জহর সরকারকে (বাঁ দিকে) একহাত নিলেন তাপস রায় (ডান দিকে)।
পার্থ চট্টোপাধ্যায়-অনুব্রত মণ্ডলকে নিয়ে দলীয় সাংসদ জহর সরকারের মন্তব্যে বিড়ম্বনায় তৃণমূল। কুণাল ঘোষ, বাবুল সুপ্রিয়ের পর এ বার বিষয়টি নিয়ে মুখ খুললেন তাপস রায়। রাজ্যসভা নির্বাচনে জহরের নির্বাচনী এজেন্ট তাপস বুধবার বলেন, ‘‘ওঁর নির্বাচনী এজেন্ট হিসাবে আমি লজ্জিত। এ সব বলার আগে অন্তত এক বার নেত্রীর সঙ্গে কথা বলা উচিত ছিল জহরবাবুর।’’
এর আগে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ জহর প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ প্রসঙ্গে মন্তব্য করেন। তিনি বলেছিলেন, ‘‘দলের একাংশ পচে গিয়েছে। পচা অংশ ফেলে বর্জন করতে হবে।’’ জানিয়েছিলেন, কোনও দিন সম্মানহানি হলে দল ছেড়ে দেবেন। পরিবার, বন্ধুরাও তাঁকে পরামর্শ দিয়েছেন। এই প্রসঙ্গে তৃণমূল বিধায়ক তাপস বলেন, ‘‘দায়িত্বজ্ঞানহীন অরাজনৈতিক মন্তব্য। আমাদের দলের রাজ্যসভায় পাঠানোর ক্ষমতা ছিল বলেই তিনি গিয়েছিলেন। দল আমায় তাঁর নির্বাচনী এজেন্ট করেছিলেন। এখন তিনি এই মন্তব্য করছেন, ভাবতে খুবই অস্বস্তি হচ্ছে, লজ্জা হচ্ছে বললেও অত্যুক্তি হবে না।’’
তার পরেই তাপস মন্তব্য করেন, জহর যদি দল ছেড়েও দেন, তাতে তৃণমূলের কোনও ক্ষতি হবে না। তাঁর কথায়, ‘‘জহর থাকলেন কি থাকলেন না, কিছুই এসে যায় না। আমাদের ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের লড়াই বা ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটের বা তার আগে যে লড়াই ছিল, কোনওটাই তাঁর উপর নির্ভর করেনি। আগামী দিনেও করবে না।’’
প্রাক্তন আমলা জহরের সম্মানহানি নিয়ে মন্তব্যকে এক হাত নিয়েছেন তাপস। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এ সব বলার আগে কি নেত্রীর সঙ্গে কথা বলেছিলেন? সম্মানের জন্যই তো রাজ্যসভার সদস্য হয়েছিলেন। তার পর সম্মান বেড়েছিল। যে দিন রাজ্যসভার সদস্য হয়েছিলেন, তার আগে কি বাড়ির লোক বা বন্ধুদের সম্মতি নিয়েছিলেন? আগে বলুন, নিয়েছিলেন কি নেননি, তার পর প্রতিক্রিয়া দেব।’’
জহরের মন্তব্য প্রসঙ্গে এর আগে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেছিলেন, ‘‘সাহস থাকলে উনি পদত্যাগ করুন।’’ একই সুরে তাপস রায় বলেন, ‘‘উনি যদি মনে করেন ছেড়ে দেবেন, ছেড়ে দিন। নেত্রীর সঙ্গে কথা বলা উচিত ছিল। এ ধরনের কথার আগে ভাবনাচিন্তা করা উচিত ছিল। রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বললে বুঝতাম। জহর সরকার পণ্ডিত মানুষ। কিন্তু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব নন।’’ সেই সঙ্গেই তিনি বলেন, ‘‘জহরবাবুর এ হেন মন্তব্যে দলের বিন্দুমাত্র ক্ষতি হয়েছে বলে আমি বিশ্বাস করি না।’’