Amit Shah

রাত বাড়তেই ভোলবদল জিতেন্দ্রর, শাহের মঞ্চে আজ শুভেন্দু-সঙ্গী কারা

শাহের উপস্থিতিতে শুভেন্দু-সহ তৃণমূলের চার বিধায়ক, এক সাংসদ এবং সিপিএম থেকে আসা দুই বিধায়ক আনুষ্ঠানিক ভাবে বিজেপির পতাকা হাতে নিতে পারেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০২০ ১১:৫২
Share:

অমিত শাহ। —ফাইল চিত্র

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মেদিনীপুরের সমাবেশে আজ, শনিবার তৃণমূলের ক’জন মঞ্চে থাকবেন— যাবতীয় প্রশ্ন এবং আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু এখন সেটাই। দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে শুক্রবার তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য সব হিসেবের জল্পনা নস্যাৎ করে জানিয়ে দিয়েছেন, কে এল, কে গেল, তাতে কিছু যায় আসে না। মানুষ তৃণমূলের পাশে।

Advertisement

সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে শাহের সমাবেশ-মঞ্চে শুভেন্দু অধিকারীর উপস্থিতি ও বিজেপিতে যোগদান প্রায় নিশ্চিত। সেই সঙ্গেই মঞ্চে থাকার সম্ভাবনা তৃণমূল বিধায়ক ব্যারাকপুরের শীলভদ্র দত্ত, উত্তর কাঁথির বনশ্রী মাইতি এবং বর্ধমান পূর্বের তৃণমূল সাংসদ সুনীল মণ্ডলের। এ ছাড়াও, হলদিয়ার সিপিএম বিধায়ক তাপসী মণ্ডল, গাজলের দীপালি বিশ্বাসের উপস্থিতির সম্ভাবনাও সামনে এসে গিয়েছে। যার অর্থ শাহের উপস্থিতিতে শুভেন্দু-সহ তৃণমূলের চার বিধায়ক, এক সাংসদ এবং সিপিএম থেকে আসা দুই বিধায়ক আনুষ্ঠানিক ভাবে বিজেপির পতাকা হাতে নিতে পারেন।

নজরে আছেন তমলুকের সিপিআই বিধায়ক অশোক দিন্দা, নাগরাকাটার শুক্র মুণ্ডা, ডায়মন্ড হারবারের দীপক হালদারেরাও। একটি সূত্রের দাবি, বিভিন্ন দলের অন্তত ১০ বিধায়ক শাহের মঞ্চে বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন। তবে এরই সঙ্গে কালনার বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডুর নাম সামনে এলেও তৃণমূলের একটি সূত্রের দাবি, এ দিন রাতে দলের এক বর্ষীয়ান সাংসদের সঙ্গে কথার ছলে তিনি জানান, তৃণমূলেই আছেন এবং থাকবেন।

Advertisement

আসানসোলের তৃণমূলত্যাগী বিধায়ক জিতেন্দ্র তিওয়ারিও মত বদল করেছেন। তাঁকে নিয়ে রাজ্য বিজেপিতে আপত্তি দেখা দিয়েছিল। তার পরে জিতেন্দ্র এ দিন দাবি করেন, তিনি বিজেপিতে যাচ্ছেন না। রাতে কলকাতায় তিনি দেখা করেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের সঙ্গে। আলোচনার পরে জিতেন্দ্রের বক্তব্য, ‘‘কিছু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। বিজেপিতে যাব, কখনও বলিনি। দিদির কাছে ক্ষমা চেয়ে নেব। তৃণমূলেই ছিলাম, আছি, থাকব।’’ অরূপও বলেন, ‘‘জিতেন্দ্র নিজেই ভুল বুঝতে পেরেছেন। দিদি আঘাত পেয়ে থাকলে তাঁর কাছে ক্ষমা চেয়ে নেবেনও বলেছেন।’’

বিষ্ণুপুরের প্রাক্তন বিধায়ক ও প্রাক্তন পুর চেয়ারম্যান শ্যামাপদ মুখোপাধ্যায়ের দলে আসার সম্ভাবনা ঘিরেও সেখানে বিক্ষোভ দেখিয়েছে স্থানীয় বিজেপি। যদিও শ্যামবাবু জানিয়েছেন, শাহের সভাতেই তিনি বিজেপিতে যোগ দেবেন। বিভিন্ন জেলায় পঞ্চায়েতের কয়েক জন কর্মাধ্যক্ষ এবং ব্লক ও বুথ স্তরের আরও কয়েক জন তৃণমূল নেতা শাহের সভায় গিয়ে দল বদলাতে পারেন।

এই অবস্থায় এ দিন সন্ধ্যায় তাঁর কালীঘাটের বাড়িতে দলের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে দীর্ঘ বৈঠক করেন মমতা। এটি অবশ্য নিয়মমাফিক সাপ্তাহিক বৈঠক। তবে শাহের আজকের সভায় তৃণমূলের বিধায়ক-নেতাদের সম্ভাব্য দলবদলের প্রেক্ষিতে বৈঠকটি তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে ওঠে। যাঁরা অন্য দলে পা বাড়িয়ে আছেন, তাঁদের জন্য তৃণমূলের যে কোনও সঙ্কট হবে না, এই বার্তা ‘আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে’ ছড়িয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। বিভিন্ন সভায় ইতিমধ্যেই তিনি ঘোষণা করেছেন, যাঁরা দল ছেড়ে যেতে চান, তাঁদের জন্য দরজা খোলা আছে। দলের বৈঠকেও তিনি বলেন, ‘কে কী করল, ও সবে মাথা না ঘামিয়ে সরকার ১০ বছরে যা করেছে, তা নিয়ে নির্বাচনের কাজে নেমে পড়ুন। মানুষ আমাদের পাশে আছে’।

বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এ দিনও বলেছেন, ‘‘যাঁরা মানুষের জন্য কাজ করতে চান, তাঁরা ওই দলে টিকতে পারছেন না। তাঁদের জন্য দরজা বড় করে রাখছি।’’ তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পাল্টা, ‘‘বটগাছের কয়েকটা পাতা পড়ে গেলে গাছের ক্ষতি হয় না! নতুন পাতা গজায়।’’

অন্য দিকে, মেদিনীপুরে শাহের সভার আয়োজন ব্যাপক। বছর দুয়েক আগে মেদিনীপুরের এই কলেজ-কলেজিয়েট স্কুল মাঠেই জনসভা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আজকের সভায় একটি মঞ্চে থাকবেন শাহ-সহ দলের কেন্দ্রীয় ও রাজ্য নেতৃত্ব। অন্য মঞ্চে জেলা নেতৃত্ব। শাহের মঞ্চই ১১৫২ বর্গফুটের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement