আলাদা রাজ্যের দাবি নিয়ে হইচই না করার বার্তা দিয়ে গেলেন নড্ডা। ফাইল ছবি
রাজ্য সফরে এসে গত মাসেই বাংলায় ৩৫৬ ধারা জারির দাবিতে ফের জল ঢেলে দিয়ে গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এ বার কলকাতায় এসে বাংলা ভেঙে পৃথক রাজ্যের দাবিতে অনুমোদন দিলেন না বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎ প্রকাশ নড্ডা। রাজ্যে দলের সাংসদ ও বিধায়কদের আলাদা রাজ্যের দাবি নিয়ে হইচই না করার বার্তা দিয়ে গেলেন তিনি। রাজ্য বিজেপির দাবি, মাঝেমধ্যে দলের নেতাদের কেউ কেউ যেমন দাবিই করুন না কেন, বাংলার বর্তমান ভৌগলিক মানচিত্র অখণ্ড রাখাই দলের অবস্থান। নড্ডা তাই নতুন কিছু বলেননি। বিজেপিকে অবশ্য বিঁধতে ছাড়েনি তৃণমূল কংগ্রেস ও সিপিএম।
সাম্প্রতিক কালে কখনও জঙ্গলমহল, কখনও উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্য করার দাবিতে সরব হয়েছেন বিজেপির সাংসদ-বিধায়কদের একাংশ। দিনকয়েক আগেই উত্তরবঙ্গে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপির উদ্দেশে বলে এসেছেন, প্রয়োজনে রক্ত দিয়ে হলেও বাংলা ভাগ রুখবেন। তার প্রেক্ষিতেই নড্ডার এ বারের বার্তা বলে রাজনৈতিক শিবিরের ব্যাখ্যা। বিজেপি সূত্রের খবর, নড্ডার উপস্থিতিতে বুধবার দলের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে অর্থনৈতিক খসড়া প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার সূত্রে নাটাবাড়ির বিধায়ক মিহির গোস্বামী দাবি করেছিলেন, উত্তরবঙ্গকে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (এসইজ়েড) হিসেবে ঘোষণা করা হোক। তাঁর ওই প্রস্তাবকে সমর্থন করেছিলেন দলের উত্তরবঙ্গের অন্য বিধায়কেরা। এর পরে শুক্রবার নিউটাউনের একটি হোটেলে এ রাজ্যের নির্বাচিত দলীয় সাংসদ ও বিধায়কদের নিয়ে বৈঠকে বসেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি। সেই বৈঠকেই তিনি বিধায়ক ও সাংসদদের পরামর্শ দেন, আলাদা রাজ্যের দাবি নিয়ে তাঁরা যেন সরব না হন।
দলের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ বা জন বার্লাদের দাবির উপরে নড্ডার জল ঢেলে দেওয়ার প্রেক্ষিতে রাজ্য বিজেপির প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের ব্যখ্যা, ‘‘নড্ডাজি তো নতুন কিছু বলেননি! বাংলা ভেঙে ছোট রাজ্য করার পক্ষপাতী বিজেপি নয়। শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় যে বাংলার রূপরেখা তৈরি করেছিলেন, সেই মানচিত্রই অখণ্ড রাখতে চাই আমরা। নড্ডা হোক বা শমীক ভট্টাচার্য, দলের নীতি সকলের জন্যই এক।’’
তৃণমূলের জাতীয় মুখপবাত্র সুখেন্দুশেখর রায় অবশ্য বলেছেন, ‘‘আবেগে সুড়সুড়ি দিয়ে বাজিয়ে দেখতে চেয়েছিল বিজেপি। এখন বেকায়দায় পড়ে উল্টো সুর গাইছে! এখানে রাজ্য ভাগের কথা বললে বিজেপি গুজরাত, উত্তরপ্রদেশ-সহ আরও ২০ রাজ্যের দাবি নিয়ে বিপদে পড়বে। ওঁরা যা-ই বলুন, অখণ্ড রাজ্যের ব্যাপারে এখানে মানুষ ঐক্যবদ্ধ।’’ সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীরও কটাক্ষ, ‘‘কখনও বলে বাংলা ভাগ চাই, কখনও বলে চাই না! আসলে যেখানে বাংলা ভাগের কথা বললে উস্কানি দেওয়া যায়, সেখানে বিজেপি সেটাই বলে। আবার যেখানে উল্টোটা বললে সুবিধা হয়, সেখানে তেমন বলে। এটাই বিজেপির কৌশল।’’