ফাইল ছবি
বিধানসভা নির্বাচনে বাংলা জয় অধরা থাকার পর থেকেই ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসের অভিযোগ নিয়ে সরব রাজ্য বিজেপি। এই নিয়ে আদালত থেকে রাজপথ, এমনকি একাধিক বার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকেরও দ্বারস্থ হয়েছে তারা। কিন্তু এ বার কার্যত সেই অভিযোগ থামিয়ে দলকে লড়াইয়ে নামতে বললেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎপ্রকাশ নড্ডা।
দু’দিনের বঙ্গ সফরে মঙ্গলবার রাতেই কলকাতায় আসেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি। বুধবার জাতীয় গ্রন্থাগারের ভাষা ভবনে দলের কার্যনির্বাহী সভায় বক্তৃতা দিতে গিয়ে তৃণমূল সরকারকে আক্রমণ করার পাশাপাশি নিজের দলকেও বার্তা দেন।
এ দিন তিনি বলেন, “ভারতের সব আঞ্চলিক দলই শেষ পর্যন্ত পারিবারিক দলে পরিণত হয়েছে। আরজেডি থেকে সমাজবাদী পার্টি, অকালি দল থেকে ন্যাশনাল কনফারেন্স সবাইকে আমরা হারিয়েছি। তৃণমূল তো পিসি-ভাইপোর দল। ওদেরকেও আমরা শীঘ্রই হারাব।” তাঁর দাবি, “একটা সময় কংগ্রেসকে অজেয় মনে হত। আজ ভারত শুধু কংগ্রেস মুক্ত নয়, ভারতে কংগ্রেস লুপ্ত। তৃণমূলের অবস্থাও তাই হবে।”
সেই সঙ্গে দুর্নীতি প্রসঙ্গে তৃণমূলকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, “এক সময় লালু প্রসাদ যাদব বলতেন, আমিই বিধান, আমিই সংবিধান। আজ তাঁকে কোর্টে হাজিরা দিতে হচ্ছে। আজ থেকে কিছু বছর পর পিসি-ভাইপোরও একই হাল হবে।”
পাশাপাশি দলের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “পরিস্থিতি দ্রুত পাল্টাবে। কিন্তু আপনাদের ঘরে বসে কাঁদলে হবে না। বিরোধী দল তো মার খাবেই। আপনারা আন্দোলন করুন। লড়াই করুন। কেন্দ্রীয় প্রকল্প নিয়ে মানুষের কাছে যান, দেখবেন নিজেদের চেষ্টাতেই ঘুরে দাঁড়িয়েছেন।” এর আগে বঙ্গ সফরে এসে অমিত শাহও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদাহরণ দিয়ে দলকে লড়াই করে ঘুরে দাঁড়ানোর কথা বলেছিলেন।
শীর্ষ নেতৃত্ব যতই আন্দোলন করার কথা বলুন, বঙ্গ বিজেপি আছে সেই তিমিরেই। আন্দোলনের রূপরেখা তৈরির বদলে এ দিনও তারা একগুচ্ছ কর্মসূচির কথা ঘোষণা করল। শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের আত্মবলিদান দিবস, পশ্চিমবঙ্গ দিবসের মত রুটিন কর্মসূচির কথাই ঘোষণা করলেন বাংলার নেতারা। যদিও বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকরী বলেন, “ঘুষমুক্ত, মেধাযুক্ত নিয়োগ, দলতন্ত্র মুক্ত প্রশাসন ও কাটমানি মুক্ত পরিষেবা দেওয়ার দাবিতে আন্দোলন সংগঠিত করা হবে।” তবে তার কোনও রূপরেখা এ দিনের বৈঠকে তৈরি হয়নি।
এই নিয়ে বিজেপিকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি তৃণমূল। দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, “বিজেপি মানুষের দ্বারা প্রত্যাখ্যাত। দিল্লিকে ক্রমাগত ভুল বুঝিয়ে হম্বিতম্বি করছিল। দিল্লির কাছেও এখন বেলুন চুপসে গিয়েছে। তাই তারাও এখন দায় নিতে চাইছে না।”
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।