Justice Abhijit Gangopadhyay

‘মশাইরা সব সাবধান, রাগ ঘৃণাকে আটকান’, বিচারের বাণীতে কবিতার উদ্ধৃতি বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের

আমডাঙার একটি স্কুলে শিক্ষকতা করেন দোলন দে। বাড়ির কাছের স্কুলে বদলি চেয়ে তিনি কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করেন। তাঁর তিন বছরের অসুস্থ শিশুকন্যার কথা ভেবে আবেদন মঞ্জুর করেন বিচারপতি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২১:৩৫
Share:

বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। — ফাইল চিত্র।

অসুস্থ শিশুর কথা চিন্তা করে নিয়মের বাইরে গিয়ে কোনও শিক্ষিকাকে বদলি করালে তা অন্যায় হতে পারে না। বাড়ির কাছের স্কুলে এক শিক্ষিকাকে বদলির রায় দিয়ে জানালেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ওই রায়ে তিনি নাট্যকার বার্টল্ট ব্রেখ্‌টের লেখা কবিতার একটি অংশ তুলে ধরেন। রায়ে ‘মারি ফারারের ভ্রূণ হত্যা’ কবিতার একটি অংশ তুলে ধরে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় লেখেন, ‘‘কিন্তু মশাইরা সব সাবধান। রাগ ঘৃণাকে আটকান, কেন না, যে জন্মেছে সে জন্মানোদের সাহায্য চায়...।’’

Advertisement

উত্তর ২৪ পরগনার আমডাঙার একটি স্কুলে শিক্ষিকতা করেন দোলন দে। বাড়ির সামনের স্কুলে বদলি চেয়ে তিনি কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করেন। তাঁর আবেদন, ওই জেলার কাঁচরাপাড়ায় তাঁকে বদলি করানো হোক। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছে তাঁর আর্জি, তিন বছরের শিশুকন্যা অসুস্থ। হার্নিয়ার চিকিৎসা চলছে। ৩৫ কিলোমিটার দূরের স্কুলে চাকরি করতে গিয়ে তার ঠিক মতো দেখভাল হচ্ছে না। ওই বদলির বিরোধিতা করে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ। তাদের যুক্তি, ওই শিক্ষিকা একই জেলার মধ্যে চাকরি করেন। বদলির নতুন নিয়ম অনুসারে অনুমতি দেওয়ার ক্ষেত্রে বাধা রয়েছে। যদিও ওই যুক্তিতে সন্তুষ্ট হননি বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর পর্যবেক্ষণ, শিশুটির কথা চিন্তা করে ওই শিক্ষিকাকে বদলির করানোর প্রয়োজন রয়েছে বলে আদালত মনে করে। নইলে ভবিষ্যতে ওই শিশুটি সমস্যায় পড়তে পারে।

এর পরেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় ব্রেখ্‌টের কবিতার ওই লাইনটি রায়ে উল্লেখ করেন। তাঁর মন্তব্য, ‘‘কখনও কখনও দর্শন আমাদের ন্যায়বিচারের পথে চলতে সাহায্য করে। আইনের মধ্যে থেকে এই আদালত ওই দর্শনকে গ্রহণ করছে।’’ এর পরেই শিক্ষা সংসদকে তাঁর নির্দেশ, ওই শিক্ষিকাকে তিন সপ্তাহের বাড়ির একেবারে কাছের স্কুলে বদলি করে আনতে হবে। আমডাঙার ওই স্কুলে অন্য কোনও শিক্ষককে নিয়ে যেতে হবে। আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি। ওই দিন আদালতের নির্দেশ কার্যকর করা হল কি না তা নিয়ে রিপোর্ট দিতে হবে জেলা প্রাথমিক স্কুল শিক্ষা পরিদর্শককে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement