বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের মূর্তিতে মাল্যদান নড্ডার। ছবি: তাপস ঘোষ
দুয়ারে স্বয়ং দলের সর্বভারতীয় সভাপতি। কিন্তু, দরজা খুলবে কে! চাবিই যে নেই! অগত্যা কিছু ক্ষণ অপেক্ষার পরে বুধবার বিজেপির হুগলি সাংগঠনিক জেলা কার্যালয়ের বন্ধ গেটের সামনে থেকে ফিরে গেল জগৎপ্রকাশ নড্ডার কনভয়।
জেলায় দলের প্রধান কার্যালয়ের চাবি-বিভ্রাট নিয়ে পদ্ম-শিবিরে শোরগোল পড়েছে। কিঞ্চিৎ অস্বস্তিতেও পড়েছেন বিজেপির জেলা নেতারা। বিরোধীরা ছুড়ে দিয়েছেন কটাক্ষ।
এ দিন চুঁচুড়ার বন্দেমাতরম ভবন পরিদর্শনে গিয়েছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি নড্ডা। সেখান থেকে বিবেকানন্দ রোড ধরে চন্দননগরে রাসবিহারী বসু রিসার্চ ইনস্টিটিউটে যাওয়ার সময় বেলা পৌনে ১২টা নাগাদ ওই দলীয় কার্যালয়ে যাওয়ার জন্য হুগলির ৩ নম্বর গেটের সরু রাস্তায় ঢুকে পড়ে তাঁর ২৫টি গাড়ির কনভয়। কিন্তু কার্যালয়ের বাইরের বড় গেটে তখন তালা ঝুলছে। তড়িঘড়ি বিজেপি কর্মীরা ছুটে আসেন। কিন্তু, চাবি মেলেনি। নেতাকে ভিতরে নিয়ে যেতে তালা ভাঙতে উদ্যত হন দলের কয়েক জন কর্মী।
তত ক্ষণে অবশ্য জেড প্লাস ক্যাটিগরির নিরাপত্তায় মোড়া নড্ডার কনভয় চন্দননগরের দিকে ঘুরতে শুরু করেছে। অপেক্ষাকৃত ছোট রাস্তায় কনভয়ে থাকা একের পর এক গাড়ির জন্য যানজট লেগে যায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে নড্ডার নিরাপত্তারক্ষীরা রাস্তায় নামেন।
চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের এক কর্তা বলেন, ‘‘ভিআইপি-র স্কেডিউলে দলীয় কার্যালয়ে যাওয়ার কোনও পরিকল্পনা ছিল না। চুঁচুড়া থেকে চন্দননগর যাওয়ার পথে হঠাৎই জেপি নড্ডার কনভয় দলীয় কার্যালয়ের রাস্তয় ঢুকে পড়ে। কয়েক মিনিটের মধ্যে ফের কনভয় চন্দননগর রওনা হয়।’’ এলাকার বাসিন্দা তথা তৃণমূল কাউন্সিলর ইন্দ্রজিৎ দত্ত বলেন, ‘‘ওঁর কনভয় ওঁদের পার্টি অফিসের দিকে ঢুকেছিল। জানতে পারলাম, গেট তালাবন্ধ থাকায় তিনি ঢুকতে না পেরে ফিরে গিয়েছেন। দলীয় কার্যালয় খোলার নাকি লোকই ছিল না!’’
গেরুয়া শিবিরের একাংশের দাবি, দলের সবাই ওই নেতাকে দেখতে যাওয়ায় দলীয় কার্যালয় বন্ধ ছিল। হুগলি সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সম্পাদক সুরেশ সাউয়ের দাবি, ‘‘দলের সর্বভারতীয় সভাপতি এসেছেন বলে কথা। তাই কার্যালয়ের কেয়ারটেকারও হয়তো তাঁকে দেখতে গিয়েছিলেন। তাই কার্যালয় বন্ধ ছিল। তবে, কার্যালয়ের দিকে কোনও কনভয় ঢোকেনি।’’ কেয়ারটেকার উজ্জ্বল ভৌমিকের অবশ্য দাবি, ‘‘আমি অফিসেই ছিলাম। নড্ডাজিকে দেখতে যাইনি। নড্ডাজি এখানে আসেননি।’’
তৃণমূলের হুগলি-শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি স্নেহাশিস চক্রবর্তীর কটাক্ষ, ‘‘বিজেপির পার্টি অফিস খোলারও লোক নেই এখানে। ওদের সর্বভারতীয় সভাপতি এসেছেন, অথচ পার্টি অফিস বন্ধ থাকে, চাবি খুঁজে পাওয়া যায় না, তালা ভাঙার উপক্রম করতে হয়— এটা বিজেপির দৈন্যদশা ছাড়া আর কী!’’
তথ্য সহায়তা: প্রকাশ পাল
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।