Jogesh Chandra Choudhuri Law College

যোগেশচন্দ্র ল’কলেজে বৃহত্তর ষড়যন্ত্র, তদন্তভার দিতে পারি সিবিআইকে: বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়

যোগেশচন্দ্র চৌধুরী আইন মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ সুনন্দা ভট্টাচার্য গোয়েন্‌কা এবং ওই কলেজেরই অধ্যাপক অচিনা কুন্ডুকে পদ থেকে অপসারিত করেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০২৩ ১৫:৫৫
Share:

কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

যোগেশচন্দ্র চৌধুরী আইন মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ এবং অধ্যাপকের ‘বেআইনি’ নিয়োগেও সিবিআই তদন্তের নির্দেশ? শুক্রবার এই মামলার শুনানিতে তেমনই ইঙ্গিত দিলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। বিচারপতি বলেন, ‘‘এটা একটা বৃহত্তর ষড়যন্ত্র। তদন্ত করে দেখতে হবে। প্রয়োজনে সিবিআইকে তদন্তভার দিতে পারি।’’

Advertisement

বৃহস্পতিবার বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় যোগেশচন্দ্র চৌধুরী আইন মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ সুনন্দা ভট্টাচার্য গোয়েন্‌কা এবং ওই কলেজেরই অধ্যাপক অচিনা কুন্ডুকে পদ থেকে অপসারিত করেন। আদালতের পর্যবেক্ষণ, ইউজিসি (বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন) নির্ধারিত যোগ্যতা তাঁদের নেই। বিচারপতি জানিয়ে দিয়েছেন, শুক্রবার থেকেই সুনন্দা এবং অচিনা কলেজে ঢুকতে পারবেন না। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় জানান, ওই দুই ব্যক্তি যদি তাঁদের যোগ্যতা সম্পর্কে আদালতকে সন্তুষ্ট করতে পারেন, তা হলে পুনর্বহাল করা হবে।

শুক্রবার কলেজের অধ্যাপক অচিনা কুন্ডুর অপসারণের নির্দেশ বহাল রাখলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। শুক্রবার অচিনার বক্তব্য খতিয়ে দেখেন বিচারপতি। আদালতের পর্যবেক্ষণ, কলেজের শিক্ষকতার জন্য ইউজিসির নির্ধারিত যোগ্যতা তাঁর নেই। তাই তাঁর অপসারণের নির্দেশ বহাল থাকবে।

Advertisement

অপসারিত অধ্যক্ষ এবং অধ্যাপকের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ করেছে রাজ্যের শিক্ষা দফতর। ২০২১, ২০২২ এবং ২০২৩ সালে অধ্যক্ষ এবং ওই অধ্যাপকের বেতন বন্ধ এবং বিভাগীয় তদন্তের জন্য কলেজের গভর্নিং বডিকে সুপারিশ করেছিল শিক্ষা দফতর। তবে সেই সুপারিশ কার্যকর করেনি গভর্নিং বডি। আদালত নিযুক্ত স্পেশাল অফিসারের দাবি, গভর্নিং বডির সভাপতির উদ্দেশে সুপারিশপত্র পাঠানো হলেও তা পৌঁছত সচিবের হাতে। গভর্নিং বডির বর্তনাম সচিব ছিলেন অধ্যক্ষ।

কলেজের অধ্যক্ষ হিসাবে মানিক ভট্টাচার্যের নিয়োগ নিয়ে মামলা হয়েছিল হাই কোর্টে। অভিযোগ ছিল, উপযুক্ত যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও বেশ কয়েক জন অধ্যাপককে নিয়োগ করেছিলেন মানিক। মামলাকারীর অভিযোগ, ওই অধ্যাপক নিজেদের স্বার্থে কলেজে বেশ কয়েক জন দুষ্কৃতীকে প্রশ্রয় দিয়েছেন। সেই দুষ্কৃতীরা কলেজকে অসামাজিক কাজের আখড়ায় পরিণত করেছেন। মামলাকারীর দাবি, পুলিশ এবং কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানিয়েও কাজ হয়নি। এই প্রেক্ষিতে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের মৌখিক নির্দেশ, অভিযোগ খতিয়ে দেখে পুলিশকে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। আগামী ৯ অক্টোবরের মধ্যে ওই দুষ্কৃতীদের আদালতে হাজির করাবে পুলিশ। বিষয়টিতে নজর রাখবেন কলকাতার পুলিশ কমিশনারও।

এই মামলায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘‘রাজা ধন বিলোচ্ছেন অন্দরে, আর তা কুড়োচ্ছেন রানি।’’ আগামী ৯ অক্টোবরের মধ্যে কলেজ সার্ভিস কমিশনের রিপোর্ট তলব করেছেন বিচারপতি। তাঁর প্রশ্ন, পে-প্যাকেজ পদ্ধতির মাধ্যমে কলেজে অধ্যাপক হতে গেলে কী যোগ্যতা লাগে? পে-প্যাকেজ পদ্ধতি এবং কলেজ সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে নিযুক্ত হতে গেলে কী যোগ্যতা লাগে? এই মর্মে হলফনামা তলব করা হয়েছে। বিচারপতির নির্দেশ, পুলিশের উপস্থিতিতে আদালত নিযুক্ত স্পেশাল অফিসার অধ্যক্ষের অফিস থেকে প্রয়োজনীয় নথি সংগ্রহ করতে পারেন। আগামী সোমবার দুপুর ২টোয় এই মামলার পরবর্তী শুনানি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement