প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ সভাপতি গৌতম পাল এবং কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
নিয়মমাফিক প্রশিক্ষণ ছাড়াই কী ভাবে প্রাথমিকের স্কুলে চাকরি করছেন কয়েক হাজার শিক্ষক? সোমবার রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে সরাসরি এই প্রশ্ন করলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এ সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানি ছিল তাঁর এজলাসে। মামলাকারীদের বক্তব্য শোনার পর তিনি এ ব্যাপারে পর্ষদের কাছে রিপোর্ট তলব করেছেন। রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য পর্ষদকে ১০ দিন সময়ও বেঁধে দিয়েছেন বিচারপতি। আগামী ১৮ অগস্ট পর্ষদকে এ ব্যাপারে রিপোর্ট জমা দিতে হবে কলকাতা হাই কোর্টে।
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে এ ব্যাপারে মামলা করেছিলেন সাত জন মামলাকারী। তাঁদের অভিযোগ ছিল, প্রাথমিক শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের বাঁধাধরা নিয়ম রয়েছে। এই নিয়ম বেঁধে দিয়েছে জাতীয় শিক্ষক শিক্ষণ পর্ষদ। কিন্তু রাজ্যে প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে বহু ক্ষেত্রেই সেই নিয়ম মানা হয়নি। রাজ্যের অনেক প্রাথমিক স্কুলে প্রশিক্ষণ না নিয়েই চাকরি করছেন প্রায় পাঁচ হাজার প্রাথমিকের শিক্ষক।
মামলাকারীদের অভিযোগ অনুযায়ী, ২০২০ সালের প্রাথমিক নিয়োগ প্রক্রিয়াতেই প্রশিক্ষণ ছাড়া প্রাথমিক শিক্ষকদের নিয়োগ করা হয়েছিল। হাই কোর্টে মামলাকারী দের আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি জানিয়েছেন, প্রায় ১৬,৫০০ শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয় পর্ষদ। বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, বিএড প্রশিক্ষিত প্রার্থীদের ৬ মাসের মধ্যে ব্রিজ কোর্স করানোর প্রয়োজন ছিল। কিন্তু প্রায় পাঁচ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের আজ অবধি সেই প্রশিক্ষণ হয়নি।
মামলাকারীদের দাবি, এই পাঁচ হাজার প্রাথমিকের শিক্ষক বিএড প্রশিক্ষিত। কিন্তু তাঁরা শিক্ষক শিক্ষণ পর্ষদের নিয়ম না মেনেই চাকরি পেয়েছেন। ৬ মাসের প্রশিক্ষণ ছাড়াই চাকরি করছেন। সরকারের কাছ থেকে বেতনও নিচ্ছেন। আর রাজ্য সরকার তাদের বি ক্যাটাগরিতে ফেলে বেতন দিয়ে চলেছে। মামলাকারীরা আদালতের কাছে আবেদন করেন, ওই শিক্ষকদের চাকরি বাতিল করে নতুন করে প্যানেল প্রকাশ করতে হবে পর্ষদকে। সোমবার এই আবেদনের প্রেক্ষিতেই প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের কাছে রিপোর্ট তলব করেছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। ১৮ অগস্টের মধ্যে পর্ষদকে এর রিপোর্ট পেশ করতে হবে। এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ২১ অগস্ট।