প্রতীকী ছবি।
রাজ্য জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষায় ওঁরা আছেন প্রথম পাঁচে। সর্বভারতীয় জয়েন্ট এন্ট্রান্স (অ্যাডভান্স) পরীক্ষাতেও তাঁরা র্যাঙ্ক করেছেন। সেই পাঁচ জনই জানিয়ে দিলেন, পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষাঙ্গনের পরিবেশ অশান্ত। পরিকাঠামোরও অভাব আছে। তাই তাঁরা এ রাজ্যের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উচ্চশিক্ষা নিতে চান না। নিজেদের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বলতর করতে ভিন্ রাজ্যের আইআইটি বা অন্য কোনও প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে চান।
এ বার রাজ্যের জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষায় দুর্গাপুরের হেমশিলা মডেল স্কুলের প্রথম সোহম মিস্ত্রী বলেন, ‘‘মুম্বই আইআইটি-তে কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পড়তে চাই। খড়্গপুর আইআইটি দেশের প্রথম পাঁচ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আছে। তবে মুম্বই আইআইটি বা দিল্লি আইআইটি-তে পড়তেই আমি বেশি আগ্রহী। পরিকাঠামো বা চাকরির সুবিধার দিক থেকে ভিন্ রাজ্যের আইআইটি-কেই বেশি পছন্দ করছি।’’ সর্বভারতীয় জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষায় তিনি ৪৮তম র্যাঙ্ক পেয়েছেন বলে জানান সোহম।
রাজ্যের জয়েন্ট এন্ট্রান্সে দ্বিতীয় স্থানাধিকারী সাউথ পয়েন্টের তমোজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় সর্বভারতীয় জয়েন্ট এন্ট্রান্সে ৮০ র্যাঙ্ক করেছেন। তমোজিৎও জানাচ্ছেন, তিনিও মুম্বই আইআইটি-তে কম্পিউটার সায়েন্স পড়তে চান। মুম্বই বা দিল্লি আইআইটি-তে কম্পিউটার সায়েন্স পড়তে আগ্রহী রাজ্য জয়েন্টে তৃতীয় স্থানাধিকারী, হেমশিলা মডেল স্কুলের ছাত্র কৌস্তুভ সেন এবং চতুর্থ স্থানাধিকারী, সাউথ পয়েন্টের ছাত্র অঙ্গীকার ঘোষালও। কৌস্তুভ এবং অঙ্গীকার সর্বভারতীয় জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষায় যথাক্রমে ৪২ এবং ১৬১ র্যাঙ্ক করেছেন। রাজ্যের জয়েন্টে পঞ্চম স্থানাধিকারী অর্ক দাশ ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স বেঙ্গালুরুতে গণিত নিয়ে গবেষণা করতে আগ্রহী। তিনি সর্বভারতীয় জয়েন্ট এন্ট্রান্সে ১২৪ র্যাঙ্ক করেছেন।
ভিন্ রাজ্যে পড়ার আগ্রহ কেন? এই মেধাবীরা জানাচ্ছেন, বাংলার শিক্ষাঙ্গনের পরিবেশ নিয়ে আশ্বস্ত নন তাঁরা। প্রথম পাঁচ জনের মধ্যে এক জন বললেন, ‘‘খবরের কাগজ খুললেই তো দেখি, শিক্ষাঙ্গনে রাজনৈতিক দলের মধ্যে অশান্তি চলছে। তার জেরে ক্লাস বন্ধ। চলছে ধর্না। ঘেরাও করা হচ্ছে শিক্ষকদের। শিক্ষাঙ্গনের অশান্ত পরিবেশের মধ্যে নিজেদের কেরিয়ারে মনোনিবেশ করা খুব কঠিন। তাই ভিন্ রাজ্যেই পড়তে চাই।’’ মেধা-তালিকায় থাকা অন্য এক ছাত্র বলেন, ‘‘কলকাতার থেকে মুম্বই বা দিল্লির যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেক ভাল। ফলে বড় বড় বিদেশি সংস্থার প্রতিনিধিরা ক্যাম্পাস ইন্টারভিউয়ের জন্য কলকাতায় যত না-আসেন, তার থেকে বেশি আসেন দিল্লি বা মুম্বইয়ে। ফলে চাকরির সুযোগ দিল্লি বা মুম্বই আইআইটি-তে অনেক বেশি।’’