বদলি নীতিতে কোথাও ত্রুটি রয়েছে কি না, তা-ও জানতে চেয়েছে আদালত। — ফাইল ছবি।
বদলির নিয়ম মানতেই হবে শিক্ষকদের। নির্দেশ না মানলে চাকরি জীবনে ছেদ পড়বে। নতুন বদলি নিয়ম না মানায় শিক্ষকদের উদ্দেশে মন্তব্য বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর। তাঁর পর্যবেক্ষণ, বদলির নতুন নিয়ম নিয়ে প্রচুর মামলা হাই কোর্টে দায়ের হয়েছে। বদলি নীতিতে কোথাও ত্রুটি রয়েছে কি না, তা-ও জানতে চেয়েছে আদালত। পরবর্তী শুনানিতে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি)-কে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি বসু। আগামী বুধবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
এর আগে রাজ্য সরকারের উৎসশ্রী পোর্টালে আবেদন করে বদলি নিতেন শিক্ষকরা। আদালত মনে করছে, এই পরিষেবার অপব্যবহার হয়েছে। বিচারপতি বসুর পর্যবেক্ষণ, ওই পোর্টালের মাধ্যমে পছন্দসই স্কুলে বদলি নিতেন শিক্ষকরা। এর পিছনে দুর্নীতিও কাজ করেছে। এই সমস্যা থেকে বেরনোর জন্য কয়েক দিন আগে বদলি নীতিতে জোর দেয় হাই কোর্ট। আদালতের চাপে শিক্ষক বদলিতে নতুন নিয়ম আনে রাজ্য। সেই নিয়ম নিয়েই শিক্ষকদের একাংশের মধ্যে উষ্মা তৈরি হয়েছে।
রাজ্যের নতুন নিয়মে অসন্তোষ জানিয়ে হাই কোর্টে মামলা করেন শর্মিষ্ঠা চন্দ্র-সহ কয়েক জন শিক্ষক। তাঁদের বক্তব্য, নতুন নিয়মের পদ্ধতি সঠিক নয়। চাকরি দেওয়ার সময় একটি স্কুল বেছে নিতে বলা হয়। এখন অন্যত্র বদলি করা হচ্ছে। এতে অসুবিধায় পড়ছেন শিক্ষকরা। কাউকে কাউকে জেলার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
এই মামলাতেই বিচারপতি বসুর মন্তব্য, ‘‘স্কুলে ছাত্র এবং শিক্ষকের অনুপাত সঠিক করার জন্যই নতুন বদলির নিয়ম আনা হয়েছে। ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনা নিয়ে আদালত চিন্তিত। যে সব স্কুলে ছাত্র বেশি এবং শিক্ষক কম সেখানে বদলি করলে যেতেই হবে। অন্য চাকরির ক্ষেত্রে বদলি নিয়ে সমস্যা হয় না। শুধু শিক্ষকেরা কেন সুবিধামতো জায়গায় চাকরি করবেন। যেখানে ছাত্র থাকবে, সেখানে শিক্ষকদের যেতেই হবে।’’ তাঁর নির্দেশ, শিক্ষকরা নতুন নিয়ম না মেনে চললে কড়া পদক্ষেপ করতে পারবে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। নির্দেশ না মানলে চাকরি জীবনে ছেদ পড়তেও পারে।
নতুন বদলি রীতির বিরোধিতা করে প্রচুর মামলা দায়ের হচ্ছে হাই কোর্টে। যা নিয়ে উদ্বিগ্ন আদালত। বিচারপতি বসুর মন্তব্য, ‘‘শিক্ষকদের এই নিয়মের বিরোধিতাও আদালতের কাছে চিন্তাজনক। নতুন নিয়মের কোন ত্রুটির জন্য শিক্ষকদের এই ক্ষোভ তা খতিয়ে দেখবে আদালত। এ বিষয়ে এজির কাছে জানতে চাইবে আদালত।’’