শিল্পী কবীর সুমন। —ফাইল চিত্র।
পশ্চিমবঙ্গে রামনবমীর ছুটির বিরোধিতা করলেন কবীর সুমন। রবিবার সকালে একটি ফেসবুক পোস্ট করে রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন তিনি। লিখেছেন, ‘‘আর পারলাম না। রামনবমীতে পশ্চিমবঙ্গে ছুটি মানতে পারছি না। রাজ্য সরকারের বিরোধিতা করতে বাধ্য হচ্ছি।’’
সুমন রামনবমীকে ‘জাতীয় সংখ্যালঘু নির্যাতন দিবস’ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘‘হিন্দি-হিন্দুত্বওয়ালাদের তোয়াজ করতে রামনবমীর ছুটি? মানছি না আমি। বাধ্য হচ্ছি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিরোধিতা করতে। এই সরকার বাংলা খেয়ালকে মান্যতা দিয়েছে। তাদের কুর্নিশ জানিয়েছি বার বার। কিন্তু এ রাজ্যের ভাষা বাংলা। সেই ভাষায় খেয়াল রচনা, গাওয়া শেখানো হবে, এটাই তো স্বাভাবিক। কাজেই রাজ্য সরকার অস্বাভাবিক কিছু করেনি। তাদের করণীয় কাজের সীমা পেরিয়ে করেননি কিছু। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে রামনবমীকে সরকারি ছুটির দিন হিসেবে ঘোষণা সরকার যদি সত্যিই করে থাকে, তা হলে আমি সরকারের এই ঘোষণার, এই নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’’
উল্লেখ্য, ১৭ এপ্রিল রামনবমী উপলক্ষে রাজ্য ছুটি ঘোষণা করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। শনিবারই নবান্নের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ওই দিন জরুরি পরিষেবা বাদ দিয়ে সরকারি এবং সরকার পোষিত সব প্রতিষ্ঠানে ছুটি থাকবে। রবিবার সেই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানালেন সুমন। পশ্চিমবঙ্গে রামনবমীতে ছুটি এই প্রথম।
কবীর সুমনের বিবৃতি।
বস্তুত, গত কয়েক বছর ধরেই রামনবমীকে কেন্দ্রে করে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় উত্তজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। গত বছরও রিষড়া এবং হাওড়ায় হিংসার ঘটনা ঘটেছিল। তার জেরে আদালতের নির্দেশে হনুমান জয়ন্তীতে বেশ কিছু স্পর্শকাতর এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল। লোকসভা নির্বাচনের আগে রামনবমীতে ছুটি ঘোষণার সিদ্ধান্তকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন অনেকে। তৃণমূল সরকারের সিদ্ধান্তকে অবশ্য কটাক্ষ করেছে বিজেপি। তবে রাজ্যের শাসকদলের বক্তব্য, বাংলায় মতুয়া মহাসঙ্ঘের হরিচাঁদ-গুরুচাঁদ ঠাকুরের জন্মদিন-সহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে রাজ্য সরকার ছুটি দেয়। আদিবাসীদের করাম পুজোতেও এখন ছুটি থাকে। এ বার তাতে যোগ হল রামনবমী। এর সঙ্গে ভোটের সম্পর্ক নেই।