—প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
নিয়োগ মামলার শুনানিতে আদালতে ভর্ৎসিত সিবিআই। বিচারক তাদের ভূমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন। বলেন, ‘‘সিবিআইয়ের মতো দেশের অন্যতম প্রধান সংস্থার কাছ থেকে এই ধরনের প্রবণতা মোটেই কাম্য নয়।’’
তদন্ত পুরোপুরি শেষ না করেই চূড়ান্ত চার্জশিট গঠন করেছে সিবিআই, স্কুল সার্ভিস কমিশনে (এসএসসি) নিয়োগ ‘দুর্নীতি’ মামলায় এমনটাই অভিযোগ তুলেছেন ধৃত শান্তিপ্রসাদ সিন্হার আইনজীবী। বুধবার আলিপুরে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে এসএসসি-র প্রাক্তন উপদেষ্টা এসপি সিন্হার জামিনের আবেদন জানানো হয়। সেই প্রেক্ষিতেই এই প্রশ্ন তোলেন আইনজীবী সঞ্জয় দাশগুপ্ত।
আদালতে সঞ্জয় জানান, নিয়োগ মামলার তদন্ত এখনও শেষ করতে পারেনি কেন্দ্রীয় সংস্থা। তদন্ত বাকি থাকতেই তারা চূড়ান্ত চার্জশিট আদালতে জমা দিয়ে দিয়েছে। তাঁর দাবি, বেশ কিছু ফরেন্সিক পরীক্ষার রিপোর্ট এখনও আসেনি। সেই রিপোর্ট ছাড়াই কী ভাবে তদন্ত শেষ হয়েছে বলে দাবি করছে সিবিআই, সেই প্রশ্ন তুলেছেন এসপি সিন্হার আইনজীবী। উল্লেখ্য, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী ৯ জানুয়ারির মধ্যে নিয়োগ মামলার তদন্ত শেষ করতে বলা হয়েছিল কেন্দ্রীয় সংস্থাকে।
এর জবাবে সিবিআইয়ের তরফে আইনজীবী জানান, তাঁরা যা তথ্য সংগ্রহ করেছেন, সবই কেস ডায়েরিতে রয়েছে। এসপি সিন্হা ছাড়াও বুধবার আদালতে নিয়োগ মামলায় অপর ধৃত চন্দন মণ্ডলের জামিনের আবেদন জানানো হয়। তার পরিপ্রেক্ষিতে আরও সময় চায় সিবিআই।
আদালতে এই শুনানি চলাকালীন সিবিআইয়ের তদন্তকারী আধিকারিক উপস্থিত ছিলেন না। যা দেখে বিচারক অসন্তুষ্ট হন। তদন্তকারী অফিসার কোনও নথিও পাঠাননি। ফলে সিবিআইয়ের আইনজীবীকে সওয়াল চলাকালীন থামিয়ে দিয়ে বিচারকের মন্তব্য, ‘‘তদন্তকারী অফিসারের থাকা উচিত ছিল। আদালতের নির্দেশ পালন করা হয়নি। আমি আমার প্রয়োজন মতো নির্দেশ দেব। কোনও ত্রুটি থাকলে তদন্তকারী অফিসারকে সেই পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে।’’
২০২২ সালের ১০ অগস্ট এসএসসি নিয়োগ মামলার তদন্তে প্রাক্তন দুই উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ এবং অশোক সাহাকে গ্রেফতার করে সিবিআই। এই সংক্রান্ত মামলায় সিবিআই যে এফআইআর দায়ের করেছিল তাতে প্রথম নামই ছিল শান্তিপ্রসাদের। এসএসসি নিয়োগ নিয়ে যে সময় দুর্নীতির অভিযোগ, সেই সময় তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় একটি উপদেষ্টা কমিটি গড়ে দিয়েছিলেন। সেই কমিটির প্রধান ছিলেন শান্তিপ্রসাদ। সিবিআই সূত্রে দাবি, এই উপদেষ্টা কমিটির মাধ্যমেই ভুয়ো নিয়োগের সুপারিশ করা হত। এই কারণেই সিবিআইয়ের দায়ের করা এফআইআরে প্রথম নামটিই শান্তিপ্রসাদের। গ্রেফতারির পর যে বিবৃতি জারি করে তদন্তকারী সংস্থা, তাতেও এ কথাই বলা হয়।