণেই হতাশ হয়ে পড়েছিলেন মৎস্যজীবীরা। শেষ পর্যন্ত পঞ্চম যাত্রায় দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার প্রায় প্রতিটি ট্রলারই সমুদ্র থেকে ইলিশ নিয়ে ফিরল উপকূলে।
এর আগের ৪টি যাত্রায় প্রায় প্রতিটি ট্রলারকেই লোকসানের মুখে পড়তে হয়েছে। বহু ট্রলার মালিক আর একটা ট্রিপের পর ট্রলার বন্ধ করে দেওয়ারও সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। মৎস্যজীবীরাও হতাশ হয়ে ভিন রাজ্যে পাড়ি দেওয়া শুরু করেছিলেন।
কিন্তু অগস্ট মাসের মাঝামাঝিতে আবহাওয়ার পরিবর্তন ঘটতেই সমুদ্রে দেখা মিলেছে ইলিশের। প্রায় প্রতিটি ট্রলারই গড়ে ৩০ মণ করে ইলিশ মাছ নিয়ে ফিরেছে উপকূলে। আর সেই কারণেই বাজারে কিছুটা ঘাটতি মিটেছে ইলিশের।
তবে ইলিশের দামের কোনও পরিবর্তন হয়নি। বাজারে চড়া দামেই বিকোচ্ছে ইলিশ। মৎস্যজীবীদের দাবি, মরসুমের প্রথম ইলিশ হওয়ার কারণেই বাজারে চড়া দাম রয়েছে। তবে এখন থেকে এ ভাবে ইলিশ আমদানি হতে থাকলে, পরবর্তী সময়ে ইলিশের দাম অনেকটাই কমে যাবে বলে, তাঁদের দাবি।
এ বিষয়ে ট্রলার মালিক অনির্বাণ দাস বলেন, ‘‘আবহাওয়ার পরিবর্তন হওয়ার পরই, সমুদ্রে ইলিশের দেখা মিলেছে। প্রায় প্রতিটি ট্রলারই ৩০ মণ করে ইলিশ নিয়ে উপকূলে ফিরেছে। মাছের ওজনও বেশ ভাল। বর্ষার জল পড়তেই মাছের স্বাদও ফিরেছে।’’ তবে এখন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সতর্কবার্তা থাকার কারণে ট্রলারগুলি উপকূলে রয়েছে।
আবার আবহাওয়ার পরিবর্তন হলেই ট্রলার ইলিশের সন্ধানে পাড়ি দেবে গভীর সমুদ্রে। কাকদ্বীপ মৎস্যজীবী কল্যাণ সমিতির সম্পাদক মিলন মাইতি বলেন, ‘‘বৃষ্টি ছিল না দেখেই ট্রলারগুলি খালি ফিরেছিল। তবে এখন আবার ইলিশ মিলছে। মৎস্যজীবী পরিবারের মধ্যে হতাশা খানিকটা কমেছে।’’