বেঙ্গালুরুর ফ্ল্যাটে আত্মঘাতী হয়েছেন ইঞ্জিনিয়ার অতুল সুভাষ। —ফাইল চিত্র।
মামলার নিষ্পত্তি করতে পাঁচ লক্ষ টাকা দাবি করেছিলেন খোদ বিচারক, এমনটাই দাবি করলেন বেঙ্গালুরুর ইঞ্জিনিয়ার অতুল সুভাষের বাবা। অতুল নিজেও সুইসাইড নোটে সে কথা লিখে গিয়েছেন। স্ত্রী এবং তাঁর আত্মীয়দের বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ তুলে আত্মঘাতী হয়েছেন ৩৪ বছরের অতুল। বেঙ্গালুরুর তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় তিনি জেনারেল ম্যানেজার পদে ছিলেন। গত ৯ ডিসেম্বর তাঁর দেহ উদ্ধার হয়।
কর্মসূত্রে অতুল বেঙ্গালুরুতে থাকতেন। তাঁর বাবা-মা থাকেন বিহারে। সেখান থেকেই সংবাদ সংস্থা এএনআইকে অতুলের বাবা জানান, অতুল এবং তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে একাধিক মিথ্যা মামলা করেছিলেন পুত্রবধূ নিকিতা। সেই মামলাগুলি আদালতে বিচারাধীন ছিল। বার বার হাজিরা দিতে হত। ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে মামলা করা শুরু করেছিলেন নিকিতা, অভিযোগ অতুলের বাবার। তিনি বলেন, ‘‘আমার ছেলের মন ভেঙে গিয়েছিল। ও আমাদের কিছু বলত না। শুধু বলত, চার দিকে দুর্নীতি চলছে। কিন্তু ও হাল ছাড়বে না। কারণ, ও সত্যের পথে রয়েছে।’’
এর পরেই বিচারকের টাকা চাওয়ার প্রসঙ্গ তোলেন অতুলের বাবা। তিনি বলেন, ‘‘আদালতে মধ্যস্থতার কথা উঠলে প্রথমে তা ২০ হাজার টাকা দিয়ে শুরু হয়। ক্রমে তা ৪০ হাজারে ওঠে। বিচারক আমাদের জানান, ঝামেলা মেটাতে হলে অন্তত পাঁচ লক্ষ টাকা দিতে হবে অতুলকে।’’
নিকিতা এবং তাঁর পরিবার উত্তরপ্রদেশের জৌনপুরের বাসিন্দা। ইতিমধ্যে বেঙ্গালুরু পুলিশের চার সদস্যের একটি দল সেখানে পৌঁছেছে। নিকিতা এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। দলে রয়েছেন মহিলা আধিকারিকেরাও।
২৪ পাতার সুইসাইড নোট লিখে রেখে আত্মঘাতী হয়েছেন অতুল। মৃত্যুর আগে দেড় ঘণ্টার একটি ভিডিয়োও রেকর্ড করেছিলেন তিনি। এই ঘটনায় অতুলের ভাই বেঙ্গালুরুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতে অতুলের স্ত্রী এবং তাঁর আত্মীয়দের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। সুইসাইড নোটে অতুল জানিয়েছেন, গত এক বছর ধরে আদালতে এবং তার বাইরে লড়াই চালিয়ে যেতে হচ্ছে তাঁকে। তাঁর স্ত্রী তাঁর বিরুদ্ধে পণ চাওয়া, অস্বাভাবিক যৌনতা এবং খুনের চেষ্টার মিথ্যা মামলা সাজিয়েছেন, চিঠিতে লিখেছেন অতুল। চার বছরের পুত্রের উদ্দেশেও সুইসাইড নোটে বার্তা দিয়েছেন। অভিযোগ, বিবাহবিচ্ছেদে মোটা অঙ্কের টাকা তাঁর কাছ থেকে দাবি করা হয়েছিল। মানসিক নির্যাতন সইতে না-পেরেই আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।