করিমপুরে জয়প্রকাশ মজুমদার।
করিমপুরের বিজেপি প্রার্থী জয়প্রকাশ মজুমদারকে নিরাপত্তা দিতে চেয়েছিল রাজ্য প্রশাসন। কিন্তু তিনি নিজেই তা নিতে অস্বীকার করেন। সোমবার উপনির্বাচনের দিন জয়প্রকাশকে মারধরের ঘটনায় রাজ্য পুলিশের ডিজি বীরেন্দ্রর দেওয়া এই রিপোর্টই রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর (সিইও) দিল্লির নির্বাচন সদনে পাঠাল ।
এ দিন জয়প্রকাশ নিগ্রহের ঘটনা নিয়ে দিল্লিতে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরাকে চিঠি পাঠান বিজেপি নেতা মুকুল রায়। তার প্রেক্ষিতে এ রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক আরিজ আফতাবকে ফোন করে দ্রুত রিপোর্ট তলব করেন উপ মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল জৈন। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, জানতে চাওয়া হয় তা-ও।
তার কিছু ক্ষণের মধ্যেই নদিয়ার জেলাশাসক এবং কৃষ্ণনগরের পুলিশ সুপারের কাছে রিপোর্ট চেয়ে পাঠায় মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর। আদতে কী ঘটেছিল তা নিয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতরে পাঠান রাজ্য পুলিশের ডিজি বীরেন্দ্র। সেই রিপোর্ট দিল্লিতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, জয়প্রকাশকে ব্যক্তিগত নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য লিখিত ভাবে জানানো হয়েছিল। কিন্তু, তিনি তা নিতে অস্বীকার করেন। এই ধরনের গন্ডগোল বাধতে পারে এই আশঙ্কা থেকে জয়প্রকাশকে নিরাপত্তা দিতে চাওয়া হয়েছিল বলে মনে করা হচ্ছে।
যদিও জয়প্রকাশ মজুমদার পাল্টা প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্য পুলিশের এই বক্তব্যের বিরুদ্ধে। তাঁর কথায়, ‘‘এক দিকে রাজ্য এবং জেলার পুলিশ-প্রশাসন বলছিলেন, করিমপুরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। নির্বাচন কমিশনও বলছিল যে, করিমপুরে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোট হবে। অন্য দিকে আমার কাছে এক জন কনস্টেবল পাঠিয়ে বলা হচ্ছে, ওই কনস্টেবল আমার নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করবেন।’’ জয়প্রকাশের প্রশ্ন, ‘‘একই সঙ্গে দু’রকমের কথা কী করে মানব? ডিজি যদি মনে করেন যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিকই রয়েছে, তা হলে জয়প্রকাশ মজুমদারকে নিরাপত্তা দেওয়ার দরকার কী?’’ তাঁর আরও প্রশ্ন, ‘‘আর যদি পুলিশের মনে হয়ে থাকে যে, সত্যিই আমার নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, তা হলে এক জন কনস্টেবল পাঠানোর মানেটা কী? আমার উপরে হামলা যখন হল, তখন তো পুলিশের সামনেই হল। একাধিক পুলিশকর্মী এবং সাব-ইনস্পেক্টররা হামলা আটকাতে পারলেন না। তা হলে ওই এক জন কনস্টেবল কী ভাবে আমাকে নিরাপত্তা দিতেন?’’
আরও পড়ুন: জয়প্রকাশকে বেধড়ক মার, লাথি মেরে ফেলা হল ঝোপে, অভিযুক্ত তৃণমূলের দাবি গোটাটাই নাটক
আরও পড়ুন: মহা-নাটকে ফের ‘নৈশ অভিযান’! গুরুগ্রামের হোটেল থেকে ৪ বিধায়ককে ‘উদ্ধার’ করল এনসিপি
এ দিনের ঘটনায় দ্রুত পদক্ষেপ করা হয় বলেও রিপোর্টে জানিয়েছে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর। ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, বিষয়টি জানতে পেরেই তড়িঘড়ি কৃষ্ণনগরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, তেহট্টের এসডিপিও, এসডিও-কে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই এক জনকে আটক করা হয়েছে। তল্লাশি চলছে আরও বেশ কয়েক জনের খোঁজে।