কলকাতা হাইকোর্ট
ঘড়ি ধরে মামলার বিচার না-ও হতে পারে। কিন্তু রাজ্যের নিম্ন আদালতে মামলার হিসেবনিকেশ ফুটে উঠবে ‘বিচারের ঘড়ি’-তে। তবে সেই ঘড়ি পথেঘাটে, এমনকি নিম্ন আদালতেও মিলবে না। ‘ঘড়ি’ দেখে বিচারের হিসেব কষতে হলে কলকাতা হাইকোর্টে যেতে হবে। হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল রাই চট্টোপাধ্যায় শুক্রবার জানান, ২২ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতি থোট্টাথিল ভাস্করন নায়ার রাধাকৃষ্ণন হাইকোর্টের ‘ই’ গেটে ‘জাস্টিস ক্লক’-এর উদ্বোধন করবেন।
‘জাস্টিস ক্লক’ আসলে একটি এলইডি ডিসপ্লে বোর্ড। রাজ্যের বিভিন্ন নিম্ন আদালতে কত মামলা দায়ের হচ্ছে, কত মামলার নিষ্পত্তি হচ্ছে এবং কত মামলার নিষ্পত্তি বাকি আছে, বিচারপ্রার্থীদের তা জানাতেই এই উদ্যোগ। তবে খাস হাইকোর্টে কত মামলা জমে রয়েছে, কত মামলার নিষ্পত্তি হচ্ছে— সেই সব তথ্য ডিসপ্লে বোর্ডে ভেসে উঠবে না।
প্রশ্ন উঠছে, নিম্ন আদালতের মামলার হালহকিকত জানতে বিচারপ্রার্থীদের হাইকোর্টে গিয়ে ওই এলইডি ডিসপ্লে বোর্ড দেখতে হবে কেন? সংশ্লিষ্ট জেলার আদালতে ওই বোর্ড বসানো হলে বিচারপ্রার্থীরা তো সেখানে গিয়েই ওই সব তথ্য জানতে পারতেন। এমনিতেই তো তারিখের পর তারিখ পড়তে থাকায় অসংখ্য মামলা বছরের পর বছর চলতে থাকে আর ন্যায়ালয়ের দরজায় হাজির হতে হতে ক্ষয়ে যায় জুতোর সুখতলা। তার উপরে নিজের জেলার আদালতে মামলা কোন অবস্থায় আছে, তা জানতে দূরদূরান্ত থেকে কলকাতা হাইকোর্টে হাজিরার বন্দোবস্ত কেন? সেই সময় বা আর্থিক সামর্থ্য তো বহু গরিব শ্রমজীবী বিচারপ্রার্থীরই নেই। একই সঙ্গে এই প্রশ্নও উঠছে যে, কোনও আবেদনকারী কি ওই বোর্ডে দেখতে পাবেন তাঁর দায়ের করা মামলা কোন পর্যায়ে আছে? বোর্ড তো টাঙানো হচ্ছে হাইকোর্টে, তা হলে উচ্চ আদালতের মামলার হালহকিকত তাতে জানানো হবে না কেন?
রেজিস্ট্রার জেনারেল জানান, আপাতত ওই ‘জাস্টিস ক্লক’ বসানো হবে হাইকোর্টের একটি প্রবেশপথে। জেলার নিম্ন আদালতগুলিতে এখনই ওই বোর্ড বসানো হচ্ছে না। ওই সব আদালতে কত মামলার নিষ্পত্তি হচ্ছে, কত মামলা জমে থাকছে, আপাতত সেই তথ্যই মিলবে ডিসপ্লে বোর্ডে।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে প্রতিটি রাজ্যের হাইকোর্টেই এই ধরনের ডিসপ্লে বোর্ড বসানোর কাজ চলছে। ছত্তীসগঢ়, মেঘালয়, ঝাড়খণ্ড হাইকোর্টে ওই বোর্ড বসানো হয়েছে।