—নিজস্ব চিত্র।
আন্দোলনকারীদের কথায়, ‘‘এই আন্দোলনের মাধ্য়মে আমরা সিবিআইকেও চাপে রাখতে চাই। কাল যিনি (আশিস পাণ্ডে) গ্রেফতার হয়েছেন, তা আমাদের চাপে পরেই হয়েছে। আমরা রাজপথ ছেড়ে গেলে তা-ও হবে না। প্রয়োজনে আমরা দিল্লি যাব। আমরা যত দিন পর্যন্ত ন্যায় বিচার পাচ্ছি, তত দিন আন্দোলন চলবে।’’ অনিকেত মাহাত বলেন, ‘‘সিবিআইকে বলতে চাই ন্যায় বিচার নিয়ে আলোচনা করুন। কর্মবিরতি যদি অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছিল, তা হলে কর্মবিরতি তুলে নিলাম। তবে কর্মবিরতি তুলছি মানে এই নয়, আন্দোলন শেষ হচ্ছে।’’
ধর্মতলা থেকে জুনিয়র ডাক্তারদের ঘোষণা, ‘‘আমরা ১০ দফা দাবি নিয়ে অবস্থানে বসছি।’’ তাঁদের অভিযোগ, ‘‘ওয়াই চ্যানেলের সামনে আমাদের সহযোদ্ধাকে পুলিশ টেনেহিঁচড়ে সরাল। পুলিশকে আমরা সেই ভিডিয়ো দিয়েছি। তারা বলছে কে করেছে, তাকে আমরা চিনি না। আমাদের থেকে লিখিত অভিযোগ চেয়েছে, কিন্তু এ টুকু বলতে পারছে না যে ভুল হয়েছে।’’
জুনিয়র ডাক্তারেরা বলেন, ‘‘আমরা কোনও চাপের মুখে পড়ে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করছি তা একদমই ঠিক কথা নয়। আমরা বাধ্য হয়ে কর্মবিরতিতে গিয়েছিলাম। তবে সাধারণ মানুষের পরিষেবার কথা মাথায় রেখেই আমরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করছি।’’
জুনিয়র ডাক্তারেরা শুক্রবার সঙ্গে করে একটি ঘড়ি নিয়ে এসেছিলেন। সেই ঘড়ি তাঁরা অবস্থান মঞ্চের সামনে টাঙিয়ে দেবেন বলে জানান। তাঁদের কথায়, ‘‘আমরা এই ঘড়ি নিয়ে এসেছি। প্রতি মিনিট, ঘণ্টার হিসাব হবে। তাই এই ঘড়ি অবস্থান মঞ্চে থাকবে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় যদি সরকার আমাদের দাবি না মানে, তবে আমরা জীবনের বাজি রেখে আমরণ অনশন শুরু করব।’’
ধর্মতলা থেকে কর্মবিরতি প্রত্যাহারের ঘোষণা করলেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। কাজে ফিরবেন তাঁরা। তবে লাগাতার আন্দোলন চলবে। ধর্মতলাতে অবস্থানে বসছেন আন্দোলনকারীরা। তাঁদের কথায়, ‘‘জিবি করে আমরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সম্পূর্ণ ভাবে কর্মবিরতি প্রত্যাহার হবে। তবে তার সঙ্গে আমরা তীব্র আন্দোলন চালিয়ে যাব এই ধর্মতলাতেই। আমরা জুনিয়র ডাক্তারেরা লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির ডাক দিচ্ছি।’’
জুনিয়র ডাক্তারদের তরফে দেবাশিস হালদার বলেন, ‘‘হাসপাতালে বেড, পরিষেবা পেলে রোগীর রাগ কমবে। আমরা মেডিক্যাল কলেজগুলিতে হুমকি সংস্কৃতির বিলোপ চাই। অভিযুক্ত সকলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।’’ সেই সঙ্গে ছাত্র সংসদের নির্বাচনের দাবিও জানান তাঁরা।
সাংবাদিক বৈঠকে জুনিয়র ডাক্তারেরা বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে দাবি করেছে ২৬ শতাংশ কাজ হয়েছে। কিন্তু ৬ শতাংশও কাজ হয়নি। ন্যায়বিচারের দাবিতে যে আন্দোলন চলছে তা ৫৮ দিনে পড়েছে। আরজি করের মতো আর একটাও ঘটনা যাতে না ঘটে, সেই কারণেই আন্দোলন। নিরাপত্তা নিয়ে আমাদের নির্দিষ্ট কিছু দাবি আছে। ’’
শুক্রবার এসএসকেএম থেকে মিছিল করে ধর্মতলায় পৌঁছন জুনিয়র ডাক্তারেরা। ১০ দফা দাবিতে মিছিল করেন তাঁরা। আন্দোলনকারীরা জানান, দাবি মেটা না পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। তবে কর্মবিরতি নিয়ে কী সিদ্ধান্ত তা স্পষ্ট করেননি। ধর্মতলাতে এসে পরবর্তী পদক্ষেপ ঘোষণা করা হবে বলেই জানিয়েছিলেন তাঁরা। সন্ধ্যা পৌনে ৭টা নাগাদ ধর্মতলায় পৌঁছে রাস্তায় বসে পড়েন জুনিয়র ডাক্তারেরা।